Advertisement
E-Paper

ম্যাকাও-বিভ্রাট, মামলা গেল কোর্টে

সূত্রের খবর, পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট অভিনন্দন মিত্র বছর দুই আগে বনগাঁ থেকে দু’টি ম্যাকাও কিনে বাড়ি ফিরছিলেন। 

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৮ ০২:১২
এমনই দুই ম্যাকাও নিয়ে চলছে টানাপড়েন। ফাইল চিত্র

এমনই দুই ম্যাকাও নিয়ে চলছে টানাপড়েন। ফাইল চিত্র

হারানো ম্যাকাও ফিরিয়ে দিন!

এমনই আর্জি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। অভিযোগ, ম্যাকাও বাজেয়াপ্ত করার সময়ে নিয়ম মানেনি শুল্ক দফতর। বাজেয়াপ্ত হওয়া সেই ম্যাকাওয়ের দায়িত্ব নেওয়ার সময়ে নিয়ম মানেননি চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষও। ফলে কোন ম্যাকাও তাঁর, তা বোঝাই দায়। এই পরিস্থিতিতে ভবানীপুরের ওই বাসিন্দাকে তাঁর পছন্দ মতো একটি ম্যাকাও চিড়িয়াখানা থেকে বেছে নিতে সোমবার নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক।

সূত্রের খবর, পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট অভিনন্দন মিত্র বছর দুই আগে বনগাঁ থেকে দু’টি ম্যাকাও কিনে বাড়ি ফিরছিলেন।

বারাসত ও মধ্যমগ্রামের মাঝে শুল্ক দফতর তাঁর গাড়ি তল্লাশি করে ওই দু’টি ম্যাকাও বাজেয়াপ্ত করে। দফতরে পাখি দু’টি রাখার পরিকাঠামো না থাকায় আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের হাতে সে দু’টি তুলে দেওয়া হয়। গত বছর ম্যাকাও দু’টি ফেরত চেয়ে শুল্ক দফতরে আবেদন জানান ওই ব্যক্তি। পরে তাঁর কাছ থেকে পাওয়া নথি পরীক্ষা করে শুল্ক দফতর জানিয়ে দেয়, তিনি বৈধ পদ্ধতিতে ম্যাকাও দু’টি কিনেছিলেন। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে শুল্ক দফতর জানায়, ম্যাকাও দু’টি তাঁকে ফেরত দিতে হবে।

চিড়িয়াখানা সূত্রের খবর, মাস ছয় আগে পাখি দু’টি ফেরত চান অভিনন্দনবাবু। কিন্তু দেখা যায়, দু’টির মধ্যে একটি তত দিনে মারা গিয়েছে। এও জানা যায়, শুল্ক দফতর থেকে নিয়ে আসার দু’দিনের মধ্যেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিড়িয়াখানার হাসপাতালে একটি ম্যাকাও মারা গিয়েছে। মৃত ম্যাকাওয়ের ময়না-তদন্তও করিয়ে রেখেছিলেন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। তার নথিও দেখানো হয় ওই ব্যক্তিকে। কর্তৃপক্ষ একটি ম্যাকাও ফেরত দিতে গেলে তিনি জানান, চিড়িয়াখানা তাঁকে যে ম্যাকাও দিতে চাইছে, তার সঙ্গে তাঁর কেনা ম্যাকাওয়ের রং মিলছে না। নিজের কেনা ম্যাকাও ফেরত চেয়ে বিচারপতি বসাকের আদালতে কয়েক মাস আগে মামলা করেন তিনি। বিচারপতি বসাক শুল্ক দফতরকে বাজেয়াপ্ত হওয়া ম্যাকাও ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন। অভিযোগ, পদ্ধতি মেনে বাজেয়াপ্তের তালিকা তৈরি না হওয়ায় ঠিক ম্যাকাওটি ফেরত দেওয়া যায়নি। চি়ড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষও নিয়ম মেনে বাজেয়াপ্ত করা জিনিস গ্রহণ না করায় বিচারপতি বসাক কিছু দিন আগে নির্দেশ দেন, অভিনন্দনবাবু চিড়িয়াখানায় গিয়ে নিজের পছন্দমতো ম্যাকাও নিয়ে আসতে পারেন।চিড়িয়াখানা সূত্রের খবর, সেই মতো একটি ম্যাকাও নিয়েও যান তিনি। এ বার দ্বিতীয় ম্যাকাও ফেরত পেতে চেয়ে হাইকোর্টে

আবেদন জানান ওই ব্যক্তি। আগেরটির মতো এ বারও তিনি নিজের পছন্দের ম্যাকাও চিড়িয়াখানা থেকে নিতে পারবেন বলে এ দিন নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি বসাক। শুল্ক

দফতর ও চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে চার সপ্তাহের মধ্যে ম্যাকাও ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।

পদ্ধতি মেনে কেন বাজেয়াপ্ত করা হয়নি ম্যাকাও? শুল্ক দফতরের একটি সূত্র জানায়, উচিত ছিল বাজেয়াপ্ত হওয়ার পরে পৃথক খাঁচায় উপযুক্ত চিহ্ন দিয়ে পাখি দু’টি রাখা। তা করা হলে বিপত্তি হত না। চিড়িয়াখানার একটি সূত্র জানায়, ম্যাকাও দু’টি কেনার আগে থেকেই খারাপ অবস্থায় ছিল। উচিত ছিল, শুল্ক দফতরের কাছ থেকে নেওয়ার সময়ে পাখি দু’টির শরীরের কোনও জায়গায় চিহ্ন দিয়ে রাখা। তা করা হয়নি। চিড়িয়াখানার এক অফিসার জানান, এর আগে কয়েকটি শিম্পাঞ্জি বাজেয়াপ্ত করেছিল শুল্ক দফতর। রাখার পরিকাঠামো না থাকায় চিড়িয়াখানায় পাঠানো হয়েছিল সেগুলি। এক ব্যক্তি নিম্ন আদালতের এক নির্দেশ এনে শিম্পাঞ্জিগুলি ফেরত চান। কিন্তু তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়, সেগুলি তাঁর হাতে তুলে দিতে হবে এমন কোনও নির্দেশ চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়নি। এ বার ম্যাকাওয়ের ক্ষেত্রে কী হয়, সেটাই দেখার।

Bird Macaque Bird
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy