Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Protest

Protester stabbed: স্কুলের সামনে টানা হর্ন, প্রতিবাদ করায় যুবককে ছুরির কোপ

বুধবার সকালে পার্ক স্ট্রিট এবং রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডের সংযোগস্থলের ওই ঘটনায় আক্রান্ত যুবকের মুখে ১১টি সেলাই পড়েছে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২২ ০৬:৫৩
Share: Save:

স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে লাগাতার হর্ন বাজিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদ করায় এক যুবককে ছুরি দিয়ে কোপানোর অভিযোগ উঠল কলকাতায়। বুধবার সকালে পার্ক স্ট্রিট এবং রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডের সংযোগস্থলের ওই ঘটনায় আক্রান্ত যুবকের মুখে ১১টি সেলাই পড়েছে। পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করলেও স্কুলের সামনে শব্দ-বিধি মেনে চলার বিষয়ে অনেকে যে সে ভাবে সচেতনই নন, এই ঘটনা সেটাই আরও এক বার প্রমাণ করল বলে মনে করা হচ্ছে। পরিবেশবিদেরা আবার বলছেন, ‘‘পুলিশি ধারা যুক্ত করার পাশাপাশি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে শব্দ-বিধি লঙ্ঘন করার ধারাও যুক্ত হওয়া উচিত।’’

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত এ দিন সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ। ওই সময়ে পার্ক স্ট্রিট এবং রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডের সংযোগস্থলে একটি স্কুলে মাকে ছাড়তে এসেছিলেন শাহাজ আবেদন নামে বছর ২৩-এর এক যুবক। শাহাজের মা ওই স্কুলেই শিক্ষকতা করেন। ওই যুবক জানিয়েছেন, মাকে নামানোর জন্য তিনি নিজেদের গাড়ি দাঁড় করাতেই পিছন থেকে একনাগাড়ে হর্ন দিতে শুরু করেন জিশান ওরফে নাভেদ আলম নামে এক স্কুটারচালক। অল্পক্ষণের মধ্যে শাহাজ গাড়ি নিয়ে এগিয়ে গেলেও হর্ন বন্ধ হয়নি। সামনে যানজটে গাড়ি আটকালে সেখানেই পিছনে এসে দাঁড়িয়ে বছর বাইশের ওই স্কুটারচালক ফের হর্ন দিতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। এর পরেই প্রতিবাদ করেন শাহাজ। তখন স্কুটার রেখে গাড়ির পথ আটকায় নাভেদ। শাহাজ গাড়ি থেকে নেমে এলে শুরু হয় দু’পক্ষের বচসা। তার মধ্যেই নাভেদ ছুরি বার করে শাহাজের মুখে চালিয়ে দেয় বলে অভিযোগ।

প্রত্যক্ষদর্শীরাই এর পরে নাভেদকে ধরে ফেলেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতার করে। রক্তাক্ত শাহাজকে নিয়ে যাওয়া হয় এলগিন রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে তাঁর থুতনিতে ১১টি সেলাই পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। দুপুরের পরে ওই যুবককে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ দিন বেনিয়াপুকুর রোডে শাহাজের বাড়িতে গেলে তাঁর মা বলেন, ‘‘ছেলে এখন বিশ্রাম করছে। ওর থুতনিতে ১১টা সেলাই পড়েছে। সেই কারণে কথা বলায় সমস্যা হচ্ছে।’’

কলিন স্ট্রিটে নাভেদের বাড়ির ঠিকানায় গিয়ে জানা গেল, এখন তিনি আর সেখানে থাকেন না। আদতে টাটানগরের বাসিন্দা ওই যুবক দীর্ঘদিন আত্মীয়দের কাছে থাকতেন। কিন্তু প্রায়ই নেশা করে ঝামেলা করার কারণে তাঁকে সেখান থেকে বার করে দেন আত্মীয়েরাই। এর পরে নাভেদ একটি বাড়িতে কাজ নিয়ে সেখানে গিয়ে উঠেছেন। পুলিশের অনুমান, ওই বাড়ির কাউকে স্কুলে ছাড়তে গিয়েই তিনি ওই কাণ্ড ঘটান। এ দিনের ঘটনাস্থল পার্ক স্ট্রিট থানার অন্তর্গত। সেখানে নাভেদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৬ ধারায় (অস্ত্র দিয়ে আঘাত) মামলা রুজু করা হয়েছে। যদিও অনেকেরই প্রশ্ন, এর সঙ্গেই শব্দ-বিধি লঙ্ঘনের ধারায় কেন মামলা করা হবে না?

পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘স্কুল সাইলেন্স জ়োনের মধ্যে পড়ে। ২০০০ সালে আইন করে সাইলেন্স জ়োনে শব্দ-বিধি ভাঙার শাস্তি ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। যাতে বলা হয়েছে, স্কুল চত্বরে শব্দ-বিধি লঙ্ঘন করলে পাঁচশো টাকা পর্যন্ত জরিমানা এবং ছ’মাসের জেল হতে পারে। স্কুল চত্বরে শব্দ-বিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে কি না, তা দেখার দায়িত্ব রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের। তবু এমন ঘটে কী করে? এর পরেও কড়া শাস্তি না হলে কখনওই এমন লোকেদের হুঁশ ফিরবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Protest Attacked
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE