আগে পুনর্বাসন, তবে হকার উচ্ছেদ। সরকারের এমন মনোভাব এখন বুমেরাং হয়ে ফিরছে।
রবিবার বিধাননগরের ২ নম্বর সেক্টরের ঘটনাতেই ফের তার প্রমাণ মিলল। পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর সল্টলেকের ইস্টার্ন ড্রেনেজ চ্যানেলের পাড়ে সৌন্দর্যায়নের কাজ চলছিল। অভিযোগ, কিছু অস্থায়ী দোকানদার সেই কাজ আটকে দেন। উন্নয়নের কাজ অক্ষুণ্ণ রাখতে পথে নেমে প্রতিবাদ জানান বাসিন্দারা। সেই চাপে পদক্ষেপ করে প্রশাসন। যদিও এই ঘটনা নিয়ে শাসক দলের দ্বন্দ্ব ফের প্রকাশ্যে এল।
সল্টলেকের জে কে সাহা সেতু থেকে স্লুইস গেট পর্যন্ত এই সৌন্দর্যায়নের কাজ হবে। দু’মাস আগে শুরু হওয়া কাজ সিএল ব্লকে গিয়ে আটকে যায়। দোকানদারদের একাংশ জানিয়ে দেয়, ইউনিয়নের নেতারা না বললে সরবেন না। উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। ঘটনাস্থলে হাজির হন মেয়র ও চেয়ারপার্সন। যায় পুলিশও। এক দোকানদারকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সূত্রের খবর, সরকারি কাজে ব্যাঘাত না করার শর্তে তিনি ছাড়া পেয়েছেন।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, সল্টলেকে ঝুপড়ি বেড়েই চলেছে। বাড়ছে অস্থায়ী দোকানও। কিন্তু পদক্ষেপ করছে না প্রশাসন। স্থানীয় বাসিন্দা প্রাক্তন বিচারপতি সৌমিত্র সেন জানান, দীর্ঘ দিন ধরে খালপাড় জুড়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। ফিরহাদ হাকিমের কাছে বাসিন্দারা সৌন্দর্যায়নের দাবি জানান। সেই কাজই আটকানো হয়েছে।
স্থানীয় ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা পুরসভার চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী জানান, ওই এলাকায় দোকানদারদের সরে যেতে বলা হয়েছিল। কয়েক জন মানেননি। মূলত যিনি আটকেছেন, তাঁর চাকরি, সন্তানদের পড়াশোনার বন্দোবস্ত পর্যন্ত করা হয়। তবু তিনি সরতে নারাজ।
এ নিয়ে পুর প্রশাসনের সঙ্গে শাসক দলের একাংশের দ্বন্দ্বও প্রকাশ্যে আসে। তৃণমূলের শ্রমিক নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের দল হকারদের পুনর্বাসন না দিয়ে উচ্ছেদের বিরুদ্ধে। যথাস্থানে প্রতিবাদ জানাব।’’ বাসিন্দাদের অভিযোগ, শাসকদলের প্রশ্রয় যে আছে, ওই শ্রমিক নেতার বক্তব্যেই স্পষ্ট।
বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়িয়ে মেয়র সব্যসাচী দত্ত বলেন, ‘‘সল্টলেকে সবই সরকারের জমি। সরকার নির্দেশ দিলে তবেই পুরসভা পদক্ষেপ করতে পারে।’’ যদিও দিলীপবাবুর মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘কে দিলীপ? সল্টলেকে দলে ওই নামে কেউ আছে কি না, জানা নেই।’’