Advertisement
E-Paper

পুজোর ভিড় নিরাপত্তা-সহ সামলাতে পারবে তো মেট্রো?

এমনিতে গড়ে প্রতি দিন সাড়ে ছ’লক্ষ নিত্যযাত্রী ব্যবহার করেন কলকাতা মেট্রো। এর সঙ্গে যুক্ত হবে পুজোর ভিড়। গত বছর পুজোর চার দিনে মেট্রোর যাত্রী হয়েছিল প্রায় ২০ লক্ষ। এ বছর মেট্রো পুজোর চার দিন ট্রেনর সংখ্যাও আরও বাড়িয়েছেন। ফলে যাত্রীর চাপ বাড়বে বলেই নিজেরাই মনে করছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় ও শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৫ ১৮:২৮

এমনিতে গড়ে প্রতি দিন সাড়ে ছ’লক্ষ নিত্যযাত্রী ব্যবহার করেন কলকাতা মেট্রো। এর সঙ্গে যুক্ত হবে পুজোর ভিড়। গত বছর পুজোর চার দিনে মেট্রোর যাত্রী হয়েছিল প্রায় ২০ লক্ষ। এ বছর মেট্রো পুজোর চার দিন ট্রেনর সংখ্যাও আরও বাড়িয়েছেন। ফলে যাত্রীর চাপ বাড়বে বলেই নিজেরাই মনে করছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।

এমনিতেই মেট্রোতে যাত্রী নিরাপত্তার হাল নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। তার পরে পুজোর ভিড় ফলে এই বিপুল যাত্রীদের কী ভাবে দেওয়া হবে সুরক্ষা?

মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) এ কে কপূর বুধবার অবশ্য বলেছেন, ‘‘যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে এবার পুজোর জন্য অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে মেট্রোর স্টেশনগুলিতে। কলকাতা পুলিশ, আরপিএফ-সহ মেট্রোর সিনিয়ার অফিসারেরাও স্টেশনগুলিতে হাজির থাকবেন।’’ পাশাপাশি কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর), রাজীব মিশ্র বলেন, ‘‘যাত্রী স্বার্থে আমাদের তরফে সব রকম নিরাপত্তারই ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’

কিন্তু, এখন কেমন মেট্রোর নিরাপত্তার হাল?

মেট্রো সূত্রে খবর, কয়েক বছর আগে যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে বসানো ২৪টি স্ক্যানার মেশিনের ১৭টিই খারাপ হয়ে গিয়েছে অনেক দিন। এমনকী ঢোকার মুখে মেটাল ডিক্টেটর থাকলেও যাত্রীরা তার ভিতরে ঢুকলে যন্ত্র কি নির্দেশ দিচ্ছে, তার দিকেও কোনও খেয়াল রাখেন না নিরাপত্তীরক্ষীরা। বেশির ভাগ স্টেশনেই সিসি টিভিগুলি ঠিকমতো কাজ করছে না। ফলে প্রশ্ন উঠছে, যাত্রী সুরক্ষার অন্যতম হাতিয়ারই যদি ঠিক না থাকে, তবে কী ভাবে মেট্রো সুরক্ষিত থাকবে!

মেট্রোর ২৪টি স্টেশনের মধ্যে একটি বাদে সব বাকি সবগুলি স্টেশনের নিরাপত্তার দায়িত্ব রেল পুলিশের সঙ্গে যৌথ ভাবে রয়েছে কলকাতা পুলিশও। শুধু নোয়াপাড়া স্টেশনের দায়িত্বে রয়েছে বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট। মেট্রোর নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত পুলিশ কর্মীরা জানিয়েছেন, প্রতিটি স্টেশনে গড়ে ৬-৭ জন করে পুলিশকর্মী থাকেন। এ ছাড়া রয়েছে রেলের নিজস্ব বাহিনী আরপিএফ। সঙ্গে থাকে প্রায় সিসিটিভির হাজার চোখ। তাঁদের দাবি, সেগুলিতে নজর রাখা হয় নিয়মিত। পুজোর সময় ওই ব্যবস্থা আরও আঁটোসাঁটো করা হবে। তবে স্ক্যানার মেশিনগুলি থাকা যে জরুরি ছিল সেটা তাঁরা জানিয়েছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষকে।

কিন্তু যাত্রীদের বক্তব্য, যাত্রীদের মালপত্র চেকিং তো দূরঅস্ত, গেটে যে সব পুলিশ কর্মীরা বসে থাকেন, তাঁদের অফিস টাইমেও গল্পগুজবে মত্ত থাকতে দেখা যায়। কোনও কোনও যাত্রী স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ব্যাগ দেখাতে গেলে দু’এক জনের ব্যাগ পরীক্ষা হয়। বাকিরা চলে যান পরীক্ষা ছাড়াই। কার্যত কাজেই লাগানো হয় না, হাতে থাকা মেটাল ডিটেক্টরগুলিকেও।

তাই যাত্রীদের ওই অভিযোগ মানতে চায়নি কলকাতা পুলিশ কর্তৃপক্ষ। এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘স্ক্যানার খারাপ থাকলেও সন্দেহ হলেই পুলিশকর্মী যাত্রীদের ব্যাগ বা লাগেজ তল্লাশি করেন। তবে অফিসে টাইমে যাত্রী চাপ এতটাই বেশি থাকে যে সব সময় তা ১০০ শতাংশ করা হয় না।’’

নিরাপত্তা জোরালো করতে কেন দরকার স্ক্যানারের?

যাত্রীদের ব্যাগ চেকিং করার জন্য কলকাতা পুলিশের কথায়, বিমানবন্দর, রেল স্টেশন ও মেট্রো স্টেশনের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এক্স-রে ব্যাগেজ স্ক্যানারের মতো সরঞ্জাম এক কথা অপরিহার্য। তাদের দাবি, কলকাতার মতো শহরে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তাই মেট্রোর যাত্রী নিরাপত্তার স্বার্থে ওই ব্যাগেজ স্ক্যানারগুলি গুরুত্বপূর্ণ। স্ক্যানারে ঢোকানো ব্যাগ বা স্যুটকেসের ভিতরে থাকা যাবতীয় জিনিসপত্রের ছবি এক্স রে-র মাধ্যমে ফুটে ওঠে ওই মেশিনে থাকা কম্পিউটারের মনিটরে। তখনই যন্ত্রটির দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তারক্ষী মনিটর দেখে সন্দেহজনক কিছু মনে হলে ব্যাগ খুলে তল্লাশি চালাতে পারেন।

এত জরুরি হলেও কেন সারানো হচ্ছে না কেন স্ক্যানার যন্ত্রগুলি?

মেট্রোর জিএম এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘‘যে সংস্থার হাতে ওই যন্ত্রগুলি মেরামতির দায়িত্ব ছিল, সেই সংস্থা কাজে গাফিলতি করায় মাঝপথেই তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে নতুন সংস্থাকে বরাত না দেওয়া পর্যন্ত ওই যন্ত্র চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।’’ তার বদলে অবশ্যে সিসিটিভি ও মেটাল ডিটেক্টর গেট ও হাতে রাখা মেটাল ডিটেক্টর বাড়ানো হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

পুলিশ যাই বলুক না কেন, মেট্রোর নিরাপত্তা যে ঢিলে ঢালা তার প্রমাণও মিলেছে সম্প্রতি। মাস তিনেক আগে মাস্টারদা সূর্য সেন স্টেশনের পুলিশকর্মীরা এক ব্যক্তিকে সন্দেহ হওয়ায় তার ব্যাগে তল্লাশি চালান। ওই ব্যাগ থেকে উদ্ধার করা হয় তিনটি দেশি রিভলভার।

amitabha bandyopadhyay shivaji de sarkar kolkata metro metro rail puja crowd kolkata metro capability metro rail puja days
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy