Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Tallah Bridge

দক্ষিণে স্বস্তি ফিরল, টালা সেতুর প্রাণ ফিরবে কবে

১৯৬২ সালে রাজ্য পূর্ত দফতর নির্মিত টালা সেতুর ভগ্নস্বাস্থ্য বিচার করে চলতি বছরের শুরুতেই সেটি বন্ধ করে দিয়েছিল প্রশাসন।

নির্মাণ: টালা সেতু তৈরির কাজ চলছে। ছবি: রণজিৎ নন্দী

নির্মাণ: টালা সেতু তৈরির কাজ চলছে। ছবি: রণজিৎ নন্দী

কৌশিক ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২০ ০২:৫৩
Share: Save:

মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয়ের দু’বছর তিন মাসের মাথায় উদ্বোধন হল নতুন সেতুর। ফলে মিটতে চলেছে দক্ষিণ ও দক্ষিণ শহরতলির যোগাযোগ সমস্যা। এ বার প্রশ্ন, উত্তর কলকাতার সঙ্গে উত্তর শহরতলির যোগাযোগকারী টালা সেতু খুলবে কবে?

১৯৬২ সালে রাজ্য পূর্ত দফতর নির্মিত টালা সেতুর ভগ্নস্বাস্থ্য বিচার করে চলতি বছরের শুরুতেই সেটি বন্ধ করে দিয়েছিল প্রশাসন। মাঝেরহাট সেতুর মতো বিপর্যয় যাতে শহরে দ্বিতীয় বার না ঘটে, তাই এমন সিদ্ধান্ত ছিল। জানানো হয়েছিল, ওই সেতু ভেঙে নতুন করে তৈরি করা হবে।

এখন সেই কাজ কোন পর্যায়ে? দরপত্র ডেকে একটি নির্মাণ সংস্থাকে কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে বলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন। এই মুহূর্তে সেতুর স্তম্ভ তৈরির জন্য খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। কিছু অংশের কাজের জন্য রেলের অনুমোদন লাগবে, সেই আবেদন করা হয়েছে। পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, প্রাথমিক ভাবে টালা সেতু উদ্বোধনের লক্ষ্যমাত্রা স্থির হয়েছে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি। তবে এই সময়সীমা পরিবর্তন হতে পারে। কলকাতা পুরসভার এক নম্বর বরোর অধীন টালা সেতু।

সংশ্লিষ্ট বরোর কোঅর্ডিনেটর তরুণ সাহা বলেন, “২০২২-র ফেব্রুয়ারিতে টালা সেতু খুলে দেওয়ার লক্ষ্য থাকলেও তা মাস ছয়েক এগিয়ে আনার জন্য কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আপাতত এলাকায় যানজটের সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে।”

কেন সময়সীমা এগিয়ে আনার কথা উঠছে? টালা সেতু ভাঙার পরে গাড়ি চলাচলের বিকল্প রাস্তা হিসেবে যে দু’টি উড়ালপুল এবং সেতু ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলি কত দিন ধরে কতটা ভার নিতে পারবে এ নিয়ে আশঙ্কা থেকে এই ভাবনা শুরু হয়েছে।

পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, বিকল্প পথ হিসেবে চিৎপুর লকগেট উড়ালপুল, আর জি কর সেতু (গজনবী সেতু) এবং বেলগাছিয়া সেতুকে ব্যবহার করা হচ্ছে। ভার সামলানোর জন্য সেগুলিকে আপাতত পোক্ত করা হয়েছে। লকগেট উড়ালপুল এবং আর জি কর সেতু কেএমডিএ রক্ষণাবেক্ষণ করলেও বেলগাছিয়া সেতুর দায়িত্বে রয়েছে পূর্ত দফতর নিজেই। আগামী ১৪ মাসে টালা সেতু তৈরি হলেও অতিরিক্ত ভার বইতে বইতে এদের স্বাস্থ্য কি ঠিক থাকবে?

কেএমডিএ-র সেতু বিশেষজ্ঞ কমিটির এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, টালা সেতু ভাঙার আগেই কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ আর জি কর সেতু এবং লকগেট উড়ালপুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছিলেন। উড়ালপুলটির মেরামতি হয়েছিল। আর জি কর সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা হলেও রিপোর্টে সেটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা নেই। কিছুটা মেরামতি হয়েছে। বাকিটা অর্থ বরাদ্দ হলেই হবে।

অন্য দিকে, বেলগাছিয়া সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরে সেটির ভার লাঘব করতে পিচ রাস্তার পুরু অংশ কিছুটা তুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানাচ্ছে পূর্ত দফতর।

কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, টালা সেতু বন্ধের পরে প্রথম দিকে যানজট হচ্ছিল, এই মুহূর্তে সেই সমস্যা নেই।

তবে দীর্ঘদিন ধরে বিকল্প সেতু এবং উড়ালপুলগুলি কতটা ভার সহ্য করতে পারবে, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে ইঞ্জিনিয়ার এবং আধিকারিকদের মধ্যেই। ফলে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই টালা সেতু খুলে দেওয়াটা আপাতত লক্ষ্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tallah Bridge Majherhat Bridge
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE