Advertisement
E-Paper

প্রৌঢ়ের মৃত্যুতে করোনা-রিপোর্ট নিয়ে উঠছে প্রশ্ন

সবরের ছেলে শেখ জাহির আব্বাস মঙ্গলবার জানান, ২২ অগস্ট চণ্ডীতলার এক নার্সিংহোমে পরিচিত চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে তাঁর বাবাকে ভর্তি করানো হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:৫১
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিউমোনিয়ার উপসর্গ নিয়ে ডানকুনির চণ্ডীতলার বাসিন্দা প্রৌঢ়কে দু’টি নার্সিংহোম ঘুরে সপ্তাহখানেক আগে পার্ক সার্কাসের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছিল। সোমবার সেখানে মারা যান কোভিড আক্রান্ত, বছর পঞ্চান্নের ওই ব্যক্তি। কিন্তু সেই ঘটনাক্রমে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে মৃত সবর আলির ছেলের অভিযোগ। যার পরিপ্রেক্ষিতে কোভিড-রিপোর্টের বৈধতা এবং মৃত্যুর সময়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কড়েয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

সবরের ছেলে শেখ জাহির আব্বাস মঙ্গলবার জানান, ২২ অগস্ট চণ্ডীতলার এক নার্সিংহোমে পরিচিত চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে তাঁর বাবাকে ভর্তি করানো হয়। পরের দিন বালির একটি নার্সিংহোমে প্রৌঢ়কে নিয়ে যান পরিজনেরা। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ওই চিকিৎসকেরই পরামর্শে পার্ক সার্কাসের নার্সিংহোমে সবরকে নিয়ে যান ছেলে।

গত মঙ্গলবার, ২৫ অগস্ট পার্ক সার্কাসের নার্সিংহোমে ভর্তির পরে প্রৌঢ়ের করোনা পরীক্ষা হয়। সেই রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। জাহিরের দাবি, বাবার রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে জানার পরে তিনি তাঁকে অন্যত্র নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ রাজি হননি। জাহির অভিযোগ করেছেন, ভর্তির পর থেকে তাঁদের রোগীকে দেখতে দেওয়া হয়নি। এ-ও বলা হয়, রোগীকে দেখতে হলে বকেয়া ৪৭ হাজার টাকা আগে মেটাতে হবে। শেষে সোমবার বিকেলে জোর করে সবরের কাছে চলে যান পরিজনেরা। জাহিরের কথায়, ‘‘কাছে গিয়ে দেখি বাবা আর নেই। অন্তত দিন তিনেক আগে উনি মারা গিয়েছেন। কোভিডের রিপোর্টও ঠিক বলে বিশ্বাস করি না।’’

এই বক্তব্যের সূত্র ধরেই কড়েয়া থানায় অভিযোগ দায়ের হলে এ দিন মৃতের দেহ ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয় এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তাঁর বাবার আদৌ করোনা ধরা পড়েছিল কি না এবং কবে, কখন তাঁর মৃত্যু হয়েছে— সেই সব জানতেই ময়না-তদন্ত করানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন জাহির।

তিনি জানান, পার্ক সার্কাসের নার্সিংহোমে সোমবার পর্যন্ত ২ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা বিল হয়েছে। বালির নার্সিংহোমে বিল হয়েছে ৩৭ হাজার টাকা। কিন্তু ন’দিন ধরে বিভিন্ন নার্সিংহোমে না-ঘুরে রোগীকে কোনও সরকারি হাসপাতালে কেন নিয়ে গেলেন না? উত্তরে জাহির দাবি করেছেন, পরিচিতি চিকিৎসকের পরামর্শ মতো তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

ওই চিকিৎসক জানান, চণ্ডীতলার নার্সিংহোমে এবিজি পরীক্ষার ব্যবস্থা না-থাকায় প্রৌঢ়কে বালির নার্সিংহোমে স্থানান্তরিত করতে হয়েছিল। সেখানে তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখতে হয়। চিকিৎসকের বক্তব্য, শয্যা নিশ্চিত না করে এমন রোগীকে সরকারি বা উপযুক্ত পরিকাঠামো থাকা বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো ঝুঁকির শামিল। তাঁর দাবি, বেসরকারি হাসপাতালে শয্যার জন্য যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু সাড়া মেলেনি। ওই চিকিৎসক বলেন, ‘‘কো-মর্বিডিটি থাকা এক আশঙ্কাজনক রোগীকে এর আগে পার্ক সার্কাসের ওই নার্সিংহোমই সুস্থ করে তুলেছিল। সেই বিশ্বাস থেকে এই রোগীকেও পাঠিয়েছিলাম।’’

পার্ক সার্কাসের নার্সিংহোমের মালিক বিক্রম খেতান জানান, পরিজনেরা চাইলে রোগীকে অন্যত্র নিয়ে যেতেই পারতেন। তাতে আপত্তি জানানোর প্রশ্ন ওঠে না। তাঁর বক্তব্য, সরকার স্বীকৃত বেসরকারি ল্যাবরেটরি থেকে ওই প্রৌঢ়ের করোনা পরীক্ষা হয়েছে। চিকিৎসা চলাকালীন পরিজনেদের কোনও অভিযোগ ছিল না। রোগীকে মৃত ঘোষণা করার পরেই তাঁরা অভিযোগ তুলছেন। বিক্রম জানান, ময়না-তদন্তের রিপোর্টেই সব স্পষ্ট হবে।

Coronavirus Dankuni
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy