টোটো নিয়ন্ত্রণে মাসখানেক আগে রাজ্য সরকার নির্দিষ্ট পোর্টালের মাধ্যমে নথিভুক্তির নির্দেশ জারি করেছিল। পরিবহণ দফতরের পক্ষ থেকে জারি করা নির্দেশে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ওই কাজ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে করার কথা বলা হয়েছিল। সেই সময়সীমা শেষ হতে বাকি আছে ২০ দিনেরও কম সময়।
গত ১৩ অক্টোবর থেকে টেম্পোরারি টোটো এনরোলমেন্ট নম্বর (টি টি ই এন) পোর্টালে নথিভুক্তির কাজ শুরু হলেও এক মাসে সেই কাজ বিশেষ এগোয়নি বলেই খবর। উপরন্তু দেখা গিয়েছে, রাজ্যে টোটোর থেকে রেজিস্ট্রেশন বিহীন ই-রিকশার সংখ্যাই বেশি। যা চিন্তাবাড়িয়েছে পরিবহণ দফতরের কর্তাদের।
সেই সঙ্গে উঠে আসছে অন্য তথ্য। রাজ্য পরিবহণ দফতরের অনুমান, বিভিন্ন জেলা শহর এবং শহরতলি মিলিয়ে বেআইনি টোটোর সংখ্যা ১০ লক্ষের কাছাকাছি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, পোর্টাল চালু হওয়ার পরে এখনও পর্যন্ত মেরেকেটে ২০ হাজারেরকাছাকাছি টোটো নির্দিষ্ট ফি দিয়ে কিউআর কোড যুক্ত ওই বিশেষ নম্বর (টি টি ই ইন) নিয়েছে। অর্থাৎ, প্রত্যাশার তুলনায় টোটো নথিভুক্তির হার নেহাতই কম।
সরকারি ওই নির্দেশে টোটোচালক এবং মালিকদের এক হাজার টাকা করে রেজিস্ট্রেশন ফি জমা দিয়ে আবেদন করার কথাও বলা হয়েছিল। ওই নির্দেশ অনুযায়ী,প্রথম ছ’মাসের জন্যে আর কোনও টাকা দিতে হবে না। তার পর থেকে প্রতি মাসে ১০০ টাকা করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। রাজ্যে অনিয়ন্ত্রিত হারে টোটোর সংখ্যা বৃদ্ধি ঠেকানো ছাড়াও ওই যানকে দীর্ঘ মেয়াদে পরিবহণদফতরের আইনের আওতায় আনা ছিল অন্যতম লক্ষ্য।
সরকারি নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, নির্দিষ্ট সময়সীমার পরে বেআইনি টোটো নির্মাণ সংস্থা এবং টোটোর বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে হবে। পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, বিভিন্ন জেলায় খোঁজ নিয়ে দেখা যাচ্ছে, সরকারের কাছ থেকে উৎপাদনের অনুমোদন সংক্রান্ত স্বীকৃতি নেই, এমন টোটো নির্মাণ সংস্থার তৈরি টোটোর সংখ্যা খুব বেশি নয়। পরিবর্তে পরিবহণ আইন মেনে ও সুরক্ষা সংক্রান্ত মাপকাঠির শর্ত পূরণ করে বিপুল সংখ্যায় ই-রিকশা তৈরি হয়েছে। যা টোটোর মতোই দেখতে।
কিন্তু, বিভিন্ন স্বীকৃত নির্মাণ সংস্থা ওই সব যান সরকারি বিধি মেনে পরিবহণ দফতরে নথিভুক্ত করে বিক্রি করেনি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ওই সব যানের গতিসীমা ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটারের মধ্যে হওয়ায় ওই নথিভুক্তির কথা মাথায় আনেননি ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়েই। ফলে স্বীকৃত সংস্থার তৈরি ওই সব টোটো নিয়ে কী অবস্থান নেওয়া হবে, ধোঁয়াশা থেকে গিয়েছে।
সরকারি তরফে নির্দেশিকা জারি করার পরেও টোটো নথিভুক্তির ক্ষেত্রে এত কম সংখ্যায় নথিভুক্তিকরণ বিস্মিত করেছেআধিকারিকদেরও। ফলে ওই সমস্ত টোটোকে আগামী দিনে কী ভাবে নিয়ন্ত্রণের আওতায় আনা যাবে, তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে দফতরের আধিকারিকদের। তাই নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরে এ নিয়ে অভিযানে নামা ছাড়াও একাধিক পদক্ষেপ করার কথা ভাবা হচ্ছে বলে দফতর সূত্রের খবর।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)