নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।
ব্যান্ডেজ জড়ানো দু’টি কাটা পা নিয়ে ওয়ার্ডে ঢুকেছিলেন রোগীর পরিজনেরা। কর্তব্যরত নার্সের ধমক খেয়ে বেরিয়ে এসে হাসপাতাল চত্বরে ঘুরছিলেন তাঁরা। যা দেখে চমকে ওঠেন অন্য রোগীদের পরিজনেরা। শেষে পুলিশের হস্তক্ষেপে মর্গে পাঠানো হয় ওই জোড়া কাটা পা!
বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। নিয়ম অনুযায়ী, দুর্ঘটনায় বাদ যাওয়া অঙ্গের ডেথ সার্টিফিকেট তৈরি হওয়ার পরে সেটি মর্গে পাঠানো হয় ময়না তদন্তের জন্য। সেখানে পরিজনদের হাতে কী ভাবে ওই জোড়া কাটা পা এল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এন আর এসের সুপার ইন্দিরা দে বলেন, ‘‘এমনটা হওয়ার কথা নয়। তবে, অনেক সময়ে পরিজনেরা কাটা অঙ্গ নিতে চান। কিন্তু এখানে কী হয়েছিল, তা নিয়ে কথা বলতে হবে। ওই অঙ্গের ক্ষেত্রে যা করণীয়, নিয়ম মেনেই করা হবে।’’
গত সোমবার লক্ষ্মীকান্তপুরে যাওয়ার সময়ে ট্রেন থেকে পড়ে যান ট্যাংরার বাসিন্দা মহম্মদ রাজ। ট্রেনের চাকায় ঘষে গিয়ে তাঁর দু’টি পায়েরই নীচের অংশ মারাত্মক রকম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সঙ্কটজনক অবস্থায় ওই যুবককে তাঁর সহযাত্রীরা এন আর এসে নিয়ে আসেন। তড়িঘড়ি ইমার্জেন্সি অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গিয়ে রাজের দু’টি পা-ই বাদ দিতে হয়। অভিযোগ, এর পরে কর্তব্যরত নার্স ওই দু’টি পা রাজের পরিজনদের হাতে দিয়ে দেন। রক্তাক্ত ও ব্যান্ডেজ জড়ানো পা দু’টি নিয়েই ওয়ার্ডে ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে যান দাদা। তখন সেখানকার কর্তব্যরত নার্সেরা বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানালে তিনি বাইরে চলে আসেন। হাসপাতাল চত্বরে এ ভাবে ঘুরতে দেখে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা রাজের দাদাকে আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে পা দু’টি তাঁরা মর্গে পাঠিয়ে দেন।
নিয়ম বলছে, দুর্ঘটনায় কাটা অঙ্গের ময়না তদন্ত বাধ্যতামূলক। তা হওয়ার পরে সেটি পরিজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়, যদি তাঁরা তা নিতে রাজি হন বা দাবি করেন। কিন্তু এখানে সে সবের আগেই কী করে রাজের পরিজনদের হাতে ওই অঙ্গ চলে গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy