E-Paper

নজর এড়িয়ে হস্টেলের ঘরে ঢোকা নিয়ে প্রশ্ন

আইআইএমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানাচ্ছে, ক্যাম্পাসের ভিতরে ছাত্রী বা অন্য মহিলারা বিপন্ন নন, এটা বোঝানোই এখন প্রাথমিক কর্তব্য। পুলিশের সঙ্গে সর্বতো ভাবে সহযোগিতা করা নিয়ে আগেই বার্তা দিয়েছেন আইআইএমের ডিরেক্টর ইন-চার্জ শৈবাল চট্টোপাধ্যায়।

ঋজু বসু

শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৫ ০৯:১২

—প্রতীকী চিত্র।

শিক্ষাঙ্গনে যৌন নিগ্রহের মতো গুরুতর অভিযোগ ওঠার পরে বিষয়টির নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত এক ফোঁটা আপস করতে চান না আইআইএম কলকাতা কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিয়ে পড়ুয়াদের সব রকম আশঙ্কা দূর করার দায়বদ্ধতা পালন করছেন তাঁরা। আইআইএম কলকাতার ৬৪ বছরের ইতিহাসে ক্যাম্পাসে এই ধরনের ঘটনা ঘটেনি। অভিভাবকদের উদ্বিগ্ন বার্তার ঝড়ও সামলাতে হচ্ছে দেশের প্রথম সারির বিজ়নেস স্কুলটির কর্তৃপক্ষকে। তাঁদের বার্তা পাঠিয়ে আশ্বস্ত করার প্রক্রিয়া চলছে।

আইআইএমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানাচ্ছে, ক্যাম্পাসের ভিতরে ছাত্রী বা অন্য মহিলারা বিপন্ন নন, এটা বোঝানোই এখন প্রাথমিক কর্তব্য। পুলিশের সঙ্গে সর্বতো ভাবে সহযোগিতা করা নিয়ে আগেই বার্তা দিয়েছেন আইআইএমের ডিরেক্টর ইন-চার্জ শৈবাল চট্টোপাধ্যায়। এমবিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগকারিণী ২৪ বছরেরমেয়েটি পূর্ব পরিচয়ের সূত্রে শিক্ষাঙ্গনের ভিতরে এসেছিলেন। প্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানে এই দেখা করতে আসাটুকু কেউই অস্বাভাবিক বলে দেখছেন না। কিন্তু লেক ভিউ হস্টেলে এমবিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রটির ঘরে সেই তরুণী কী পরিস্থিতিতে গিয়েছিলেন,— তা লালবাজারের তদন্তকারী দলকেও চিন্তায় রেখেছে।

ইতিমধ্যে অভিযোগকারিণীর বাবা সংবাদমাধ্যমের সামনে তাঁর মেয়ের সঙ্গে ‘কিছুই হয়নি’ বলে বিবৃতি দেওয়ায় বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। মেয়েটি কিন্তু এক বন্ধুর সঙ্গে প্রথমে ঠাকুরপুকুর ও পরে হরিদেবপুর থানায় গিয়ে শুক্রবার রাতে স্বতঃপ্রবৃত্ত ভাবেই অভিযোগ লেখেন বলে পুলিশের দাবি। জনৈক পুলিশকর্তার বক্তব্য, ‘‘আমরা যা জেনেছি, এমবিএ পড়ুয়াদের হস্টেলটিতে ছাত্র এবং ছাত্রীরা প্রত্যেকে আলাদা আলাদা ঘরে থাকেন। কিন্তু সাধারণত মা, বাবা ছাড়া কাউকে সেই ঘরে যেতে দেওয়া হয় না। হস্টেলের গেস্টরুমে বসেই তাঁদের কথা বলতে হয়। মেয়েটিকে কী বুঝিয়ে অভিযুক্তের হস্টেলের ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেটাও তদন্তের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মেয়েটির সঙ্গে আর কথা বলা যাচ্ছে না বলে খটকা থেকে যাচ্ছে।’’ হস্টেলের ঘরে মেয়েটিকে যৌন নিগ্রহের মতলবে বেহুঁশ করার চেষ্টার অভিযোগের ভিত্তিতে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহেও জোর দিচ্ছে পুলিশ।

আইআইএমের ক্যাম্পাসের মূল ফটক এবং এমবিএ-র হস্টেলের গেট— দু’জায়গাতেই সই করেঢোকা বা বেরনোই রীতি বহিরাগতদের। পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, হস্টেলে ঢোকার সময়ে মেয়েটির সই নেই। কোনও রক্ষীর নজর এড়িয়ে বহিরাগত একজনকে হস্টেলের আবাসিকের ঘরে কী করে নিয়ে যাওয়া হল, সেই প্রশ্নে আইআইএমের ভিতরেও তোলপাড় চলছে। নিরাপত্তাজনিত ফাঁক থাকলে বিষয়টি হালকা ভাবে নেওয়া হবে না বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।

পুলিশি হেফাজতে থাকা অভিযুক্ত ছাত্রের এই শিক্ষাক্রমে ভবিষ্যৎ কী? পুলিশি তদন্তের উপরেই তা নির্ভর করছে। এর মধ্যে অভিযোগকারিণী ও তাঁর পরিবারের মুখে কুলুপ। রাজ্য মহিলা কমিশনও রবিবার পরিবারটির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেব্যর্থ হয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

IIM Joka Security

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy