E-Paper

বিদ্যুৎ বিভ্রাট রুখতে নয়া প্রযুক্তি সিইএসসি-র, ভোগান্তি কমবে কি

বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা সিইএসসি-ও মঙ্গলবার এক পরিসংখ্যান দিয়ে জানিয়েছে, গত বছর এক দিনে যে রেকর্ড পরিমাণ বিদ্যুতের চাহিদা তৈরি হয়েছিল, চলতি বছরে সোমবারের চাহিদা তার অনেকটাই কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৬:২৮

—প্রতীকী চিত্র।

গরম পড়তেই শহরের বেশ কিছু জায়গা থেকে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের অভিযোগ আসতে শুরু করেছে। বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা সিইএসসি-ও মঙ্গলবার এক পরিসংখ্যান দিয়ে জানিয়েছে, গত বছর এক দিনে যে রেকর্ড পরিমাণ (২৬০৬ মেগাওয়াট) বিদ্যুতের চাহিদা তৈরি হয়েছিল, চলতি বছরে সোমবারের (২২০৪ মেগাওয়াট) চাহিদা তার অনেকটাই কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। ফলে সাধারণ নাগরিকদের বড় অংশ প্রশ্ন
তুলছেন, তা হলে কি ফের বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জেরে ভুগতে হবে গত বছরের মতোই? না কি, পুরনো অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার আগে থেকেই কোমর বেঁধে নামছেন সিইএসসি-র আধিকারিকেরা?

এ দিন ধর্মতলায় সিইএসসি-র প্রধান কার্যালয়ে সংস্থার এমডি দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, আরও ভাল গ্রাহক পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যে তাঁরা ‘সুপারভাইজ়ারি কন্ট্রোল অ্যান্ড ডেটা অ্যাকুইজিশন সিস্টেম’ (এসসিএডিএ)-এর ব্যবহার শুরু করেছেন। যে কোনও জায়গায় সমস্যা হলেই প্রযুক্তি-নির্ভর এই ব্যবস্থায় তা দ্রুত ধরা পড়বে। ফলে, সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপও করা যাবে আগের চেয়ে দ্রুত। তাঁর কথায়, ‘‘এর আগেও এমন বিশেষ পদ্ধতির ব্যবহার ছিল। এটা হল পুরনো পদ্ধতিটিরই উন্নততর রূপ। গ্রাহক পরিষেবার উন্নতির লক্ষ্যেই এই নতুন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।’’ তবে গত বছরের গরমের সময়ে যে অবস্থা হয়েছিল, এতে কি তার থেকে সুরাহা মিলবে? দেবাশিস বলেন, ‘‘সব দিক থেকেই এই পদ্ধতি সাধারণ গ্রাহকদের অনেকটা সুবিধা করে দেবে।’’

সিইএসসি সূত্রের খবর, কোনও জায়গায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলে নতুন ব্যবস্থার মাধ্যমে সেই জায়গায় অন্য সূত্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে। এর পরে দ্রুত লোক পাঠিয়ে সংশ্লিষ্ট জায়গার সমস্যা মিটিয়ে ফেলা যাবে। প্রযুক্তি-নির্ভর তথ্য যে হেতু তাৎক্ষণিক ভাবে মিলবে, তাই কাজও দ্রুত হবে। এই পদ্ধতি সাইবার নিরাপত্তার দিক থেকেও শ্রেষ্ঠ বলে সিইএসসি-র দাবি।

যদিও এর পাশাপাশি সিইএসসি জোর দিচ্ছে গ্রাহক সচেতনতার উপরে। তাদের দাবি, গত বছর অনেকে নতুন শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র কিনেই ব্যবহার শুরু করে দিয়েছিলেন। যন্ত্র ব্যবহারের আগে নিয়মানুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থাকে জানাননি। ফলে, সংশ্লিষ্ট যন্ত্রের জন্য লোড বাড়াতে পারেনি সিইএসসি। এর পরে বাড়তি বিদ্যুৎ যাওয়ার কারণে বহু জায়গাতেই বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। সে ক্ষেত্রে সিইএসসি-র নিজস্ব বাড়তি লোড গিয়ে বিপদ না-ঘটানোর প্রযুক্তিই বুমেরাং হয়েছে। সিইএসসি-র ভাইস প্রেসিডেন্ট (ডিস্ট্রিবিউশন) অভিজিৎ ঘোষের দাবি, ‘‘আমাদের
সংযোগের সঙ্গে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র লাগানো থাকে। যা বাড়তি ফ্লো আটকে দেয়, যাতে বিপদ না ঘটে। আমাদের না জানিয়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ব্যবহার করার ফলে বাড়তি বিদ্যুৎ যেতে দেখে আমাদের প্রযুক্তিই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। সেই কারণে এ বার শুরু থেকেই প্রচার চালাচ্ছি, নতুন যন্ত্র ব্যবহার শুরু করলে লোড বাড়ানোর জন্য সিইএসসি-কে জানান। নয়তো ফের ভুগতে হবে।’’

সিইএসসি সূত্রের খবর, গত এক মাসে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের জন্য আবেদন জমা পড়েছে ১৫ হাজার ৬৮৩টি। গত বছরে একই সময়সীমায় আবেদন জমা পড়েছিল ১১ হাজার ৫০টি। সিইএসসি-র দাবি, সব মিলিয়ে গত বছর মোট ৫০ হাজার এমন আবেদন এসেছিল তাদের কাছে। কিন্তু বাজারের যা খবর, তাতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বিক্রি হয়েছিল কয়েক লক্ষেরও বেশি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

CESC Summer Power Outage

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy