Advertisement
E-Paper

ইস্ট-ওয়েস্ট চালু কবে, মন্ত্রীর কথায় ধোঁয়াশা

সোমবার নির্মীয়মাণ মেট্রো প্রকল্পগুলির অগ্রগতি নিয়ে রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল মেট্রোকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৮ ০২:৩০

পুজোর আগে কি আদৌ চালু হবে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো? সংশয় তৈরি হল খোদ রেলমন্ত্রীর মন্তব্যে!

সোমবার নির্মীয়মাণ মেট্রো প্রকল্পগুলির অগ্রগতি নিয়ে রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল মেট্রোকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকের পরে মন্ত্রী জানান, ২০১৯ সালের মার্চ মাস নাগাদ ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর মাটির উপরের অংশে ট্রেন চলাচল শুরু হবে।

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় অবশ্য জানিয়েছিলেন, পুজোর আগেই সেক্টর ৫ থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার পথে মেট্রো পরিষেবা চালু করার চেষ্টা হচ্ছে। এমনকি, গাঁধী জয়ন্তীর দিনে ওই পরিষেবা শুরু করার প্রশ্নে নিজের আগ্রহের কথাও গোপন করেননি বাবুল।

এ দিন অবশ্য রেলমন্ত্রী অন্য কথা শুনিয়েছেন। তিনি বলেন, “ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর যাত্রাপথ বদলের ফলে প্রকল্পের অনেক কিছুই বদলাতে হয়েছে। তবু মাটির উপরের সাত কিলোমিটার পথ ২০১৯ সালের মার্চের মধ্যে মেট্রো চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার চেষ্টা করছি। নীচের অংশ নিয়ে এখনও সমস্যা রয়েছে।”

এর পরে রেলমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, অক্টোবরের মধ্যে সেক্টর ৫ থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম পর্যন্ত মেট্রো চালু হবে কি? রেলমন্ত্রী বলেন, “আমরা ওঁদের (মেট্রোকর্তাদের) ওই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য চেষ্টা করতে বলছি।”

অর্থাৎ, পুজোর আগে মেট্রো চলবে কি না, সে ব্যাপারে স্পষ্ট কিছু বলেননি রেলমন্ত্রী। তবে বাস্তব পরিস্থিতি যা, তাতে ফুলবাগান পর্যন্ত মেট্রো চালাতে গেলে মাটির নীচে যে ব্যবস্থাপনা দরকার, তা এখনও করা সম্ভব হয়নি। মেট্রো সূত্রের খবর, ফুলবাগান পর্যন্ত ট্রেন চালাতে গেলে সেটিকে শিয়ালদহে নিয়ে গিয়ে ফিরতি পথে ‘ক্রসওভার’ থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে। শিয়ালদহ স্টেশনে বাতানুকূল ব্যবস্থা-সহ অন্যান্য কাজ সম্পূর্ণ হতে অন্তত আরও দু’বছর লাগবে।

পাশাপাশি, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো সূত্রের খবর, সেক্টর ৫ থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম পর্যন্ত ট্রেন চালানোর জন্য ‘কমিউনিকেশন বেস্ড ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেম’ (সিবিটিএস) প্রযুক্তি বসাতে অন্তত আরও তিন মাস লাগবে। ওই কাজ শেষ না হলে পুরোদস্তুর পরীক্ষামূলক দৌড় শুরু করা সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে ওই কাজ শেষ করতেই অক্টোবর গড়িয়ে যাবে।

কেন সংশয়

করুণাময়ী থেকে সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত এক বার চালানো হলেও সব শর্ত মেনে শুরু করা যায়নি ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পরীক্ষামূলক দৌড়।

• করুণাময়ী ডিপো থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম পর্যন্ত থার্ড লাইনে বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ সম্পূর্ণ হয়নি।

• এসে পৌঁছয়নি প্ল্যাটফর্মের ‘স্ক্রিন ডোর’।

• রেকের প্রপালশন এবং ইলেকট্রনিক সিস্টেম সংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাকি।

• যে প্রযুক্তিতে মেট্রো নিয়ন্ত্রিত হবে (সিবিটিএস), ৬ কিলোমিটার পথে সেই প্রযুক্তি বসাতে আরও অন্তত তিন মাস।

• ‘কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটি’-র ছাড়পত্র পেতে হলে নতুন পথে অন্তত ৬ মাস নির্বিঘ্নে ট্রেন চালাতে হবে। সব শর্ত পূরণ করে অক্টোবরের মধ্যে ওই ছাড়পত্র পাওয়া কার্যত অসম্ভব।

মেট্রো স্টেশনগুলির বেশ কিছু কাজ এখনও বাকি রয়েছে বলে জানাচ্ছেন মেট্রোকর্তারা। যেমন, চিনের একটি সংস্থার কাছ থেকে প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর এসে পৌঁছনো এখনও বাকি। তার পরেও মেট্রো স্টেশনে টিকিট কাউন্টার, প্ল্যাটফর্মে ঢোকার স্বয়ংক্রিয় গেট, চলমান সিঁড়ি, লিফ্‌ট, রক্ষী এবং সর্বোপরি পর্যাপ্ত সংখ্যক মেট্রোচালকের ব্যবস্থা করার কাজ বাকি থাকবে।

নিরাপত্তা ও পরিকাঠামো সংক্রান্ত শর্ত পূরণ করার পরে অন্তত ছ’মাস পরীক্ষামূলক ভাবে যাত্রী ছাড়া সফল ভাবে মেট্রো চালাতে হবে। অক্টোবর মাসের আগে কার্যত সব কাজ সেরে ফেলা অসম্ভব বলে মনে করছেন মেট্রোকর্তাদের একাংশ। এ প্রসঙ্গে মেট্রোর আধিকারিকেরা অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

পুজোর আগে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো চালু হওয়ার সম্ভাবনা অবশ্য উড়িয়ে দেননি ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। এ দিন তিনি জানান, নির্দিষ্ট সময়ে পরিষেবা শুরু করার সব রকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, “তোলাবাজি-সহ স্থানীয় কিছু সমস্যায় দেরি হচ্ছে। খুব তাড়াতাড়ি মেট্রোর কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করব। তার পরে এ নিয়ে কথা বলব।”

East-West Metro Rail Minister Inauguration Delayed
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy