Advertisement
১১ মে ২০২৪
Rajarhat

নলকূপে আংশিক সুরাহা, রাজারহাটে কত দিনে পৌঁছবে আর্সেনিকমুক্ত জল

এলাকার জলের চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়। প্রশ্ন উঠেছে, এই সমস্যা দীর্ঘদিনের হলেও তার সমাধানে উদ্যোগী হতে এত সময় লাগল কেন?

পরিস্রুত: নলকূেপর সঙ্গে এই ধরনের প্লান্ট বসিয়েই জল আর্সেনিকমুক্ত করা হচ্ছে রাজারহাটে। নিজস্ব চিত্র

পরিস্রুত: নলকূেপর সঙ্গে এই ধরনের প্লান্ট বসিয়েই জল আর্সেনিকমুক্ত করা হচ্ছে রাজারহাটে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২০ ০২:৪৮
Share: Save:

পানীয় জলে আর্সেনিক দূষণের সমস্যা দেড়-দু’দশকের। কিন্তু রাজারহাট পঞ্চায়েত এলাকায় বাসিন্দাদের শুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে মাত্র গত বছর থেকে। সম্প্রতি সেখানকার ২৯টি মৌজায় বসানো হয়েছে ৩৫টি নলকূপ। তার সঙ্গেই বসানো হয়েছে জল পরিস্রুতকরণের বিশেষ প্লান্ট। তার মাধ্যমে মাটি থেকে তোলা জল আর্সেনিকমুক্ত করা হচ্ছে। তবে বাসিন্দাদের অভিযোগ, ৩৫টি নলকূপের মাধ্যমে ওই এলাকার জলের চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়। প্রশ্ন উঠেছে, এই সমস্যা দীর্ঘদিনের হলেও তার সমাধানে উদ্যোগী হতে এত সময় লাগল কেন? কী ভাবে পরিকল্পনা করলে একটি বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের জলের চাহিদা মেটানো যাবে, সেটাই বা বোঝা গেল না কেন?

রাজারহাটের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, আগে প্রশাসনের তরফে আর্সেনিক দূষণ নিয়ে সতর্ক করা হত। কোনও নলকূপের জলে আর্সেনিক পাওয়া গেলে সেটি বন্ধ করে দেওয়া হত। কিন্তু গত দেড়-দু’বছরে প্লান্ট-সহ নলকূপ বসানোই রাজারহাট পঞ্চায়েত এলাকায় এই দূষণ রোধে হওয়া প্রথম প্রকল্প। এখন নলকূপগুলি থেকে আর্সেনিকমুক্ত জল মেলায় বাসিন্দাদের সুবিধা হচ্ছে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই কম বলে অভিযোগ। ফলে পানীয় জলে আর্সেনিক দূষণের সমস্যার পুরোপুরি সমাধান হয়নি। বাসিন্দাদের কথায়, নির্বাচনের আগে তৎপরতা নয়, এই দূষণ ঠেকাতে দরকার দীর্ঘমেয়াদি, সুষ্ঠু পরিকল্পনা।

রাজারহাট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রবীর কর জানান, দীর্ঘদিনের এই সমস্যা মেটাতে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই উদ্যোগী হয়েছিল। তার ফলেই গত বছর থেকে কাজ শুরু হয়েছে। শুধু নলকূপ বসিয়ে পর্যাপ্ত জলের জোগান দেওয়া সম্ভব নয় বুঝে গঙ্গার জল এনে পরিশোধন করে সরবরাহের পরিকল্পনাও করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রবীরবাবু। কাজ সম্পূর্ণ হলে বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত জল সরবরাহ করা হবে। রাজারহাট ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, নলকূপের সঙ্গে থাকা বিশেষ প্লান্টগুলি রক্ষণাবেক্ষণের কাজও শুরু করা হবে শীঘ্রই।

প্লান্ট-সহ এক একটি নলকূপ বসাতে ১২ লক্ষ ২৯ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে বলে রাজারহাট পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রের খবর। আপাতত ৩৫টি এই ধরনের নলকূপ বসানো হয়েছে। সূত্রের খবর, এই প্রকল্প আরও সম্প্রসারিত করা হবে। পাশাপাশি, ধীরে ধীরে মাটির নীচের জলের উপরে নির্ভরতা কমাতে গঙ্গার জল পরিশোধন করে বাড়ি বাড়ি সরবরাহের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের অধীনে সেই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। রাজারহাট পঞ্চায়েতের কর্মাধ্যক্ষ আফতাবউদ্দিন বলেন, ‘‘আরও বেশি করে মানুষের কাছে পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দিতে হবে। তাই দু’ভাবে সেই কাজ করা হচ্ছে। নতুন প্রকল্পের কাজ শেষ হলে সমস্যার সমাধান হবে।’’

রাজারহাটের বিডিও জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় জানান, ওই নলকূপের মাধ্যমে মাটির তলার জল তুলে প্লান্টে আর্সেনিকমুক্ত করা হচ্ছে। মাইনরিটি সেক্টরাল ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট বা এমএসডিপি-র আওতায় এই প্রকল্পের কাজ হচ্ছে। পাশাপাশি, মাটির জল তুলতে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বসানো হয়েছে সৌর প্যানেল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rajarhat Arsenic Drinking Water
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE