Advertisement
E-Paper

টেবিলে হাত চেপে ধরেছিল বৈশাখী, পুলিশকে জানালেন বৌবাজারের নির্যাতিতা

বৌবাজারের আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অফিসে রবিবার সন্ধ্যায় হওয়া ধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্তের সঙ্গী তরুণী বৈশাখী করণ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছেন নির্যাতিতা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৮ ১৮:৫২
অভিযুক্ত রাজীব বিশ্বাস এবং তার সঙ্গী তরুণী বৈশাখী করণ বিশ্বাস। —নিজস্ব চিত্র।

অভিযুক্ত রাজীব বিশ্বাস এবং তার সঙ্গী তরুণী বৈশাখী করণ বিশ্বাস। —নিজস্ব চিত্র।

সঙ্গী তরুণী দু’হাত চেপে ধরেছিল নির্যাতিতার। আর সেই সুযোগেই তরুণীর উপর যৌন নির্যাতন চালায় অভিযুক্ত রাজীব বিশ্বাস। বৌবাজারের আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অফিসে রবিবার সন্ধ্যায় হওয়া ধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্তের সঙ্গী তরুণী বৈশাখী করণ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছেন নির্যাতিতা।

বৌবাজার থানায় করা অভিযোগে কড়েয়ার বাসিন্দা ওই তরুণী জানিয়েছেন, কয়েক মাস আগে একটি গির্জায় বৈশাখীর সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। পরবর্তী সময়ে সোশ্যাল সাইটে তাঁদের যোগাযোগ বজায় ছিল।

নির্যাতিতা নিজেও একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার স্কুলের শিক্ষিকা। তিনি তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, গত ৭ জুলাই, শনিবার তিনি ফোন করেছিলেন বৈশাখীকে। তখনই তাঁরা ঠিক করেন, পরের দিন, রবিবার তাঁরা একসঙ্গে দুপুরের খাবার খাবেন। সেই অনুযায়ী তাঁরা দুপুরে লেক মলে দেখা করেন। তারপর মধ্য কলকাতার একটি পাঁচতারা হোটেলে এসে মধ্যাহ্নভোজ সারেন।

আরও পড়ুন: কলকাতায় ভর সন্ধ্যায় অফিসের মধ্যে ধর্ষিতা তরুণী

নির্যাতিতার অভিযোগ, এর পরেই হরিদেবপুরের বাসিন্দা বৈশাখী তাঁকে বৈশাখীর এক আত্মীয়ার বাড়ি যাওয়ার প্রস্তাব দেন। সেই প্রস্তাব মেনেও নেন তিনি। সেইমতো তিনি বৈশাখীর সঙ্গে হাজির হন নির্মল চন্দ্র স্ট্রিটের বহুতলের চার তলার ফ্ল্যাটে।

এই বহুতলটির চার তলাতেই রয়েছে ওই আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অফিস। সেখানেই তরুণীকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। —ফাইল চিত্র।

প্রথমে তাঁরা দু’জনেই ছিলেন। নির্যাতিতার অভিযোগ, এর মধ্যেই বৈশাখীর ফোনে কেউ ফোন করে। বৈশাখী ফোনের উল্টো দিকে থাকা ব্যক্তিকে সেখানে আসতে বলেন। তার পরই কয়েক মিনিটের মধ্যে হাজির হন এক যুবক যাঁকে রাজীব বলে পরিচয় করিয়ে দেন বৈশাখী। তরুণীর অভিযোগ, ওই যুবকের হাতে একটি মদের বোতল এবং কয়েকটি গ্লাস ছিল।

আরও পড়ুন: যৌনাঙ্গের গভীরে কোকেন! পাচারকারী মহিলাকে নিয়ে ফাঁপরে শহরের গোয়েন্দারা

পুলিশের কাছে নির্যাতিতা দাবি করেছেন যে, এর পরই তিনি প্রতিবাদ করেন। কিন্তু তাঁকে মদ খেতে জোর করেন বৈশাখী। এর খানিক পরই রাজীব তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করলে তিনি বাধা দেন। বাধা দিতেই পাশের টেবিলে তাঁকে চেপে ধরেন বৈশাখী। তাঁর হাত চেপে ধরা হয়। সেই সুযোগে তাঁর ওপর অত্যাচার চালায় রাজীব।

মঙ্গলবার অভিযুক্ত রাজীব এবং বৈশাখীকে আদালতে তোলা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজীবের মূল বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে। বেশ কয়েক বছর ধরেই তিনি একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। এক বছর আগে বিয়েও করেছেন তিনি। রাজীবের এক বন্ধুর দাবি, রবিবার দুপুর সাড়ে বারোটা পর্যন্ত তাঁর সঙ্গেই ছিলেন রাজীব। তারপর কাজ আছে বলে বেরিয়ে যান। রাত ১০টার সময়েও রাজীবের সঙ্গে কথা হয়েছিল তাঁর। তখনও তিনি টের পাননি এ রকম কিছু হয়েছে বলে।

বৈশাখী একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। পুলিশি জেরায় বৈশাখী জানিয়েছেন, তিনি বিবাহ বিচ্ছিন্না। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটেই রাজীবের সঙ্গে তাঁর আলাপ।

মঙ্গলবার আদালতে তোলা হলে সরকারি আইনজীবী ধৃতদের ফের জেরা করার জন্য পুলিশি হেফাজতের আর্জি জানান। বৈশাখীর আইনজীবী সুজয় ঘোষ দাবি করেন, এই অভিযোগ মিথ্যা। তিনি সওয়াল করেন, “নির্যাতিতার অভিযোগে অনেক ধোঁয়াশা রয়েছে। একটি অপরিচিত যুবক মদ নিয়ে এল, তার পর তিনি মদ্যপান করেছেন কি না, সেই বিষয়ে কোনও উল্লেখ নেই অভিযোগপত্রে। নির্যাতিত হওয়ার পর তিনি কী ভাবে সেখান থেকে বেরোলেন, সে বিষয়েও স্পষ্ট বক্তব্য নেই অভিযোগে।” রাজীবের আইনজীবী ফজলে আহমেদও অভিযোগের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছেন “যদি নির্যাতিতার ওপর এই ভাবেই বলপ্রয়োগ করা হয়ে থাকে, তবে তাঁর শরীরে চোট আঘাত থাকা উচিত। সে রকম কোনও আঘাতের উল্লেখ নেই প্রাথমিক মেডিক্যাল রিপোর্টে।” বিচারক দু’পক্ষের বয়ান শুনে দুই অভিযুক্তকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

Rape ধর্ষণ Bowbazar Crime
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy