মেয়ের খোঁজে মা। নিজস্ব চিত্র
বাবা ও দাদার মৃত্যু হয়েছিল কয়েক মাসের ব্যবধানে। তার পর থেকেই অবসাদে ভুগছিলেন তরুণী। মাস দেড়েক আগে ইদের দিন আসানসোলের বার্নপুরের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি। বৃহস্পতিবার দমদমে রেললাইনের পাশে উদ্ধার হল তাঁর দেহ। রেলপুলিশের অনুমান, ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে তরুণীর।
পূর্ব রেল সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার দুপুরে দমদম ও বিধাননগর স্টেশনের মাঝে আপ লাইনের ধারে শমা পরভীন (২১) নামে ওই তরুণীর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। তাঁর পাশে পড়ে থাকা একটি ব্যাগে পরিচয়পত্র মেলে। বার্নপুরে তাঁর বাড়িতে খবর দেওয়া হয়। শিয়ালদহ রেল পুলিশের সুপার সব্যসাচীরমণ মিশ্র বলেন, ‘‘ট্রেনের ধাক্কাতেই ওই মহিলার মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।’’
বার্নপুরের হামিদনগরে মা হামিদা বানুর সঙ্গে ছোট একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন শমা। হামিদা পরিচারিকার কাজ করেন। তিনি জানান, তাঁর স্বামী মহম্মদ রফিক জিনিস ফেরি করতেন। আসানসোলের মসদ্দি মহল্লায় তাঁদের বাড়ি ছিল। বছর দুয়েক আগে অসুস্থ হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। তার কয়েক মাস পরেই অসুস্থ হয়ে পড়ে তাঁদের ছেলে। কিন্তু, অনটনের কারণে তাঁর চিকিৎসা করাতে পারেননি। মৃত্যু হয় ছেলেরও। তার পর থেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন শমা, দাবি তাঁর মায়ের।
হামিদা জানান, মাস তিনেক আগে তাঁরা বাড়ি বিক্রি করে বার্নপুরে ভাড়া বাড়িতে চলে আসেন। সংসার চালাতে শমা কাপড়ের দোকানে কাজ নেন। কিন্তু সেখানে মাঝে-মধ্যেই যেতেন না। প্রায়ই বাড়ি থেকে বেরিয়ে একটি মাজারে গিয়ে বসে থাকতেন। সন্ধ্যায় সেখান থেকে মেয়েকে বাড়ি নিয়ে আসতেন হামিদা। ২৭ জুন, ইদের দিন বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান শমা। কিন্তু সে দিন আর মাজারে গিয়ে তাঁকে পাননি মা। থানায় কোনও নিখোঁজ ডায়েরি না করা হলেও পড়শিদের সাহায্যে শমার ছবি দেওয়া পোস্টার এলাকায় সাঁটিয়েছিলেন হামিদা। কিন্তু মেয়ের হদিস মেলেনি। এ দিন দুপুরে তাঁকে দমদম রেলপুলিশের তরফে ফোন করা হয়। তবে, মেয়ের মৃত্যুসংবাদ দেওয়া হয়নি। এ দিন কলকাতা রওনা হওয়ার আগে হামিদা বলেন, ‘‘মেয়ের খোঁজ মেলার খবর এসেছে। আমি ওকে আনতে যাচ্ছি।’’ শমা কী ভাবে দমদমে পৌঁছলেন, সে নিয়ে ধন্দে তিনি।
রেলপুলিশ জানায়, শমা চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে গিয়েছেন না কি রেললাইনে হাঁটাচলা করছিলেন, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ দিন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দেহের ময়না-তদন্ত হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy