আর জি করে জুনিয়র ডাক্তারদের বিক্ষোভ। বৃহস্পতিবার। — নিজস্ব চিত্র
অধ্যক্ষের ঘরে ডাকা হয়েছিল। দাবিদাওয়া পেশ করার পরে তার প্রায় সব ক’টি মেটানোও হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে শনিবার রাতের হামলাকারীদেরও। তবু প্রতিবাদের পথ থেকে সরলেন না আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারেরা। শুধু বুধবার রাত থেকে পদ্ধতি বদলে তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন, দাবি মতো নিরাপত্তা না-পেলেও তাঁরা পরিষেবা দেওয়ার পথ থেকে সরে আসবেন না। পাশাপাশি, চলবে আন্দোলনও। বৃহস্পতিবার দিনভরও তেমনই প্রতিবাদ জারি থেকেছে। পাশাপাশি, আহত অভিষেকের সঙ্কট এখনও কাটেনি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। এ দিনও তাঁর আর একপ্রস্ত ডায়ালিসিস হয়।
গত শনিবার রাতে পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত এক যুবকের মৃত্যুর পরে গাফিলতির অভিযোগে আর জি করের জুনিয়র ডাক্তারদের উপরে চড়াও হন মৃতের পরিজনেরা। গুরুতর আহত হন অভিষেক ঝা নামে এক জুনিয়র ডাক্তার। এর পরেই রবিবার সকাল থেকে নিরাপত্তার দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেছিলেন বাকিরা। এ দিন দুপুরে অধ্যক্ষ শুদ্ধোদন বটব্যালের ঘরে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদের ডাকা হয়। তাঁরা দাবি তোলেন, হামলাকারীদের প্রত্যেককে গ্রেফতার করতে হবে। সেই সঙ্গে বলা হয়, রোগীর সঙ্গে দু’জনের বেশি বাড়ির লোককে হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। ট্রলির সংখ্যা বাড়াতে হবে, পুলিশ পাহারা দ্বিগুণ করতে হবে হাসপাতালের সর্বত্র। বৈঠকে হাজির ছিলেন হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির অন্যতম সদস্য তথা চিকিৎসক সংগঠন আইএমএ-র নেতা শান্তনু সেন। তিনি বলেন, ‘‘ওঁরা জানতেন না, আরও কিছু হামলাকারীকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা কয়েক দিনের মধ্যে নতুন ২০টি ট্রলিও আনাচ্ছি। পুলিশ প্রহরাও বাড়ছে।’’
ওই ঘটনায় বুধবার রাতেই সোহেল হুসেন ও শিবু থাপা নামে আরও দু’জনকে ধরে টালা থানার পুলিশ। পুলিশের বক্তব্য, চিকিৎসকদের উপরে হামলার ঘটনায় সোহেল ও শিবু সরাসরি যুক্ত ছিলেন। ঘটনার পর থেকে পলাতকও ছিলেন তাঁরা। ধৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মীর কর্তব্যে বাধাদান, গোলমাল বাধানো, মহিলাদের শ্লীলতাহানির চেষ্টা-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আরও কয়েক জনের খোঁজে এখন তল্লাশি চলছে।
তবে এই তথ্য জেনেও ধর্না-অবস্থান তোলেননি বিক্ষোভকারীরা। বুধবার রাত থেকে নয়া পদ্ধতিতে আন্দোলনে নেমেছেন তাঁরা। গত রবি ও সোমবারের কর্মবিরতির জেরে রোগী ভোগান্তির ছবি প্রকট হয়েছিল ওই মেডিক্যাল কলেজে। কর্মবিরতি না তুললে ভবিষ্যতে রেজিস্ট্রেশন নম্বর বাতিল করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন স্বাস্থ্যকর্তারা। সোমবার রাতে তাই কর্মবিরতি তুলে নেওয়া হয়। প্রতিবাদের নয়া পদ্ধতিতে যাঁদের ডিউটি নেই, তাঁরা পোস্টার, ব্যানার নিয়ে পালা করে ইমার্জেন্সি বিল্ডিংয়ের সামনে ধর্নায় বসেছেন। দাবি, হাসপাতাল চত্বরে ডাক্তারদের যথাযথ নিরাপত্তা। আন্দোলনকারীদের এক নেতার কথায়, ‘‘যতক্ষণ না হাসপাতালের সর্বত্র পুলিশি নিরাপত্তা নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট হব, ততক্ষণ পালা করে অবস্থান চলবে। সেই সঙ্গেই আমাদের দাবি, হামলা চলার সময়ে যে সব পুলিশকর্মী নিষ্ক্রিয় হয়ে ছিলেন, তাঁদেরও শাস্তি দিতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy