Advertisement
E-Paper

টাকা অপচয়ে অভিযুক্ত মূষিককুল

এ শহরের মাটির নীচে তাদের বাস। শিকড়ের মতোই ছড়িয়ে গিয়েছে সেই সাম্রাজ্য। তার প্রভাব পড়েছে কার্জন পার্ক, রাইটার্স বিল্ডিং, এসএসকেএম হাসপাতাল, রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ড-সহ গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়।

দেবাশিস ঘড়াই

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৮ ০২:০০
এবড়োখেবড়ো ফুটপাতে সাবধানী পা।

এবড়োখেবড়ো ফুটপাতে সাবধানী পা।

তাদের রাজত্বে নড়ে গিয়েছে বড় বড় সাম্রাজ্যও। বিজ্ঞান আর প্রযুক্তিও নাস্তানাবুদ তাদের কাছে। নিজেদের আয়ত্তে আনতে অসহায় প্রশাসনও।

এ শহরের মাটির নীচে তাদের বাস। শিকড়ের মতোই ছড়িয়ে গিয়েছে সেই সাম্রাজ্য। তার প্রভাব পড়েছে কার্জন পার্ক, রাইটার্স বিল্ডিং, এসএসকেএম হাসপাতাল, রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ড-সহ গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়। দৃষ্টির অগোচরে জনপথের যত্রতত্র ধস নামানোর কারিগর তারাই। বয়সের ভারে ন্যুব্জ ষাটের দশকে তৈরি ঢাকুরিয়া ব্রিজ। গোদের উপরে বিষফোঁড়া তারা, অর্থাৎ ইঁদুরের দল। ব্রিজের নীচের মাটি খুঁড়ে বিপজ্জনক করে তুলেছে সেটি। গত বছরের শেষে বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে সরকার ও বিশেষজ্ঞ সংস্থা যৌথভাবে ব্রিজের মেরামতিও করেছে।

এ বার টাকা অপচয়ের অভিযোগ উঠছে তাদের বিরুদ্ধে। কলকাতা পুরসভার আট নম্বর বরোর অধীন একাধিক কাউন্সিলর এমনই অভিযোগ জানিয়েছেন বরো অফিসে। অভিযোগ, ফুটপাতে নতুন করে বসানো পেভার ব্লকের দফারফা করে দিচ্ছে এই মূষিককুল। বিষয়টি বরো অফিসের বৈঠকেও তোলা হয়েছে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, এর মূল কারণ ফুটপাতে খাবার নিয়ে বসা হকারের ফেলে যাওয়া উচ্ছিষ্ট। সেই খাবারের লোভে পেভার ব্লকের নীচের বালি দিয়ে ধেয়ে আসছে ইঁদুরের দল। ফলে পেভার ব্লক বসানোর কিছু দিন পরেই উঁচু-নিচু হয়ে যাচ্ছে ফুটপাত। রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ের ফুটপাতের দু’দিকে অজস্র গর্ত তৈরি হচ্ছে।

কালীঘাট মেট্রো স্টেশন থেকে লেক মল পর্যন্ত ইঁদুরের উৎপাতে একাধিক জায়গার ফুটপাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানাচ্ছেন ৮৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুব্রত ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কয়েক মাস অন্তর ফুটপাত সারাই করতে হচ্ছে। ফুটপাতের রক্ষণাবেক্ষণেই বেরিয়ে যাচ্ছে টাকা।’’

এমন খাবারের দোকানের জন্যই বাড়বাড়ন্ত ইঁদুরের।

৮৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পারমিতা চট্টোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, ইঁদুরের উৎপাতে তাঁর ওয়ার্ডের ফুটপাতও বেহাল! তাঁর কথায়, ‘‘যত্রতত্র খাবার ফেলার প্রবণতা বন্ধ না হলে এ রকম চলতেই থাকবে। শুধু পেভার ব্লক নয়, বিদ্যুতের খুঁটিও ইঁদুরের দাপটে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। রাস্তায় ধসও নামছে।’’

স্থানীয় বরো অফিসের তরফেও মেনে নেওয়া হয়েছে ইঁদুরের উৎপাতের অভিযোগ। কিন্তু কী করণীয়, জানা নেই পুরকর্তাদের। এক পুর কর্তার উত্তর, ‘‘কী বলব বলুন তো! দেখা গিয়েছে, শুধুমাত্র খাবারের দোকানের আশপাশের পেভার ব্লকই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। রাস্তার অন্য অংশ ঠিক থাকছে।’’ তাঁর দাবি, ইঁদুরের উৎপাত নির্মূল করতে হলে হকারদের যত্রতত্র বসা বন্ধ করতে হবে।

তাই হ্যামলিনের সেই বাঁশিওয়ালা হয়ে উঠতে হবে প্রশাসনকে। বাঁশির সুরে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে— মূষিককুল নয়, হকারদের।

ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

Rat KMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy