এডি ব্লকের এই কফি শপেই হানা দেয় দুষ্কৃতীরা। নিজস্ব চিত্র
কফি শপে ঢুকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে, কর্মীকে দড়ি দিয়ে বেঁধে কয়েক হাজার টাকা লুট করে চম্পট দিল দুষ্কৃতীরা। সোমবার সকালে এমনই অভিযোগ উঠেছে সল্টলেকের এ ডি ব্লকে। এই ঘটনায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে বিধাননগর উত্তর থানায়। সাতসকালে এমন ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।
পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন সকাল ১০টা ২০ মিনিট নাগাদ এডি ৮৪-এর কফি শপে ঢুকে চার যুবক শুভঙ্কর ঘোষ নামে এক কর্মীকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখায়। এর পরে তাঁকে বেঁধে কাউন্টার থেকে প্রায় ১৫ হাজার টাকা লুঠ করে পালায় দুষ্কৃতীরা। ওই কফি শপের জেনারেল ম্যানেজার (পূর্ব) প্রবীণ সিংহ জানিয়েছেন, ঘটনার সময়ে বাইরের কেউ ছিলেন না সেখানে। কর্মী বলতেও শুধু শুভঙ্করই ছিলেন। আক্রান্ত শুভঙ্কর থানায় থাকায় তাঁর সঙ্গে এ দিন কথা বলা সম্ভব হয়নি। ওই কফি চেনের বিজনেস ম্যানেজার (জ়োনাল) মহম্মদ সরফরাজ বলেন, ‘‘শুভঙ্কর জানিয়েছে, চার যুবক কফি শপে ঢুকে বলে, বাবু তাদের পাঠিয়েছে কাজ করার জন্য। শুভঙ্কর বলেন, এখানে বাবু বলে কেউ নেই। আপনারা যান।’’ এর পরেই ওই চার জন শুভঙ্করের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে বলে অভিযোগ। সরফরাজের দাবি, বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে শুভঙ্করেরই অ্যাপ্রন দিয়ে তাঁকে বাঁধা হয়। এর পরে টাকা নিয়ে চম্পট দেয় অভিযুক্তেরা।
শুভঙ্কর নিজেকে বাঁধনমুক্ত করলেন কী ভাবে? সরফরাজের দাবি, শুভঙ্কর বাঁধা অবস্থায় বাইরে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু কারও সাহায্য না পেয়ে শপে ফিরে এসে নিজেরে চেষ্টায় বাঁধন খোলেন। এর পরে প্রথমে সংস্থার এরিয়া ম্যানেজার সুমিত সিংহকে ফোন করেন তিনি। তার পরে ১০০ ডায়ালে ফোন করে পুলিশের সাহায্য চাওয়া হয়। সরফরাজের কথায়, ‘‘আমরা যখন শপে পৌঁছই, তখনও শুভঙ্কর ভয়ে কাঁদছিলেন।’’
আরও পড়ুন: গুলি করল কে, অন্ধকারে পুলিশ
সল্টলেকের বসতি এলাকায় সাত সকালে ডাকাতির অভিযোগে স্বাভাবিক ভাবেই তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। এডি ৮৪-এর বাড়ির মালিক, পেশায় আইনজীবী সৌমী ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এত সকালে এমন ঘটলে ভয় তো পাবই!’’ তবে এই ঘটনায় বেশ কিছু ক্ষেত্রে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে বলে মনে করছেন বিধাননগর কমিশনারেটের তদন্তকারীরা। তাঁদের বক্তব্য, ঘটনার কোনও সাক্ষী নেই। আশপাশের বাসিন্দারাও ঘটনা সম্পর্কে অবহিত নন। সে ক্ষেত্রে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ছিল ভরসা। শপের ভিতরে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। কিন্তু প্রবীণ বলেন, ‘‘যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ঘটনার সময়ের ফুটেজ রেকর্ড হয়নি। আমাদের আইটি টিম ফুটেজ উদ্ধারের চেষ্টা করছে।’’ স্থানীয়দের বাড়ির সিসি ক্যামেরা থেকে ফুটেজ সংগ্রহে নেমেছেন তদন্তকারীরা।
এ বিষয়ে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কমিশনারেট হওয়ার পরে সল্টলেকে এ ধরনের অপরাধ কমেছে। ওয়ার্ডের সব হোটেল, রেস্তরাঁ, কফি শপে যাতে সিসি ক্যামেরা থাকা বাধ্যতামূলক হয়, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ করার জন্য পুরসভাকে বলব।’’ কমিশনারেটের গোয়েন্দাপ্রধান আভারু রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘শপের সিসিটিভি কেন কাজ করেনি, তা দেখা হচ্ছে। সব সম্ভাবনা খোলা রেখেই তদন্ত চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy