Advertisement
E-Paper

ডাকাতির ধারাবাহিকে এ বার নিমতা

বরাহনগর, নোয়াপাড়ার তালিকায় নতুন সংযোজন নিমতা। চলতি মাসের গোড়ায় দিনের বেলায় বরাহনগরের একটি আবাসনে ডাকাতি হয়েছিল। চলতি সপ্তাহের গোড়ায় ডাকাতি হয় নোয়াপাড়ার একটি ফ্ল্যাটে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এ বার ডাকাতির ঘটনা নিমতার একটি বাড়িতে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই বাড়ি থেকে কয়েক হাজার টাকা এবং কয়েক ভরি সোনা-রুপোর গয়না লুঠ করা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:৩৪
এই গ্রিল ভেঙেই ঢুকেছিল ডাকাতেরা। — নিজস্ব চিত্র

এই গ্রিল ভেঙেই ঢুকেছিল ডাকাতেরা। — নিজস্ব চিত্র

বরাহনগর, নোয়াপাড়ার তালিকায় নতুন সংযোজন নিমতা।
চলতি মাসের গোড়ায় দিনের বেলায় বরাহনগরের একটি আবাসনে ডাকাতি হয়েছিল। চলতি সপ্তাহের গোড়ায় ডাকাতি হয় নোয়াপাড়ার একটি ফ্ল্যাটে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এ বার ডাকাতির ঘটনা নিমতার একটি বাড়িতে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই বাড়ি থেকে কয়েক হাজার টাকা এবং কয়েক ভরি সোনা-রুপোর গয়না লুঠ করা হয়েছে।
একের পর এক ডাকাতির ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে। এলাকায় অপরাধ দমনে পুলিশের যে গাফিলতি রয়েছে পক্ষান্তরে তা মেনে নিয়েছেন কমিশনারেট কর্তারাও। খোদ পুলিশ কমিশনার নীরজকুমার সিংহ বলছেন, ‘‘আইনশৃঙ্খলার একটা সমস্যা তো হচ্ছেই। বরাহনগরের ঘটনায় থানার আইসি-কে ডেকে জবাব চাওয়া হয়েছে। সতর্কও করা হয়েছে।’’ তবে একই সঙ্গে পুলিশ কমিশনারের বক্তব্য, বরাহনগরের মালঞ্চ আবাসনে ডাকাতির ঘটনায় তিন দিনের মধ্যে ধরা হয়েছে অভিযুক্তকে। বাকি দু’টো ঘটনাতেও যাতে তড়িঘড়ি গ্রেফতার করা হয়, সে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গ্রেফতার তো অপরাধ হয়ে যাওয়ার পরের পদক্ষেপ। কিন্তু অপরাধ ঠেকাতে ব্যবস্থা করা হবে না কেন? ব্যারাকপুর কমিশনারেট এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, দিনে রাতে রাস্তায় পুলিশি টহলদারি কার্যত দেখাই যায় না। তার ফলে অপরাধীরা সহজে পালিয়েও যেতে পারে। এই অভিযোগের কিছুটা সারবত্তা মিলছে নিমতার ডাকাতির ঘটনা থেকেও।
কী ঘটেছে সেখানে?
পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাত ২টো নাগাদ নিমতা কলাবাগানের বাসিন্দা অতনু হালদারের বাড়িতে চড়াও হয় সাত জন ডাকাত। তাদের এক জনের কাছে আগ্নেয়াস্ত্রও ছিল। অতনুর পাঁচ বছরের মেয়ে অহনার গলায় ভোজালি ঠেকিয়ে আলমারির চাবি নিয়ে নেয় তারা। এর পর আলমারি খুলে নগদ কয়েক হাজার টাকা ও সোনা-রুপোর গয়না লুঠ করে। রেফ্রিজারেটর খুলে ঠান্ডা জল খায়। শৌচাগারও ব্যবহার করে ডাকাতেরা। নিজেদের মধ্যে বাংলা ও হিন্দি মিশিয়ে কথা বলছিল তারা। মুখ বাঁধা ছিল। পরনে ছিল গেঞ্জি ও ট্রাউজার্স। সওয়া দু’ঘণ্টা ধরে লুঠ চালিয়ে বাইরে রাখা একটি আকাশি নীল রঙের অ্যাম্বাসাডর গাড়ি চেপে চম্পট দেয় ডাকাতরা। পালানোর আগে অতনুদের বাড়ির তিনটে মোবাইল ফোনের সিমকার্ড খুলে নিয়েছিল। তবে অতনুর কাছে আরও একটি ফোন ছিল। সেটি থেকেই তিনি বন্ধু ও পুলিশদের খবর দেন।

প্রশ্ন উঠেছে, একটি গাড়িতে চেপে ডাকাতেরা চম্পট দিল। কিন্তু তা কোনও টহলদার পুলিশের নজরে পড়ল না কেন?

পুলিশ সূত্রের খবর, ব্যারাকপুর কমিশনারেট তৈরি হলেও থানাগুলিতে পর্যাপ্ত বাহিনী ও গাড়ি নেই। তার ফলেই এলাকায় যে ভাবে টহলদারি করা প্রয়োজন, তা করা যাচ্ছে না। যদিও এই যুক্তি মানতে নারাজ পুলিশকর্তারা। কমিশনারেটের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘পরিকাঠামোর অভাব দেখিয়ে নিজেদের ব্যর্থতা চাপা দেওয়া যাবে না। পরিকাঠামো থাক বা না-থাক, এলাকায় অপরাধ দমনের দায়িত্ব থানাকেই নিতে হবে।’’ তবে কমিশনারেট কর্তাদের একাংশের যুক্তি, লাগাতার অপরাধের পিছনে ব্যারাকপুর এলাকার ভৌগোলিক অবস্থানও অনেকটা দায়ী। কারণ, এই এলাকার এক দিকে হুগলি জেলা, হাওড়া জেলা অন্য দিকে বিধাননগর কমিশনারেট, বারাসত এবং কলকাতা। ফলে ওই এলাকার দুষ্কৃতীরা এই এলাকায় এসে অপরাধ করে আবার নিজের এলাকায় চলে যাচ্ছে। অনেক সময়ই তাদের হদিস পাচ্ছেন না তদন্তকারীরা। এ প্রসঙ্গে গোয়েন্দা ব্যর্থতার প্রশ্নও উঠেছে।

এ প্রশ্নের সদুত্তর না দিলেও গোয়েন্দাদের দক্ষতার ঘাটতি মেনে নিয়েছেন পুলিশকর্তাদের একাংশ। তাঁরা বলছেন, বরাহনগরের দ্বিতীয় ডাকাতির পর থেকেই গোয়েন্দাদের সক্রিয় হতে বলা হয়েছে। কাজ না করলে বিপদ হতে পারে, বরাহনগরের আইসি-কে সতর্ক করে দিয়ে সে বার্তাও দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার।

Robbery Nimta Barahanagar Noapara
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy