Advertisement
E-Paper

তুমি না মারো তোমার লোকেরা তো মেরেছে: আজও মুখর প্রীতিকুমার

ভোট শুরু হওয়ার পর তখন সবে দু’ঘন্টা পেরিয়েছে। স্ত্রী তৃপ্তি সেনকে নিয়ে ৪২৬ নম্বর বুথে ঢুকলেন প্রীতিকুমার সেন। গত শনিবার পুরভোটের সন্ত্রাসের প্রতিবাদ করায় যার উপর হামলা চালিয়েছিল শাসকদলের বহিরাগতরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৫ ১৮:২৫
প্রীতিকুমার সেন— এ দিন আর সে দিন।

প্রীতিকুমার সেন— এ দিন আর সে দিন।

ভোট শুরু হওয়ার পর তখন সবে দু’ঘন্টা পেরিয়েছে। স্ত্রী তৃপ্তি সেনকে নিয়ে ৪২৬ নম্বর বুথে ঢুকলেন প্রীতিকুমার সেন। গত শনিবার পুরভোটের সন্ত্রাসের প্রতিবাদ করায় যার উপর হামলা চালিয়েছিল শাসকদলের বহিরাগতরা। যদিও সেই দিনের বুথের ছবির সঙ্গে কোনও মিলই ছিল না শুক্রবারের পুননির্বাচনের।

পুরভোটের লাগামছাড়া সন্ত্রাসের পর থেকেই দু’চোখের পাতা এক করতে পারেননি সল্টলেকের বাসিন্দারা। পুননির্বাচন ঘোষণার পরেই ফের নিরপেক্ষ গণতান্ত্রিকতার প্রশ্ন ঘুরে ফিরে উঠছিল ভোটারদের মধ্যে। এদিন সকাল ন’টা নাগাদই ভোট দিতে আসেন প্রীতিকুমার সেন। সল্টলেক প্রাইমারি স্কুলে ভোটারদের লাইন তখন বেশ ফাঁকা। পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ। পরিস্থিতিও স্বাভাবিক, শান্ত। পাশাপাশি এবি কমিউনিটি হলের ৪২৫ নম্বর বুথেও চলছে ভোটগ্রহণ। প্রীতিকুমারবাবু ভোট দিতে আসতেই সমস্ত সংবাদমাধ্যমের নজর ঘুরে যায় তাঁরই দিকে।

বুথে ঢোকার মুখেই ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যয়ের সঙ্গে দেখা হয় প্রীতিকুমারবাবুর। অনিন্দ্যবাবু তাঁকে বলেন, ‘‘আচ্ছা মিস্টার সেন, আমি কী আপনাকে মারধর করেছি?’’ আচম্বিত এই প্রশ্নের জন্য মোটেও তৈরি ছিলেন না প্রীতিকুমারবাবু। তিনি বলেন, ‘‘আমি তো কোথাও এরকম বলিনি যে তুমি মারধর করেছ।’’ অনিন্দ্যবাবু বলেন, ‘‘না সব মিডিয়াতে দেখাচ্ছে যে আমি নাকি আপনাকে মারধর করেছি।’’ উত্তরে প্রীতিকুমারবাবু বলেন,‘‘ না আমি তা বলিনি। আমাকে তুমি মারনি ঠিকই কিন্তু তোমারই দলের বহিরাগতরা মেরেছে আমাকে। সেতো সকলেই দেখেছে।’’ গত শনিবার পুরভোটের দিন ১০-১৫ জন ছেলের একটি দল তারই পাশ দিয়ে ঢুকে যায় ৪২৫ নম্বর ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে। ভেতরে ঢুকে সিপিএম এজেন্টকে মারতে মারত বাইরে বের করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বহিরাগতদের বিরুদ্ধে। তাঁর প্রতিবাদ করতে গেলেই প্রীতিকুমারের উপর হামলা চালায় বহিরাগত দুষ্কৃতীরা। এর ঠিক পরেই অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় এসে তাঁকে সেই পরিস্থিতি থেকে বাইরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এদিন প্রীতিবাবুর সঙ্গে তার কথার পর অনেকেই মনে করছেন নিজের ভাবমূর্তি বজায় রাখতেই পরোক্ষভাবে প্রীতিকুমারবাবুকে দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের মুখ বন্ধ করতে চাইছেন তৃণমূলপ্রার্থী অনিন্দ্য।

শুক্রবার সকালে বুথে ঢুকতেই দেখা যায় নির্বাচন কমিশনের পক্ষে থেকে ক্যামেরায় ছবি তোলা হচ্ছে। প্রিসাইডিং অফিসারের সামনেই প্রীতিকুমারবাবু বলেন, ‘‘সেদিন কোনও ক্যামেরা ছিল না। আজ ক্যামেরায় ছবি উঠছে। সেদিন যদি ক্যামেরা থাকত তাহলে এত গণ্ডগোল এত হামলা, আক্রমণ কিছুই হত না। আমাকে প্রতিবাদও করতে হত না।’’ এরপরেই পোলিং অফিসার তাঁর ভোটার পরিচয়পত্র দেখতে চান। যা শুনেই প্রীতিবাবু বলেন, ‘‘সেদিন তো এটাও দেখতে চাওয়া হয়নি।’’ কেন চাওয়া হয়নি তার জবাব চাইলে প্রিসাইডিং অফিসার সহ অন্যান্য নির্বাচনকর্মীরা জানান, সেদিন যা হয়নি তা কেন হয়নি আজ তাঁরা বলতে পারবেন না।

ততক্ষণে অবশ্য ভোট দিয়ে দিয়েছেন তাঁর স্ত্রী তৃপ্তি সেন। প্রীতিবাবু ভোট দিয়ে বেরোতেই তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়। প্রীতিবাবু বলেন, ‘‘এইটাই তো চেয়েছিলাম। মানুষ নির্বিঘ্নে ভোট দেবে এটাই তো গণতন্ত্রের রীতি। কিন্তু সেদিন তা হয়নি বলেই প্রতিবাদ করি, তার ফলেই হামলা চালানো হয় আমাদের অনেকের উপরে।’’ নির্বিঘ্নে ভোট দিয়ে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে যান প্রীতিকুমারবাবু। গত শনিবার ভোটে সারাক্ষণই প্রায় তাঁকে বুথে দেখা গেলেও পুননির্বাচনের দিন ভোটদানের পর তাঁকে বিশেষ দেখতে পাওয়া যায়নি ভোটকেন্দ্রে।

saltlake repolling pritikumar sen tmc candidate tmc cadres tmc cadre saltlake vote violence saltlake 41 no ward
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy