E-Paper

ব্যবস্থা আছে, তবু ব্যবহার নেই ভার্চুয়াল শুনানির

শিয়ালদহ কোর্ট সূত্রের খবর, অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক, অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট, বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট— সব স্তরের এজলাসেই ভার্চুয়াল শুনানির ব্যবস্থা ছিল।

মিলন হালদার

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২৫ ০৯:০৪
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

আদালতের এজলাসের বাইরে বড় বড় এলসিডি বোর্ড টাঙানো রয়েছে। এজলাসের ভিতরে কোন মামলা চলছে, তার নম্বর দেখা যাওয়ার কথা তাতে। তবে দেখা যায় না কিছুই। বরং অব্যবহারের জেরে সেই বোর্ডে জমেছে পুরু ধুলোর আস্তরণ! এজলাসের ভিতরেও ‘ভার্চুয়াল’ শুনানির জন্য বসানো আছে মনিটর, সরঞ্জাম। অতিমারি পর্বে সুপ্রিম কোর্ট ভার্চুয়াল শুনানি এবং ভার্চুয়াল হাজিরার কথা বলেছিল। অতিমারি-পরবর্তী সময়েও বিচারব্যবস্থায় ভার্চুয়াল মাধ্যমের উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। তাতে এজলাসে ভিড় যেমন কমে, তেমনই অভিযুক্ত, সাক্ষী, আইনজীবীদের যাতায়াতের সময় বাঁচে। বহু ক্ষেত্রে এই হাজিরার অসুবিধার জন্যই শুনানি স্থগিত রাখতে হয়। সেই সমস্যাও এড়ানো যায় ভার্চুয়াল শুনানি হলে। আদালতের খবর, দু’টি এজলাস বাদ দিয়ে বাকি এজলাসে ভার্চুয়াল শুনানি হয় না। সেই সব সরঞ্জামও কার্যত পড়ে আছে।

আইনজীবী এবং বিচারপ্রার্থীদের একাংশের প্রশ্ন, বিচারব্যবস্থার পরিকাঠামোগত উন্নতির জন্যই ভার্চুয়াল শুনানির যন্ত্রপাতি এবং এজলাসের বাইরে জনগণের করের টাকা খরচ করে ডিসপ্লে বোর্ড টাঙানো হয়েছিল। কিন্তু তা যদি কাজই না করে, তা হলে ওই খরচ করে লাভ কী?

শিয়ালদহ কোর্ট সূত্রের খবর, অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক, অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট, বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট— সব স্তরের এজলাসেই ভার্চুয়াল শুনানির ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক (১) এবং এসিজেএম-এর এজলাস ছাড়া আর কোনও বিচারকক্ষেই ভার্চুয়াল শুনানির ব্যবস্থা কাজ করছে না। তার ফলে সশরীরে হাজিরাগত সমস্যায় বহু শুনানিই পিছিয়ে যাচ্ছে। শিয়ালদহ আদালতের এক আইনজীবীর দাবি, ‘‘অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক (১) এবং এসিজেএম-এর এজলাসে বিচারের কাজ ভার্চুয়ালি হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু ইন্টারনেটের সমস্যার জন্য তা-ও মাঝেমধ্যে ব্যাহত হচ্ছে।’’

শিয়ালদহের ফৌজদারি আদালতের বার লাইব্রেরির সম্পাদক বাবুল আখতার হোসেনের অভিযোগ, ‘‘কয়েক কোটি টাকা খরচ করে তিন-চার বছর আগে এগুলি লাগানো হয়েছিল। কিন্তু এখনও এগুলি কাজে লাগানো হয়নি। ফলে পড়ে-পড়ে, ধুলো জমে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই ভাবে কর্মহীন অবস্থায় পড়ে থাকলে জিনিসগুলি একেবারেই নষ্ট হয়ে যাবে। এই ভাবে জনগণের টাকা নষ্ট হচ্ছে। আমাদের দাবি, এই সব ব্যবস্থা অবিলম্বে চালু করতে হবে।’’ শিয়ালদহ আদালতের আর এক আইনজীবী
অমর্ত্য দে বলেন, ‘‘কয়েক বছর ধরে এই সব ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। চালু হলে বিচারপ্রার্থীদেরই সুবিধা হবে।’’

আদালতের একাধিক সূত্র এবং আইনজীবীদের একাংশের আরও অভিযোগ, ভার্চুয়াল বিচারব্যবস্থা চালানোর জন্য যথেষ্ট সংখ্যায় প্রশাসনিক কর্মীও নেই। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ, ডায়মন্ড হারবার, বারুইপুর, ক্যানিং, আলিপুর, শিয়ালদহ আদালত মিলিয়ে এই কাজের জন্য নোডাল অফিসার রয়েছেন মাত্র এক জন।
বাবুল বলেন, ‘‘আদালতে কর্মী নিয়োগ করা হচ্ছে না বহু দিন ধরে। নতুন করে দক্ষ কর্মী নিয়োগ হওয়া একান্ত প্রয়োজন।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Virtual Hearing

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy