মুম্বই এবং চেন্নাইয়ের পরে রেল বোর্ডের আগ্রহে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে লোকাল ট্রেনের দু’টি নতুন এসি রেক পেতে চলেছে শিয়ালদহ ডিভিশন। চলতি সপ্তাহেই ওই দু’টি রেকের এসে পৌঁছনোর কথা।
বছর দুয়েক আগে শহরতলির শাখায় বাতানুকূল লোকাল ট্রেন চালানোর প্রশ্নে আগ্রহের কথা জানিয়েছিল শিয়ালদহ ডিভিশন। সে দিক থেকে দেখলে মুম্বইয়ের পরে কলকাতাতেই পা রাখার কথা ছিল চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরিতে তৈরি হওয়া বাতানুকূল রেকের। এরই মাঝে যাত্রীদের মন বুঝতে মহিলাদের জন্য নির্দিষ্ট লোকাল ট্রেনে বেশি ভাড়ায় বাড়তি স্বাচ্ছন্দ্যযুক্ত প্রথম শ্রেণির কামরা চালু করেছিলেন রেল কর্তৃপক্ষ। সেই উদ্যোগ মুখ থুবড়ে পড়ায় বাতানুকূল লোকাল ট্রেন নিয়ে আর সে ভাবে আগ্রহ দেখাননি শিয়ালদহ ডিভিশন কর্তৃপক্ষ।
হায়দরাবাদের মেধা সংস্থার মোটর ব্যবহার করে নির্মিত স্টেনলেস স্টিলের তৈরি ১২ কোচের নতুন লোকাল ট্রেনের রেক সম্পূর্ণ বাতানুকূল। নতুন লোকাল ট্রেনে বৈদ্যুতিন দরজা ছাড়াও জি পি এস নিয়ন্ত্রিত আধুনিক প্যাসেঞ্জার ইনফরমেশন সিস্টেম থাকবে। ২৫ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন বৈদ্যুতিক মোটরে চলা ওই ট্রেন ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১১০ কিলোমিটার গতিতে ছুটবে।
ট্রেনে যাত্রীদের বসার এবং দাঁড়ানোর পর্যাপ্ত পরিসর ছাড়াও মালপত্র বহনের জন্য অ্যালুমিনিয়ামের শক্তপোক্ত তাক থাকবে। এ ছাড়াও প্রশস্ত ভেস্টিবিউল, চাকায় আধুনিক ডিস্ক মাউন্টেড ব্রেক এবং প্রায় ঝাঁকুনিবিহীন সফরের জন্য আধুনিক সাসপেনশন থাকবে। রিজেনারেটিভ ব্রেকিং ব্যবস্থায় ট্রেন ব্রেক কষলে যে শক্তি খরচ হবে, তার ৩৫ শতাংশ ফের যন্ত্রে ফিরে এসে বিদ্যুতের সাশ্রয় ঘটাবে।
এক-একটি ট্রেনে সর্বাধিক ৫২৮০ জন যাত্রী বহন করা যাবে। তবে, নতুন ট্রেন এলেও কোন রুটে, কী ভাবে এবং কত ভাড়ায় ওই ট্রেন চালানো হবে, তা ঠিক করা নিয়ে সংশয়ে রেলকর্তারা। আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে ওই ট্রেন রাজ্যের জন্য ‘উপহার’ কিনা, সেই জল্পনাও ছড়িয়েছে।
নতুন রেক এলে ব্যস্ত এবং গুরুত্বপূর্ণ রুটে কলকাতার কাছাকাছি গন্তব্যকে যুক্ত করে ওই ট্রেন চালালে সুবিধা হতে পারে বলে মনে করছেন রেলের কর্তাদের একাংশ। নতুন ট্রেনের ভাড়া শিয়ালদহ ডিভিশনে চালু ভাড়ার তুলনায় অনেকটা বেশি হতে পারে। এখন ন্যূনতম পাঁচ টাকার পরিবর্তে ওই ভাড়া ১৫-২০ গুণ বেশি হতে পারে। সূত্রের খবর, সব দিক দেখেই রুটের খোঁজ চালাবেন রেলকর্তারা। অনেকটা বাতানুকূল বাস এবং মেট্রোর ধাঁচে ওই ট্রেনের ভাড়া নির্ধারিত হতে পারে বলে রেল জানিয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)