পরিত্যক্ত: বারাসত থানায় পড়ে আছে আটক গাড়ি। নিজস্ব চিত্র
দেখে মনে হবে, বিক্রির জন্য থরে থরে রাখা মোটরবাইক-গাড়ি। সার দিয়ে দাঁড় করানো নতুন-পুরোনো বিভিন্ন মডেলের গাড়ি। ভিতরে ঢুকলে মালুম হবে আসলে এটা থানা। দিনের পর দিন ধরে আটক গাড়ির নিলাম না হওয়ায় অনাদরে পড়ে সে সব। এই ছবি উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত-মধ্যমগ্রাম এলাকার বিভিন্ন থানায়।
বেশির ভাগ থানাতেই আটক গাড়ি রাখার জায়গার অভাব আছে। ঠাসাঠাসি করে রাখা মোটরবাইক, গাড়ি, বাস ও ট্রাক। পুলিশ সূত্রে খবর, আইন ভেঙে আটক গাড়ির পাশাপাশি রয়েছে দুর্ঘটনায় পড়া গাড়ি-মোটরবাইক। এ ছাড়াও রয়েছে অপরাধজনিত কারণে আটক গাড়ি। মামলার ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত এ ভাবে নষ্ট হচ্ছে লক্ষ টাকার রাজস্ব।
কেন এ ভাবে পড়ে থাকে গাড়ি? পুলিশের দাবি, নিলামের ক্ষেত্রে অনেক নিয়মকানুন মানতে হয়। গাড়ি আটক করার পরে কেউ খোঁজ না করলে অথবা বেআইনি গাড়ি আটকের পর আদালতের নির্দেশ মিললে তবেই গাড়ির নিলাম হয়। এক সঙ্গে বেশ কিছু গাড়ি জমলে তবেই নিলামের আবেদন করা হয়। নিলামের সময় পুলিশ বা প্রশাসনের এক জন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিও জরুরি। তার জন্য জেলা প্রশাসনের অনুমতি প্রয়োজন। পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘এই সমস্ত নিয়ম মানার পরেই নিলাম করা হয়। একটু দীর্ঘ প্রক্রিয়া। এর জন্যেই দেরি হয়ে যায়।’’ প্রয়োজনে এক একটি থানা ধরেও নিলাম করা হয় বলে জানান ভাস্করবাবু।
উত্তর ২৪ পরগনার আঞ্চলিক পরিবহণ অধিকর্তা সিদ্ধার্থ রায় বলেন, ‘‘কোনও থানা থেকে গাড়ি আটক করার পরে নিলামের জন্য আমাদের জানানোর নিয়ম। না হলে উপযাচক হয়ে আমরা কিছু করতে পারি না। অনেক ক্ষেত্রে আমরাও গাড়ি ধরলে সেগুলি পুলিশি হেফাজতেই পাঠাই।’’ মূলত এই জটিলতাতেই আটকে থাকছে গাড়ির নিলাম।
পুলিশকর্মীদের দাবি, এত গাড়ি-মোটরবাইক রাখার মতো পরিকাঠামো থাকে না থানাগুলির। মামলার ফয়সালা হওয়ার পর যখন নিলাম ডাকা হয় তখন গাড়ির দাম পড়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে কার্যত ফেলে দেওয়া ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। লাল ফিতের ফাঁস সরালে দ্রুত নিলাম সম্ভব। তাতে থানাও দখলমুক্ত হবে, সরকারি রাজস্বও বাড়বে বলে জানাচ্ছেন পুলিশকর্মীরাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy