যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় সোমবার জোড়া মিছিল দেখল শহর। দুপুরে ঢাকুরিয়া দক্ষিণাপণ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চার নম্বর গেট পর্যন্ত মিছিল করে শাসকদলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। বিকেলে যাদবপুর থানা থেকে এইট-বি পর্যন্ত মিছিল করে বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই। শাসক এবং বিরোধী— দু’পক্ষই ছাত্রমৃত্যুর তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছে। একই সঙ্গে র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধেও আওয়াজ তুলেছে তারা।
প্রসঙ্গত, যাদবপুরে টিএমসিপির সেই অর্থে শক্তি নেই। তৃণমূল সরকারের সময়ে বাম, অতিবাম সংগঠনের আন্দোলনে চাপে পড়তে হয়েছিল শাসকদলকে। ২০১৪ সালে ক্যাম্পাসে পুলিশ ঢোকা নিয়ে ‘হোক কলরব’ আন্দোলন রাজ্য রাজনীতিকে আন্দোলিত করে। সোমবার তৃণমূল মুখপত্রের শিরোনামে লেখা হয়েছে, ‘মর্মান্তিক মৃত্যু, কোথায় গেল হোক কলরব’। বাম ও অতি বাম কিংবা স্বাধীনদের ‘নিয়ন্ত্রণে’ থাকা যাদবপুরকে ‘খোঁচা’ দিতেই ওই শিরোনাম লেখা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুতে সার্বিক ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ছাত্রদের নিরাপত্তা, হস্টেলে ‘দাদাগিরি’র সংস্কৃতি নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। অনেকের মতে, এই মৃত্যুর ঘটনা উৎকর্ষের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অন্ধকার দিকটা বেআব্রু করে দিয়েছে। এর পর জেলা থেকে বাবা-মায়েরা আর তাঁদের সন্তানকে যাদবপুরে পড়াতে পাঠাবেন কি না সেই প্রশ্নও তুলছেন শিক্ষা মহলের অনেকে।
আরও পড়ুন:
ইতিমধ্যেই যাদবপুরকাণ্ডে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে এক জন প্রাক্তনী, বাকি দু’জন এখনকার ছাত্র। পুলিশের আতশকাচের নীচে রয়েছেন আরও বেশ কয়েক জন পড়ুয়া। তাঁদেরও ডেকে পাঠানো হয়েছে। আগামী বুধবার যাদবপুরে আসার কথা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর প্রতিনিধি দল। রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন শো-কজ় করেছে বিশ্ববিদ্যালয়কে। নোটিস পাঠিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। কলকাতা হাই কোর্টে মামলাও দায়ের হয়েছে। সব মিলিয়ে ক্রমেই চাপ বাড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর।
(পশ্চিমবঙ্গ শিশু সুরক্ষা কমিশনের উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী রবিবার তাঁর একটি ফেসবুক পোস্টে যাদবপুরের মৃত ছাত্রের নাম না-লিখতে অনুরোধ করেছেন। এই মৃত্যুমামলা অপ্রাপ্তবয়স্কদের উপর যৌন নির্যাতন বিরোধী ‘পকসো’ আইনে হওয়া উচিত বলেও তাঁর অভিমত। কমিশনের উপদেষ্টার অনুরোধ মেনে এর পর আনন্দবাজার অনলাইন মৃত ছাত্রের নাম এবং ছবি প্রকাশে বিরত থাকছে।)