জগাছায় ধৃতদের নিয়ে প্যারেড পুলিশের। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
হাওড়ার জগাছার এক ব্যবসায়ীকে গুলি চালিয়ে খুনের চেষ্টার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত এখনও অধরা। কিন্তু ওই ঘটনার তদন্তে নেমে অস্ত্র-সহ এলাকার সাত দুষ্কৃতীকে হাতেনাতে ধরল পুলিশ। আরও সাত জনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতেরা প্রত্যেকেই একই দুষ্কৃতী দলের সদস্য। যে দলের মাথা ওই ঘটনার মূল অভিযুক্ত শঙ্কর কর্মকার। ঘটনার পরে এলাকার এক যুবককে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে তাঁর মোটরবাইক নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল শঙ্কর এবং তার এক শাগরেদ। পুলিশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও সেই ছবি ধরা পড়েছে।
ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানায়, গত ২৫ অগস্ট বিকেলে কেশব ভট্টাচার্য লেনে সুনীল ভৌমিক ওরফে বুলু নামে এক ব্যবসায়ীকে তাঁর ছাঁট লোহা বিক্রির কারখানার সামনে গুলি করে দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। স্থানীয়েরা অভিযোগ করেন, ওই এলাকায় একটি দুষ্কৃতী দল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, যারা প্রকাশ্যে মদ্যপান, অস্ত্র নিয়ে ভয় দেখানো এবং তোলাবাজি চালিয়ে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি করেছে। অভিযোগ, রাত বাড়লেই সক্রিয় হয়ে ওঠে ওই দলটি। এর মধ্যে ব্যবসায়ীকে গুলি করার মতো ঘটনা ঘটলে নড়েচড়ে বসে পুলিশও।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের দাবি, তোলা চেয়ে না পাওয়ার কারণে ওই ব্যবসায়ীকে গুলি করা হয়েছে বলে প্রথমে অভিযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু পরে জানা যায়, পুরনো কোনও শত্রুতার জেরেই গুলি চালায় শঙ্কর। তদন্তকারীরা জানান, এই ঘটনার দু’দিন আগে ওই দলেরই এক দুষ্কৃতী দীনেশ কর্মকারের মুখে গুলি লাগে। দীনেশ এখন এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, ভোলা চৌধুরী ও সন্তোষ সিংহ ওরফে মনোজ নামে শঙ্করের দলেরই লোক দীনেশকে তারই রিভলভার দিয়ে গুলি করেছে। এর পরেই পুলিশ আমতা থেকে ভোলা ও জগাছা থেকে মনোজকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এর পরে একে একে আরও চার দুষ্কৃতীকে ধরে পুলিশ। হাসপাতালেই পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয় দীনেশকেও। এলাকাবাসীদের আতঙ্ক কাটাতে শনিবার ওই ধৃতদের নিয়ে এলাকায় প্যারেডও করায় পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ওই এলাকায় শঙ্করের নেতৃত্বে ১৮ জনের একটি দুষ্কৃতী দল তৈরি হয়েছিল। যাদের কাজ এলাকার কারখানাগুলি থেকে তোলাবাজি করা। এ ছাড়াও অন্য এলাকায় গিয়ে খুন, ছিনতাই করে এসে সেখানে আশ্রয় নিত তারা। ওই দলের যে সাত জনকে আটক করা হয়েছে, তাদের প্রত্যেকের বয়স ১৬ বছরের নীচে। ধৃতদের পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, শঙ্কর-সহ তার দলের আরও চার জনের খোঁজ এখনও মেলেনি। তবে তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy