আগুন আর গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে বিস্ফোরণের আতঙ্কে চার দিকে তখন আর্তনাদ আর হাহাকার।লেলিহান শিখা আর ধোঁয়ার কুণ্ডলী থেকে কোনও মতে বেরিয়ে বাসিন্দারা বাঁচলেও উপায় ছিল না ওদের। বেঁধে রাখা একাধিক গরুকে তাই ঝলসে, ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে মরতে হল। বাসিন্দাদের কেউ কেউ দড়ি কেটে কিছু গরুকে বাঁচাতে পারলেও স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, ৪০টি গরুর মৃত্যু হয়েছে।ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়েছে আরও কয়েকটি গরু-মোষ।
দক্ষিণ দমদম পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের মেলাবাগান বস্তিতে শনিবার বেলার দিকে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটে। দমদম রোডের ধারে হনুমান মন্দিরের কাছে বাগজোলা খাল
সংলগ্ন ওই বস্তিতে রয়েছে খাটাল। এ ছাড়াও অনেকেই বাড়িতে গরু রাখতেন। দমদম-সহ বিভিন্ন জায়গায় এখান থেকেই দুধের সরবরাহ হয়। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে চলছে সেই ব্যবসা।
অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন ব্যারাকপুরের নগরপাল অলোক রাজোরিয়া। তিনি জানান, স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা গবাদি পশুগুলির মৃত্যুর কথা জানতে পেরেছেন। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের তরফে পশু চিকিৎসকদের একটি দলকে সেখানে পাঠানো হয়েছে। অসুস্থ গবাদি পশুদের শারীরিক অবস্থা দেখে জরুরি পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে।
এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে পৌনে ১২টার মধ্যে আগুন গ্রাস করে গোটা বস্তিকে। বাসিন্দাদের এক জন ইউসুফ সানা বলেন, ‘‘বস্তির শেষ প্রান্তে আগুন দেখে ঘর থেকে স্ত্রী, মেয়ে, নাতি-নাতনিদের বার করি। দড়ি কেটে আমার গরুগুলিকে বার করতে পেরেছি। কিন্তু সকলে পারেনি। চোখের সামনে ঝলসে, দমবন্ধ হয়ে মারা গেল কত গরু।’’
গরু-মোষের আর্তনাদ শুনে জীবন বাজি রেখে কেউ কেউ আগুন আর ধোঁয়া থেকে কয়েকটি গরুকে বাঁচিয়ে খালে নামান। আগুন নিয়ন্ত্রণে এলে খাল থেকে তাদের তোলা হয়। সূত্রের খবর, ওই বস্তিতে দুশোর বেশি গরু-মোষ রয়েছে। ক’টি গবাদি পশুর এমন পরিণতি হয়েছে, বাকিদের কী অবস্থা, সেই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য নেওয়া হবে। তবে প্রশ্ন উঠেছে, সকলের চোখের সামনে শহরের ভিতরে খাটাল চলছিল কী ভাবে?
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)