E-Paper

রিল তৈরির দাপটে দর্শকদের সমস্যা, নিয়ম বাঁধছে পুজো কমিটিগুলি

গত বারের মতো এ বারও যে পুজো মণ্ডপে রিল বানানোর ধুম পড়বে, তা ইতিমধ্যেই বুঝেছেন পুজোর উদ্যোক্তারা। তাই প্রথম থেকেই বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি করছেন তাঁরা।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৮:৫৮
ভ্লগারদের জন্য আলাদা গেট থাকবে।

ভ্লগারদের জন্য আলাদা গেট থাকবে। —প্রতীকী চিত্র।

সমাজমাধ্যমে যে রিলের দৈর্ঘ্য দু’মিনিট, বাস্তবে তা তৈরি করতে সময় লাগছে ২০ মিনিট। পুজো মণ্ডপের প্রবল ভিড়ে এত সময় ধরে রিল বানান যাঁরা, তাঁদের জন্য অন্য দর্শনার্থীদের সমস্যা হয় বলে অভিযোগ। তা ছাড়া, তাঁরা নিজেরাও রিল বানাতে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ করেন।

গত বারের মতো এ বারও যে পুজো মণ্ডপে রিল বানানোর ধুম পড়বে, তা ইতিমধ্যেই বুঝেছেন পুজোর উদ্যোক্তারা। তাই প্রথম থেকেই বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি করছেন তাঁরা। তবে, অধিকাংশ পুজোই ভ্লগারদের জন্য মণ্ডপ খোলা রাখছে। কারণ, পুজোকর্তারা জানেন, তরুণ প্রজন্মের এই প্রবণতা পুরো বন্ধ করা যাবে না।

অধিকাংশ পুজোকর্তা মনে করছেন, দর্শনার্থীদের একটি বড় অংশের কাছেই পুজো মানে এখন আর শুধু ঠাকুর-মণ্ডপসজ্জা দেখা নয়। হাতে থাকা মোবাইলের ক্যামেরা দিয়ে তাঁরা বানাতে চাইছেন রিল, ভ্লগ। তার পরে সমাজমাধ্যমে তা আপলোড করে ‘রিচ’ বাড়ানোর পথে হাঁটছেন।

কিন্তু এতে পুজোকর্তাদের কী লাভ? পুজোকর্তারা জানাচ্ছেন, কোনও পুজোর ভাল ভ্লগ বা রিল সমাজমাধ্যমে বেশি মানুষ দেখলে সেই পুজোয় ভিড় বেড়েছে, এমনটাও হয়েছে। এক পুজোকর্তা বলছিলেন, ‘‘আমরা প্রচারের জন্য খুব বেশি খরচ করতে পারি না। এক মিনিটের ভাল রিল এখন পুজোর ভিড় বাড়িয়ে দিতে পারে। শুধু কাগজ পড়ে বা টিভি দেখে নয়, অনেকে ভাইরাল রিল দেখেও পুজো দেখতে আসেন। তাই ভ্লগারদের পুরোপুরি উপেক্ষা করি কী ভাবে?’’

নিউ টাউনের সিএ ব্লক সর্বজনীন দুর্গোৎসবের সভাপতি সুভাষ ভট্টাচার্য জানালেন, গত বার পুজোয় ভ্লগারদের দাপটে অনেক দর্শনার্থী অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। দেখা গিয়েছে, তাঁরা মণ্ডপে ঢুকে অনেক ক্ষণ সময় নিয়ে রিল বানাচ্ছেন। এর ফলে সব চেয়ে বেশি অসুবিধা হচ্ছিল বিশেষ ভাবে সক্ষম দর্শনার্থীদের। এ বার ভ্লগারদের জন্য আলাদা কার্ডের ব্যবস্থা করেছে ওই পুজো কমিটি। ভিড়ের সময়ে একাধিক ভ্লগার যাতে না ঢোকেন, সেই বিষয়টিও নিয়ন্ত্রণ করা হবে। তবে সুভাষ বলেন, ‘‘গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করলেও আমরা অবশ্য ভ্লগারদের রিল বানাতে উৎসাহিতই করছি। যাঁরা প্রতিশ্রুতিমান ভ্লগার, তাঁরা সপ্তমী পর্যন্ত মণ্ডপ, প্রতিমা, আলোকসজ্জা নিয়ে রিল বানিয়ে আমাদের কমিটির সমাজমাধ্যম পেজে আপলোড করতে পারেন।’’

যাদবপুর অ্যাথলেটিক ক্লাবের সম্পাদক দীপাঞ্জন দত্ত জানালেন, তাঁরা ভ্লগারদের জন্য আলাদা গেট রাখছেন। তবে অন্য দর্শনার্থীদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেই নজরদারি অবশ্যই থাকবে।

বেলেঘাটা পল্লি উন্নয়ন সমিতির পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য শুভজিৎ পাল জানালেন, তাঁদের থিম দিঘার জগন্নাথ মন্দির। এই বিষয়ে রিল বানানোর প্রবণতা বেশি দেখা যেতে পারে বলে তাঁরা মনে করছেন। তাই আগেই জানানো হয়েছে, খুব ভিড় থাকলে ভ্লগাদের অপেক্ষা করতে হবে। এ ছাড়াও, দ্রুত রিল বা ভ্লগ বানিয়ে মণ্ডপ থেকে বেরিয়ে যেতে হবে।

সল্টলেকের ইসি ব্লক রেসিডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মৌলীনাথ মাঝি জানান, তাঁরা এ বারই প্রথম ভ্লগারদের জন্য আলাদা কর্নার রেখেছেন। বাগুইআটি রেলপুকুর ইউনাইটেড ক্লাবের যুগ্ম-সম্পাদক উৎপল চন্দ্র বলেন, ‘‘ভ্লগারদের পুরোপুরি আটকানো যাবে না। রিল বানানোর উপরে অনেকের উপার্জন নির্ভর করে। তবে মণ্ডপে ঝুঁকিপূর্ণ রিল বানানো যাবে না।’’


(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Social Media Durga Puja

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy