E-Paper

পাসপোর্ট তৈরিতে অনিয়ম আটকাতে এসসিও-র অফিসারদের দায়িত্ব বদল

তদন্তকারীদের নজরে রয়েছেন এসসিও-র এক কনস্টেবলও। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ ওঠায় তাঁকে ক্লোজ় করা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৫ ০৬:০১
তদন্তকারীদের নজরে রয়েছেন এসসিও-র এক কনস্টেবলও।

তদন্তকারীদের নজরে রয়েছেন এসসিও-র এক কনস্টেবলও। —প্রতীকী চিত্র।

ভুয়ো পাসপোর্ট-চক্রে ইতিমধ্যেই নাম জড়িয়েছে কলকাতা পুলিশের সিকিয়োরিটি কন্ট্রোল অর্গানাইজ়েশনে (এসসিও) কর্মরত অফিসারদের একাংশের। ভুয়ো পাসপোর্ট তৈরিতে সাহায্য করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে সেখানকার এক প্রাক্তন পুলিশ অফিসারকে। যাঁর দায়িত্ব ছিল পাসপোর্টের নথি যাচাই করা। একই সঙ্গে, তদন্তকারীদের নজরে রয়েছেন এসসিও-র এক কনস্টেবলও। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ ওঠায় তাঁকে ক্লোজ় করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী দিনে যাতে এসসিও-র কোনও অফিসার বেআইনি কাজে জড়িয়ে না পড়েন, তার জন্য তাঁদের দায়িত্ব অদলবদল করা হল।

সূত্রের দাবি, বর্তমানে জোড় সংখ্যার তারিখে পাসপোর্ট যাচাইয়ের কাজ করেন এসসিও-র পুলিশ অফিসারেরা। এক-এক জন অফিসারের হাতে নির্দিষ্ট থানার পাসপোর্টের নথি যাচাইয়ের দায়িত্ব থাকে। অন্য দিকে, বিজোড় সংখ্যার তারিখে পাসপোর্ট যাচাইয়ের কাজ করেন থানার পুলিশ অফিসারেরা। সম্প্রতি একটি নির্দেশে এসসিও-র পাসপোর্ট অফিসারদের হাতে থাকা থানার দায়িত্বে বদল আনা হয়েছে। অর্থাৎ, এত দিন যে অফিসার যে থানা বা এলাকার পাসপোর্ট যাচাইয়ের দায়িত্বে থাকতেন, নতুন নির্দেশিকায় সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অন্য অফিসারকে। লালবাজারের বক্তব্য, এর ফলে পাসপোর্ট জালিয়াতিতে ধরা পড়া প্রাক্তন পুলিশ অফিসারের মতো কেউ দীর্ঘদিন ধরে একই থানা বা এলাকার পাসপোর্ট যাচাই করতে পারবেন না। এতে বন্ধ করা যাবে ভুয়ো পাসপোর্ট তৈরি।

এরই সঙ্গে নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, পাসপোর্ট যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট অফিসার তাঁর সহকারী হিসাবে অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার নীচে কোনও পুলিশকর্মীর সাহায্য নিতে পারবেন না। উল্লেখ্য, লালবাজারের তদন্তে এক হোমগার্ডের কথা উঠে এসেছে, যিনি এক জন পাসপোর্ট অফিসারের হয়ে নথি যাচাইয়ের কাজ করতেন। তা ঠেকাতেই এমন নির্দেশ বলে খবর।

লালবাজার সূত্রের দাবি, বর্তমানে পাসপোর্টের আবেদনের সময়ে যে ঠিকানা আবেদনকারী দেন, তা বদল করতে হলে তাঁকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাতে হবে। ওই কর্তৃপক্ষই ঠিক করবেন, সেই আবেদন গ্রাহ্য হবে কিনা। এ ছাড়াও, কোনও পাসপোর্ট অফিসার তাঁর অধীনে থাকা থানার বাইরে অন্য ঠিকানার পাসপোর্টের নথি যাচাই করতে পারবেন না। এক পুলিশ অফিসার জানান, ভুয়ো পাসপোর্টের তদন্তে দেখা গিয়েছে, নিজের এলাকার বাইরে গিয়ে অন্য জায়গার পাসপোর্ট যাচাই করেছেন সংশ্লিষ্ট অফিসার।

লালবাজার জানিয়েছে, ভুয়ো পাসপোর্ট-চক্রে তিনটি জেলার পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রের কী ভূমিকা ছিল, আঞ্চলিক পাসপোর্ট কেন্দ্রের কাছে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। কারণ, আমতা, বসিরহাটের মতো তিনটি পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রের কর্মীদের সঙ্গে এই চক্রের যোগাযোগ উঠে এসেছে তদন্তে। পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রের এক কর্মীকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। আঞ্চলিক পাসপোর্ট কেন্দ্রের তরফে পুলিশকে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত ১২০টির বেশি ভুয়ো পাসপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। তবে, এই সংখ্যা বাড়তে পারে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lalbazar Kolkata Police

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy