Advertisement
E-Paper

রোগ সারাতে গানের সুরে থেরাপি এ শহরেও

আক্রান্ত শিশুকে চাঙ্গা রাখতে এই কাজে উদ্যোগী হয়েছেন সঙ্গীতশিল্পী প্রকৃতি দত্ত। আর জনার্দন ভট্টাচার্যের মতো কোমায় চলে যাওয়া রোগীদের জন্য মিউজিক থেরাপির ব্যবস্থা করা হয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালে। 

মধুমিতা দত্ত

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৯ ০১:৩৮

বছর পাঁচেকের আফজল রক্তের ক্যানসারে আক্রান্ত। কেমোথেরাপির যন্ত্রণা ভুলতে তাকে সাহায্য করছে তবলার বোল। সামনে গান-বাজনা চলতে থাকলে কিছুটা চাঙ্গা হয়ে ওঠে আফজল।

৬৩ বছরের জনার্দন ভট্টাচার্যের স্ট্রোক হয়েছিল। অস্ত্রোপচারের পরে টানা তিন মাসে চলে গিয়েছিলেন গভীর কোমায়। এ ক্ষেত্রেও ডাক্তার শুরু করেছিলেন ‘মিউজিক থেরাপি’। আগরতলায় নিজের বাড়িতে ফিরে গিয়ে তিনি এখন নিজে বসে খেতেও পারছেন। প্রথাগত চিকিৎসার পাশাপাশি, এ শহরে এ ভাবেই ছড়িয়ে পড়ছে ‘মিউজিক থেরাপি’র ব্যবহার। আফজলদের মতো আরও অনেক ক্যানসার

আক্রান্ত শিশুকে চাঙ্গা রাখতে এই কাজে উদ্যোগী হয়েছেন সঙ্গীতশিল্পী প্রকৃতি দত্ত। আর জনার্দন ভট্টাচার্যের মতো কোমায় চলে যাওয়া রোগীদের জন্য মিউজিক থেরাপির ব্যবস্থা করা হয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালে।

চিকিৎসক রাজেশ প্রামাণিকের তত্ত্বাবধানে সেখানে চিকিৎসা হয়েছে জনার্দনবাবুর। রাজেশবাবু জানালেন, অন্যান্য চিকিৎসার পাশপাশি প্রতিদিন প্রায় ছ’ঘণ্টা জনার্দনবাবুকে মিউজিক থেরাপিতে রাখা হত। এক ঘণ্টা দরবারি কানাড়া এবং এক ঘণ্টা রবীন্দ্রসঙ্গীত শোনানো হত। এর সাহায্যে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি। এসেএসকেএমে আরও কয়েক জন রোগীকে এখন পর্যন্ত মিউজিক থেরাপির আওতায় আনা হয়েছে। এই চিকিৎসাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন বলেই মনে করেন রাজেশবাবু। তাঁর মতে, এর জন্য প্রয়োজন আরও গবেষণা।

এই চিকিৎসা পদ্ধতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি কেন্দ্র খুলতে চলেছেন প্রকৃতি। স্কটল্যান্ডের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগ থেকে এমফিল করেছেন তিনি। জানালেন, ক্যানসার আক্রান্ত শিশুদের পাশাপাশি বার্ধক্যজনিত রোগে যাঁরা ভুগছেন, তাঁদেরও সঙ্গীতের ব্যবহার করে ভাল রাখার চেষ্টা করছেন। এতে সুফলও পেয়েছেন যথেষ্ট। এ বার এর পরিসর বাড়াতে তিনি একটি কেন্দ্র খুলছেন। পারস্পরিক টানাপড়েনের মধ্যে সঙ্গীতকে যদি আনা যায়, তাতেও তিক্ততা ভুলে মানুষ নতুন করে বাঁচার চেষ্টা করে বলে দাবি প্রকৃতির। তাই নতুন এই কেন্দ্রে সম্পর্কের টানাপড়েনে ভোগা মানুষদের জন্যও থাকবে সঙ্গীতের মাধ্যমে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা। তিনি বলেন, ‘‘নিত্যদিনের সব কাজের সঙ্গে সঙ্গীতের মধ্যে থাকাও খুব প্রয়োজন।’’

মনঃসমাজকর্মী মোহিত রণদীপ জানালেন, ব্যক্তিজীবনে তিনিও সারাদিনের ব্যস্ততার পরে প্রশান্তি খুঁজে পান সঙ্গীতের মধ্যেই। অনেককেই তিনি মানসিক চাপ কাটাতে গান শোনার পরামর্শ দেন। শুধু তা-ই নয়, সঙ্গীত চর্চারও পরামর্শ দেন। তাঁর মতে, রোগীদের উপরে সঙ্গীতের প্রভাবের বিষয়ে আরও অনেক গবেষণার প্রয়োজন। এ দেশে বিষয়টি একেবারেই প্রাথমিক স্তরে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘কোন গান কোন রোগীর পক্ষে কার্যকর হবে এবং কোনটা হবে না, এ নিয়ে এখনও অনেক গবেষণার অবকাশ রয়েছে।’’

Singing therapy Cancer Disease
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy