পিছন থেকে মালবোঝাই লরি ঘোরাচ্ছিলেন চালক। চাকার ঠিক পিছনেই পড়ে ছিল এক গোছা ত্রিপল। ওই ত্রিপলের উপরেই লরির চাকা উঠতেই ভিতর থেকে শোনা যায় চিৎকার। কোনও রকমে গাড়িটা সামনে এগিয়ে চালক দেখলেন, ত্রিপলের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে রয়েছে এক কিশোরের থেঁতলে যাওয়া দেহ।
মঙ্গলবার সকাল সাতটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব যাদবপুর থানার ই এম বাইপাসের ধারে একটি বহুজাতিক বিপণি সংস্থার পার্কিং লটে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গুরুতর জখম অবস্থায় ওই কিশোরকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মৃত কিশোরের নাম বাণীন্দ্র মহান্তি (১৬)। বাড়ি ক্যানিং এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই কিশোরের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে চালকের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে ওই লরিটির চালক অজয়কুমার যাদবকে। তাঁর বাড়ি বিহারে। ঘটনাস্থল থেকে লরিটিও আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, বাণীন্দ্র অন্য একটি লরিতে খালাসির কাজ করত। এ দিন সকালে তাদের লরির চালকের সঙ্গে ওই বিপণি সংস্থার পার্কিং লটে শুয়ে ছিল সে।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পেরেছে, ঘটনার সময়ে অভিযুক্ত অজয় যাদব লরিটি নিয়ে পার্কিং লট থেকে বেরোচ্ছিলেন। ধৃত লরিচালক পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি বুঝতে পারেননি ওই গোছা ত্রিপলের নীচে কেউ শুয়ে রয়েছে। তিনি ভেবেছিলেন এমনিই ত্রিপল রাখা আছে। পুলিশের কাছে চালক জানিয়েছেন, তিনি কিছু না বুঝেই ওই ত্রিপলের উপরে লরির চাকা উঠিয়ে দেন। চিৎকার শুনে বুঝতে পারেন, ত্রিপলের ভিতরে লোক রয়েছে।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বাণীন্দ্রের সঙ্গে শুয়ে থাকা তার লরির চালক অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন। কারণ লরি চলার শব্দ হতেই ঘুম ভেঙে যায় তাঁর। লরি আসতে দেখে কোনও রকমে গড়িয়ে পাশে চলে যান তিনি। কিন্তু বাণীন্দ্রকে সাবধান করার আগেই তার উপরে লরির চাকা উঠে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, গাড়িতে চাপা পড়ার খবর পেয়ে মৃত কিশোরের পরিবারের সদস্যেরা থানায় আসেন। পুলিশের কাছে অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা। ঠিক কী ভাবে ওই কিশোরের মৃত্যু হল, তা জানার জন্য পার্কিং লটে থাকা সিসিটিভি-র ফুটেজ খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy