Advertisement
০১ এপ্রিল ২০২৩

জিমে মৃত্যু ইঞ্জিনিয়ারের

সকালে অফিসের জিমে শরীরচর্চা করতে গিয়েছিলেন বছর একত্রিশের যুবক। কিন্তু ট্রেডমিলে দৌড়নোর সময়ে হঠাৎ পড়ে যান তিনি। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো যায়নি।

—প্রতীকী ছবি

—প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৭ ০১:১৩
Share: Save:

সকালে অফিসের জিমে শরীরচর্চা করতে গিয়েছিলেন বছর একত্রিশের যুবক। কিন্তু ট্রেডমিলে দৌড়নোর সময়ে হঠাৎ পড়ে যান তিনি। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো যায়নি। পুলিশ জানায়, শনিবার সকাল আটটা নাগাদ নিউ টাউনের এক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় ঘটনাটি ঘটেছে। মৃতের নাম অমর এম (৩১)। বাড়ি কর্নাটকের মহীশূরে।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রের খবর, অতীতে সম্ভবত অমরের বাইপাস বা ওপেন হার্ট সার্জারির মতো বড় অস্ত্রোপচার হয়েছিল। তাই তাঁর পক্ষে ট্রেডমিল করা বিপজ্জনক। সেই অস্ত্রোপচারের তথ্য তাঁদের জানা ছিল না বলেই দাবি জিম কর্তৃপক্ষের। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। ময়না-তদন্তেই সব স্পষ্ট হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

প্রশ্ন উঠেছে, যত্রতত্র গজিয়ে ওঠা জিম ও ফিটনেস সেন্টারগুলি কতটা নিরাপদ? ফিটনেস বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, জিমের সংখ্যা বৃদ্ধি যেমন শহরবাসীর সুস্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতার ইঙ্গিত, তেমন ভয়েরও বিষয়। স্বাস্থ্য রক্ষায় জিমে যোগ দেওয়া যতটা গুরুত্বপূর্ণ, তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ, যোগ দেওয়ার আগে খুঁটিনাটি বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া।

ফিটনেস বিশেষজ্ঞ চিন্ময় রায় জানালেন, অমরের অস্ত্রোপচারের তথ্য সত্যি হলে ধরে নেওয়া যায়, অজ্ঞতার কারণেই এটা ঘটেছে। তাঁর কথায়, ‘‘এখন হাতে হাতে ইন্টারনেট। সবাই ‘সেল্ফ-ট্রেনড’। তাই অতি আত্মবিশ্বাসী হয়ে অনেকেই জিমে যন্ত্রপাতি নিয়ে কসরত করছেন। এই প্রবণতা বিপজ্জনক।’’ আর এক ফিটনেস বিশেষজ্ঞ মনোজ দে দায়ী করলেন অতিরিক্ত যন্ত্র-নির্ভরতাকে। তাঁর কথায়, ‘‘সুস্বাস্থ্যের জন্য খালি হাতেই অনেক ব্যায়াম করা যায়। কিন্তু সে সব ভাল করে না-জেনেই হইহই করে ট্রেডমিলে উঠে যাওয়াটা সমস্যা ডেকে আনে।’’ তিনি জানান, ট্রেডমিলে ওঠার আগে পাঁচ থেকে দশ মিনিটের ‘ওয়ার্ম আপ’ জরুরি। সেই সঙ্গে জরুরি, ট্রেডমিলে দৌ়ড় শুরু করার পরে কতটা সময়ে কতটা গতি বাড়ানো যায়, তার আন্দাজ। গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না-পেরে ট্রেডমিল থেকে পড়ে আকছার দুর্ঘটনা ঘটে।

Advertisement

২০১৪ সালে শহরের বিখ্যাত একটি জিমে এ ভাবেই এক যুবকের মৃত্যুর পরে বেশ কিছু জিম ঠিক করে, মেডিক্যাল ইতিহাস না-জেনে কাউকে ভর্তি নেওয়া হবে না। সেই নিয়ম বেশি দিন টেকেনি। বিশেষজ্ঞদের প্রস্তাব, জিমে যোগ দেওয়ার আগে হার্ট পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত। শহরের অধিকাংশ জিমেরই নিয়ম হল, প্রশিক্ষকের অধীনে অভ্যাস করলে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়। অনেক সময়ে দেখা যায়, অতিরিক্ত টাকা দেওয়া নেই বলে ভুল পদক্ষেপ দেখেও শুধরে দিচ্ছেন না প্রশিক্ষক। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটা বিপজ্জনক। জিমের মাসিক টাকার মধ্যে প্রশিক্ষকের ফি-ও যুক্ত থাকার কথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.