Advertisement
E-Paper

death: মাসাধিক কাল ধরে বাবার দেহ আগলে ছেলে

ছেলের মানসিক সমস্যা রয়েছে বলেই স্থানীয়দের দাবি। এলাকায় তিনি কারও সঙ্গে তেমন মিশতেন না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২১ ০৯:১৮
দেহ উদ্ধারের পরে বাড়ির সামনে পুলিশি প্রহরা। সোমবার, কে পি রায় রোডে।

দেহ উদ্ধারের পরে বাড়ির সামনে পুলিশি প্রহরা। সোমবার, কে পি রায় রোডে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

ঘরে খাটের উপরে শোয়ানো মৃতদেহ। মাথায় বালিশ, পরনে লুঙ্গি জাতীয় পোশাক। তবে চেহারা দেখে চেনার কোনও উপায় নেই, কারণ দেহটি পুরোটাই পচেগলে গিয়েছে। ঘরের জানলাগুলি ভাল করে আটকানো। দুর্গন্ধে ঘরের ভিতরে এক মুহূর্ত দাঁড়িয়ে থাকা দায়! সোমবার সকালে কে পি রায় রোডের একটি একতলা বাড়িতে ঢুকে এই দৃশ্য দেখে কার্যত চমকে উঠেছিলেন প্রতিবেশী ও পুলিশ আধিকারিকেরা। ইতিমধ্যেই পচাগলা দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রের খবর, মৃতের নাম সংগ্রাম দে (৭০)। গরফা থানা এলাকায় ওই বাড়িতে স্ত্রী ও বছর চল্লিশের ছেলের সঙ্গে থাকতেন তিনি। পুরো বিষয়টি খতিয়ে
দেখতে মৃতের ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, জেরায় তিনি জানিয়েছেন, প্রায় তিন মাস আগেই মৃত্যু হয়েছে সংগ্রামবাবুর। কিন্তু কেন কাউকে সেই খবর দেওয়া হল না, সেই প্রশ্নের সদুত্তর এখনও মেলেনি।

প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, সংগ্রামবাবুকে বাড়ির বাইরে শেষ দেখা গিয়েছিল বিশ্বকর্মা পুজোর আগে। অসুস্থ অবস্থায় পথে বেরোতে দেখে স্থানীয়েরাই তাঁকে বাইরে না বেরোনোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। তার পর থেকে আর বৃদ্ধের দেখা মেলেনি। এর পরে এ দিন সকালে প্রতিবেশীরা গরফা থানায় খবর দেন। পুলিশ এসে ঘরে ঢুকে ওই বৃদ্ধকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। তবে মৃতদেহ দেখে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, বেশ কয়েক সপ্তাহ আগেই মৃত্যু হয়েছে সংগ্রামবাবুর।

স্থানীয় সূত্রের খবর, সংগ্রামবাবু সল্টলেকের ভাবা পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রের প্রাক্তন কর্মী ছিলেন। তাঁর স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরেই শয্যাশায়ী। ছেলের মানসিক সমস্যা রয়েছে বলেই স্থানীয়দের দাবি। এলাকায় তিনি কারও সঙ্গে তেমন মিশতেন না। গত সেপ্টেম্বরে, বিশ্বকর্মা পুজোর আগে সংগ্রামবাবুকে শেষ বার বাইরে দেখা গিয়েছিল। বিশ্বকর্মা পুজোর দিন প্রতিবেশীরা ওই বাড়িতে প্রসাদ দিতে গেলেও সংগ্রামবাবুর দেখা পাননি। তাঁর ছেলে নিজেই দরজা খুলে প্রসাদ নিয়েছিলেন। তার পর ছেলেকে দু-এক বার বাড়ির বাইরে দেখা গেলেও সংগ্রামবাবুকে দেখেননি কেউই। স্থানীয় বাসিন্দা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সংগ্রামবাবু সকলের সঙ্গে মিশতেন। দীর্ঘ দিন তাঁকে না দেখতে পেয়ে এই মাসের প্রথম দিকে এক জনকে আমরা ওই বাড়িতে পাঠিয়েছিলাম। তখন তাঁর ছেলে দরজা খুলে বাইরে এসে বলেছিল, বাবা সামাজিক ভাবে মৃত। যদিও আমরা তখন বিষয়টিকে গুরুত্ব দিইনি। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে সংগ্রামবাবুকে দেখতে না পেয়ে সন্দেহ হওয়ায় আজ পুলিশে খবর দেওয়া হয়।’’

গরফা থানার পুলিশ ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এ দিন মৃতের ছেলে ও স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারীরা। বৃদ্ধের কী ভাবে মৃত্যু হল এবং সেই খবর কেন কাউকে জানানো হয়নি, সেই প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর কারণ জানা যাবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। সংগ্রামবাবুর ছেলের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে বলেও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy