Advertisement
০৩ মে ২০২৪
rainfall

Rainfall: বৃষ্টির জমা জলে ইট পেতেই চলে থানার কাজ

থানার পুলিশকর্মীদের একাংশের দাবি, ওই জমিটি তুলনায় নিচু এবং মোমিনপুরের নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল।

জমা জল থেকে বাঁচাতে এ ভাবেই ইট দিয়ে উঁচু করা থাকে দক্ষিণ বন্দর থানার আসবাবপত্র।

জমা জল থেকে বাঁচাতে এ ভাবেই ইট দিয়ে উঁচু করা থাকে দক্ষিণ বন্দর থানার আসবাবপত্র। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

চন্দন বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৫:২৯
Share: Save:

ভারী বৃষ্টি হলেই আলমারি, চেয়ার-টেবিল, এমনকি সোফাও উঠে যায় থান ইটের উপরে, মাটি থেকে কয়েক ইঞ্চি উঁচুতে। বড়বাবুর ঘর, সেরেস্তা, মালখানা— দক্ষিণ বন্দর থানার অন্দরে বর্ষাকালের এটাই চেনা ছবি। কারণ, ভারী বৃষ্টি হলেই জল জমে যায় থানার ভিতরে। তবে মঙ্গলবারের টানা বৃষ্টিতে অবশ্য এতটাও খারাপ হাল হয়নি। যদিও থানার পুলিশকর্মীরা বলছেন, এ নেহাতই বরাতজোর।

বন্দর লাগোয়া এই থানার নতুন ভবন তৈরি হয়েছিল ২০১৬ সালে। থানা সেখানে সরিয়ে আনার পরেই বিপত্তির শুরু। ভারী বৃষ্টি হলেই থানার কাজকর্ম লাটে ওঠার জোগাড়! ভিতরে কখনও কখনও হাঁটুজলও জমে যায় বলে অভিযোগ। কখনও আবার জলের নাগাল থেকে নথিপত্র বাঁচাতে টেবিলের উপরে আরও একটি টেবিল রেখে কাগজপত্র সেখানে তুলে রাখতে হয়। অভিযোগ জানাতে আসা ব্যক্তিকে দরখাস্ত লিখতে হয় জমা জলে পা ডুবিয়েই। এমনকি, বেশি বৃষ্টিতে থানার লকআপের বন্দিদের রাতদুপুরে রেখে আসতে হয় অন্য থানায়! থানার এক পুলিশকর্মী বললেন, ‘‘বড়বাবু নিজের উদ্যোগেই ইট এনে আসবাব উঁচু করার ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু চেয়ার-টেবিল বাঁচলেও আমাদের বাঁচার রাস্তা থাকে না। হাঁটুজলেই কাজ করতে হয়।’’

থানার পুলিশকর্মীদের একাংশের দাবি, ওই জমিটি তুলনায় নিচু এবং মোমিনপুরের নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল— মূলত এই দু’টি কারণেই বর্ষা এলেই জলমগ্ন হয়ে পড়ে গোটা থানা চত্বর। মোমিনপুরের বেহাল নিকাশি ব্যবস্থার কথা মেনে নিয়ে কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর এক সদস্য জানাচ্ছেন, এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।

থানা সূত্রের খবর, এ বারের বর্ষাতেও এই জল-যন্ত্রণার সাক্ষী থেকেছে দক্ষিণ বন্দর থানা। সম্প্রতি টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সেরেস্তার ভিতরে প্রায় কোমর সমান জল জমে যায়। পরিস্থিতি এমন হয় যে, থানায় আটক বন্দিদের পাশের ওয়াটগঞ্জ থানায় পাঠাতে হয়। এমনও দিন গিয়েছে যে, নথিপত্র বাঁচাতে মাঝরাতেই আরও ইট চাপিয়ে আলমারি উঁচু করতে হয়েছে। গত দু’দিনের বৃষ্টিতেও থানায় সামনের রাস্তায় জল জমে গিয়েছে বেশ কিছুটা। তবে থানার এক পুলিশকর্মী বলছেন, ‘‘এই দু’দিনের বৃষ্টিতে কপালজোরে রক্ষা পেয়েছি। মুষলধারে আর একটু বেশি বৃষ্টি হলেই থানার ভিতরে জল থইথই করত।’’

ওই পুলিশকর্মীর কথায়, ‘‘জল জমলেই বা কী! থানা ছেড়ে তো চলে যেতে পারি না। গামবুট পরে কাজ করতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি। তবে অভিযোগ জানাতে আসা ব্যক্তিদের যে থানায় এসে সমস্যায় পড়তে হয়, তাতে সন্দেহ নেই।’’ মোবাইল হারানোর অভিযোগ জানাতে থানায় আসা শেখর কর্মকার বলছেন, ‘‘বর্ষায় থানা চত্বরে ঢোকাই যায় না। হাঁটুজল ঠেলে কে অভিযোগ জানাতে আসবে?’’

দক্ষিণ বন্দর থানার এই জল-সমস্যার কথা অজানা নয় লালবাজারের। এক পুলিশকর্তা বললেন, ‘‘সমস্যা সমাধানে পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দফতরকেও জানানো হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী এই সমস্যার কী ভাবে সমাধান করা যায়, দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

rainfall police Stagnant Water
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE