Advertisement
E-Paper

দানের মহিমা বোঝাতে পুরস্কার

শুধু অর্থদান নয়! তার বদলে কেউ এগিয়ে আসছেন বাড়ির কোনও সামাজিক অনুষ্ঠানের উদ্বৃত্ত খাবার নিয়ে। দাতাদের কাছে কারও আর্জি, দুঃস্থদের জন্য নির্দিষ্ট কিছু পোশাক সরবরাহের। কেউ আবার দায়িত্ব নিয়েছেন, সঙ্গতিহীন পড়ুয়াদের দরকার মাফিক কয়েকটি পাঠ্যবই সরবরাহের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:১১

শুধু অর্থদান নয়! তার বদলে কেউ এগিয়ে আসছেন বাড়ির কোনও সামাজিক অনুষ্ঠানের উদ্বৃত্ত খাবার নিয়ে। দাতাদের কাছে কারও আর্জি, দুঃস্থদের জন্য নির্দিষ্ট কিছু পোশাক সরবরাহের। কেউ আবার দায়িত্ব নিয়েছেন, সঙ্গতিহীন পড়ুয়াদের দরকার মাফিক কয়েকটি পাঠ্যবই সরবরাহের।

দানের মহিমা নিয়ে সংবেদনশীল নাগরিকদের সজাগ করতে মাঠে নামছে কোনও কোনও বেসরকারি সংস্থা। এক-একটি দানের বিচিত্র অভিঘাত বুঝে আরও অনেককে উৎসাহিত করতে দানের জন্য একটি সংস্থা পুরস্কারও চালু করেছে।

‘‘শুকনো অর্থদান কী কাজে লাগল, তা সব সময়ে বোঝা যায় না। কিন্তু ভেবেচিন্তে কারও প্রয়োজনীয় জিনিসটির বন্দোবস্ত করার মাধ্যমে একটা আত্মিক যোগ গড়ে ওঠে।’’ — বলছিলেন এক বেসরকারি সংস্থার কর্তা পি কে মাডাপ্পা। রবীন্দ্রনাথের কবিতায়, দুর্ভিক্ষপীড়িত শহরে বুদ্ধভক্ত বাঘা বাঘা সমাজপতিরা যখন সেবাকাজে পিছপা, তখন সঙ্গতিহীন ভিক্ষুকন্যাই এগিয়ে এসেছিলেন তাঁর ভিক্ষাপাত্র নিয়ে। ঠিক তেমনই, স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারাও পারেন, তাঁদের যৎসামান্য জিনিসপত্রের ভাগ অপরের দরকারে বিলিয়ে দিতে। যেমন, গত বছর কোনও সংগঠনের ছত্রচ্ছায়া ছাড়াই নাগরিক সমাজের একাংশ উদ্যোগী হয়েছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার খুদেদের মন ভাল করতে খেলনা সংগ্রহের জন্য। কলকাতার কোনও কোনও খুদে ও তার মা-বাবাও দামি খেলনাটি হাতছাড়া করতে কসুর করেননি।

দানের এই রকমফেরের অন্য একটি উপযোগিতাও রয়েছে। এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তা চন্দ্রশেখর কুন্ডুর কথায়, ‘‘হঠাৎ করে থোক টাকা দিলে পরে সমস্যাও হতে পারে। তার থেকে প্রয়োজনীয় খাবার, পোশাক বা অন্য ছোটখাটো কিছু অপরকে দিলে একটা স্বচ্ছ প্রক্রিয়া জারি থাকে।’’ তবে অন্যের ভাল করার মানসিকতার বদলে সস্তা জনপ্রিয়তা লাভ বা বাহবা কুড়নোর মানসিকতা থাকলে দানের ফলে হিতে বিপরীত হতে পারে বলেও মনে করেন অনেকেই। সমাজতত্ত্বের শিক্ষক প্রশান্ত রায়ের কথায়, ‘‘স্রেফ জনপ্রিয়তা লাভের জন্য দান করলে তা নিছকই তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটাবে। সমাজকে এগিয়ে দিতে তেমন কাজে লাগবে না।’’ সত্যিকারের আন্তরিক দানের সঙ্গে তাই ভোটের আগে মন ভোলানোর জনমোহিনী রাজনীতির ফারাক আছে।

ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগের প্রধান সুজিত ঘোষ বলেন, ‘‘যিনি গ্রহণ করলেন, শুধু তিনি নন! দান আন্তরিক হলে যিনি দিলেন, তিনিও উপকৃত হবেন। মানুষ হিসেবে তাঁর একটা উত্তরণ ঘটবে।’’ গ্রহীতার কাছে দাতারও তাই এক ধরনের ঋণ থেকে যায়।

National Medical College Health Economy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy