Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
KMC

Firhad Hakim: প্রায় বিরোধীহীন পুরসভায় ফের কি গুরুত্ব পাবে নাগরিক দরবার

পুর আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, রাজনীতির প্রসঙ্গে তাঁরা নিশ্চিত ভাবে কিছু বলতে পারবেন না।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:৩১
Share: Save:

রাজনৈতিক সমীকরণ? দলনেত্রীর প্রতি ‘আনুগত্য’? প্রশাসনিক বিচক্ষণতা?— যে কারণে দেশের অন্যতম প্রাচীন পুরসভার মেয়র পদে ফের বসলেন ফিরহাদ হাকিম? আপাতত এই প্রশ্নই ঘুরছে কলকাতা পুর প্রশাসনের অভ্যন্তরে।

পুর আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, রাজনীতির প্রসঙ্গে তাঁরা নিশ্চিত ভাবে কিছু বলতে পারবেন না। তবে কলকাতার মেয়রের ‘টক টু মেয়র’ কর্মসূচির মাধ্যমে সরাসরি নাগরিকদের ক্ষোভ, অভিযোগ, সমস্যার কথা শোনার একটা প্রভাব রয়েছে। যদিও বিরোধীদের একাংশের বক্তব্য, এই কর্মসূচি রাজনৈতিক চমক ছাড়া কিছুই নয়। প্রাক্তন মেয়র বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য জানাচ্ছেন, আগেও মেয়রের সঙ্গে সাধারণ নাগরিকেরা কথা বলতে পারতেন, দেখা করতে পারতেন। সে দিক থেকে দেখলে ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে বিন্দুমাত্র নতুনত্ব নেই। বরং বিকাশবাবুর কথায়, ‘‘আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এই
কর্মসূচির মাধ্যমে শুধু প্রচার করা হয়েছে।’’

তবে পুরকর্তাদের একাংশের বক্তব্য, ‘টক টু মেয়র’ কর্মসূচির সরাসরি সম্প্রচার হয়। ফলে পুরসভার ত্রুটি-বিচ্যুতির বিষয়গুলিও সরাসরি শুনতে পান শ্রোতা-দর্শকেরা। এমনও হয়েছে যে, এক বার ফোন করে পুর পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভ জানানোর পরেও কাজ না হওয়ায় জনৈক নাগরিক ফের ফোন করেছেন কর্মসূচি
চলাকালীন। পুর প্রশাসনকে জানানোর পরেও যে কাজ হয়নি, তা বলেছেন। যা শুনে বিরক্ত ফিরহাদ সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে ‘ধমক’ দিয়েছেন। নির্দেশ দিয়েছেন কাজ দ্রুত শেষ করতে। এক পুর আধিকারিকের কথায়, ‘‘সরাসরি সম্প্রচারে সব সময়েই সমালোচিত হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়। সে দিক থেকে এটা নিঃসন্দেহে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।’’ যদিও শাসকদলেরই প্রাক্তন এক বরো চেয়ারম্যান কিছুটা তির্যক ভাবে বলছেন, ‘‘কতটা কী কাজ হয়েছে, তা আমরা জানি! আর কে সমালোচনা করবে? তার জন্য বিরোধী থাকা দরকার। বিরোধীদের অস্তিত্ব কোথায়?’’

এই বিতর্কে না ঢুকে আরও একটি বিষয়ের উল্লেখ করছেন পুরকর্তারা। তা হল দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মাঝপথে মেয়র পদ ছাড়তে ‘বাধ্য’ হয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। হাল ধরেছিলেন ফিরহাদ। পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের কাজকর্ম সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকলেও ‘ছোট নবান্ন’
কলকাতা পুরসভার সাম্প্রতিক খুঁটিনাটি, দৈনন্দিন কাজকর্ম সম্পর্কে শুরুতে ততটা জানা ছিল না ফিরহাদের। পুর প্রশাসনের শীর্ষ পদে ধাতস্থ হয়ে ওঠার আগেই করোনার মতো অতিমারি দেখেছে কলকাতাও। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘ফলে মেয়র বা প্রশাসক পদে ফিরহাদ হাকিমের দক্ষতার পুরো মূল্যায়ন বা তিনি সফল না ব্যর্থ, সেটা পুরো যাচাই করা যায়নি। সে দিক থেকে দেখলে তাঁর দ্বিতীয় বার সুযোগ অবশ্যই প্রাপ্য।’’

যদিও এক প্রাক্তন মেয়র পারিষদের কথায়, ‘‘এমন একটা সিদ্ধান্তের কথা বলুন, যেটা ফিরহাদ হাকিমের সময়ে নেওয়া হয়েছে।’’
ফিরহাদের ঘনিষ্ঠ মহল যা শুনে বলছে, ক্ষমতা যাঁরা পাননি, তাঁরাই ফিরহাদের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। আর ফিরহাদ সে সব বিতর্কে না ঢুকে শুধু বলছেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন ভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, নির্দেশ দেবেন, সেটাই পালন করব।’’

সব মিলিয়ে যাবতীয় বিতর্ক দূরে সরিয়ে রাখলে এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি তা হল, প্রায় ‘বিরোধীহীন’ পুরসভায় আরও এক বার নাগরিক দরবারে ফিরহাদ হাকিম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

KMC Firhad Hakim Mayor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE