Advertisement
E-Paper

SSC recruitment Scam: ‘আমাদের আসন বিক্রির প্রমাণ এই টাকা’, বলছেন চাকরিপ্রার্থীরা

উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীরা জানাচ্ছেন, তাঁদের চাকরির নিয়োগ নিয়ে দু’বার ইন্টারভিউ দেওয়া হলেও এখনও চাকরি হয়নি।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২২ ০৭:১৭
অটল: ৫০০ দিনে পা দেওয়ার পথে আন্দোলন। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পরে তাঁদের দাবি আরও জোরালো হল বলেই মনে করছেন এসএসসি-র চাকরিপ্রার্থীরা। শনিবার, ধর্মতলায়।

অটল: ৫০০ দিনে পা দেওয়ার পথে আন্দোলন। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পরে তাঁদের দাবি আরও জোরালো হল বলেই মনে করছেন এসএসসি-র চাকরিপ্রার্থীরা। শনিবার, ধর্মতলায়। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

চাকরির দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে রাস্তাতেই কেটেছে ৪৯৬ দিন। নিয়োগ-দুর্নীতি নিয়ে বিকাশ ভবনে গিয়ে শিক্ষা সচিব থেকে স্কুল সার্ভিস কমিশনের আধিকারিক, এমনকি খোদ শিক্ষামন্ত্রীর বাড়িতে গিয়েও অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরা। তবু সুরাহা হয়নি। চাকরিও হয়নি। শনিবার প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে সাড়ে ২২ কোটি টাকা উদ্ধারের পরে তাই এসএসসি-র চাকরিপ্রার্থীরা বলছেন, ‘‘আমাদের ন্যায্য আসনগুলো টাকার বিনিময়ে বিক্রি হয়েছে। এই টাকা তারই প্রমাণ।’’

টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ বহু দিন ধরেই করছিলেন প্রাথমিক থেকে শুরু করে উচ্চ প্রাথমিক, নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীরা। চাকরির দাবিতে এসএসসি-র নবম থেকে দ্বাদশের মেধা তালিকার অন্তর্ভুক্ত, ওয়েটিং লিস্টে থাকা চাকরিপ্রার্থীরা দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন চালাচ্ছেন। তাই অর্পিতার ফ্ল্যাটে ‘যখের ধন’ আদতে তাঁদের দুর্নীতির অভিযোগকেই মান্যতা দিচ্ছে বলে মনে করছেন তাঁরা। নবম থেকে দ্বাদশের মেধা তালিকাভুক্ত বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী মঞ্চের ইলিয়াস বিশ্বাস বলেন, ‘‘এটা হিমশৈলের চূড়া মাত্র। আরও টাকা আছে। সেগুলো উদ্ধার করা হোক।’’

ইলিয়াস জানান, এর আগে বহু বার বিকাশ ভবনে গিয়ে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থের সঙ্গে দেখা করে দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তাঁরা। এমনকি পৌঁছে গিয়েছিলেন পার্থের নাকতলার বাড়িতেও। সেখানে দুর্নীতির প্রামাণ্য নথি জমা দেন। কিন্তু তাতেও কাজের কাজ হয়নি। সেই নিয়োগ-দুর্নীতির অভিযোগেই এ দিন পার্থের গ্রেফতারির পরে ওই চাকরিপ্রাথীরা প্রশ্ন তুলছেন, আর কবে চাকরি পাবেন তাঁরা? এ ভাবে তো চাকরির বয়সও পেরিয়ে যাচ্ছে তাঁদের।

উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীরা জানাচ্ছেন, তাঁদের চাকরির নিয়োগ নিয়ে দু’বার ইন্টারভিউ দেওয়া হলেও এখনও চাকরি হয়নি। নিয়োগ সংক্রান্ত অস্বচ্ছতার কারণে প্রথম বারের মেধা তালিকা বাতিল হয়। না-হলে হয়তো এত দিনে নিয়োগ হয়ে যেত। পশ্চিমবঙ্গ আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থী মঞ্চের সহ-সভাপতি সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘‘২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি টেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়ে ২০১৫ সালের অগস্টে টেট হয়। ২০১৬ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ফল প্রকাশ হয়। এর পরে ১৪৩৩৯টি শূন্যপদ নিয়োগের পুরো মেধা তালিকা বাতিল হয় ২০২০ সালের ১১ ডিসেম্বর। পরে ২০২১ সালের জুলাইয়ে ইন্টারভিউ হলেও আইনি জটে এখনও নিয়োগ থমকে।’’ তাঁর মতে, ২০২০ সালের ডিসেম্বরে যে মেধা তালিকা বাতিল হয়েছিল, তার কারণ হিসাবে তাতে অপ্রশিক্ষিত প্রার্থীদের নাম ছিল বলে অভিযোগ। অসংখ্য প্রার্থীর ক্ষেত্রে ২০১৬ সালে প্রকাশিত টেটের স্কোর বাড়িয়ে তাঁদের নাম মেধা তালিকায় ঢোকানো হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। সুশান্ত বলেন, ‘‘এগুলো নিয়ে মামলা হয়। তখন হাই কোর্ট ৫২টি শুনানির শেষে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ওই মেধা তালিকা ও নিয়োগ প্রক্রিয়া খারিজ করে দেয়।’’ উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, টাকার বিনিময়েই সেই মেধা তালিকায় নামের হেরফের ঘটেছিল।

একই ভাবে টাকার বিনিময়ে প্রাথমিকেও চাকরি দেওয়ার অভিযোগ করছেন চাকরিপ্রার্থীরা। ‘২০১৪ প্রাইমারি টেট পাস ট্রেন্ড নট ইনক্লুডেড ক্যান্ডিডেট একতা মঞ্চ’-এর সম্পাদক অচিন্ত্য সামন্ত বলেন, ‘‘২০১৪ সালে চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়ে ২০১৫ সালে লিখিত পরীক্ষা হয়। ১৬৫০০টি শূন্যপদে ধাপে ধাপে নিয়োগের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সেই নিয়োগ পর্বেই চূড়ান্ত অনিয়ম হয়েছে। অনিয়ম প্রমাণিত হওয়ায় আদালতের নির্দেশে চাকরিও গিয়েছে ২৬৯ জনের। টাকার বিনিময়ে যে চাকরি হয়েছে, তা এই সাড়ে ২২ কোটি টাকা উদ্ধারের ঘটনাতেই প্রমাণিত হল।’’

SSC recruitment scam Protest partha chatterjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy