Advertisement
E-Paper

মূষিক হটাতে বিশেষজ্ঞ সংস্থার দ্বারস্থ রাজ্য

মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয়ের কারণ ‘টেকনিক্যাল’ হলেও প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, ইঁদুরের উৎপাতেই ক্রমশ অবস্থা শোচনীয় হচ্ছে শহরের একাধিক সেতু ও উড়ালপুলের

দেবাশিস ঘড়াই

শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৫০
বিপদ: বেলগাছিয়া সেতুর তলায় আস্তানা গেড়েছে ইঁদুরের দল। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

বিপদ: বেলগাছিয়া সেতুর তলায় আস্তানা গেড়েছে ইঁদুরের দল। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

উড়ালপুল ও সেতুর নীচেই ওদের বাসা। আনাজের বাজার আর আবর্জনার স্তূপে খাবার খুঁজতে সেতু-উড়ালপুলের মাটির নীচে বিশাল সাম্রাজ্য বিস্তার তাদের। আর সেই মূষিক-বাহিনীর দাপটেই ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু দশা শহরের একের পর এক সেতু-উড়ালপুলের। মাঝেরহাটে সেতুভঙ্গের পরে এ বার সেই ইঁদুরের আক্রমণ রুখতেই কোমর বেঁধে ময়দানে নামতে চাইছে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। এ নিয়ে ইতিমধ্যেই ইঁদুর তাড়ানোর বিশেষজ্ঞ সংস্থার পরামর্শও নেওয়া হয়েছে। মূষিক হটাতে ওই ‘হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালা’র উপরেই ভরসা রাখতে চাইছে সরকার।

মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয়ের কারণ ‘টেকনিক্যাল’ হলেও প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, ইঁদুরের উৎপাতেই ক্রমশ অবস্থা শোচনীয় হচ্ছে শহরের একাধিক সেতু ও উড়ালপুলের। এর কারণ মূলত দু’টি— সেতু-উড়ালপুলের নীচে ভ্যাট এবং কাঁচা বাজার। সেতু ও উড়ালপুলের আশপাশে জমা আবর্জনা থেকে খাদ্য খুঁজতে মাটিতে গর্ত খুঁড়ে হানা দেয় মূষিক-বাহিনী। দ্বিতীয়ত, অনেক সেতুর নীচে নিয়মিত আনাজের বাজার বসার কারণে সেখানেও ইঁদুরের যাতায়াত বেড়ে যায়। ফলে ইঁদুরের গর্তের ‘সৌজন্যে’ উড়ালপুল ও সেতুর মাটি ধীরে ধীরে আলগা হতে থাকে। পরে যা সেতু ও উড়ালপুলের স্থায়িত্ব নিয়েই সঙ্কট তৈরি করে।

মূষিক-বাহিনীর দৌরাত্ম্যে উড়ালপুল ও সেতুর ভিতের ক্ষতি অবশ্য নতুন কোনও ব্যাপার নয়। তবে পোস্তা এবং মাঝেরহাট— দু’টি সেতুভঙ্গের পরে এ বার সেতু-স্বাস্থ্যে বিশেষ ভাবে নজর দিতে চাইছে সরকার। ফলে অবধারিত ভাবে এসে পড়ছে ইঁদুর-প্রসঙ্গ। দফতর সূত্রের খবর, কী ভাবে এই মূষিককুলকে তাড়ানো সম্ভব, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞ সংস্থার সঙ্গে একাধিকবার কথা হয়েছে দফতরের আধিকারিকদের। তাঁদের একাংশ জানিয়েছেন, ইঁদুর তাড়াতে সব জায়গায় একই পদ্ধতি প্রয়োগ করা সম্ভব হবে না। সে ক্ষেত্রে প্রতি ক্ষেত্রে ‘অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা’ নীতি প্রয়োগ করে ইঁদুর বিতারণের পথে এগোতে হবে। পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এ বিষয়ে বলেন, ‘‘শহরের অনেক উড়ালপুল ও সেতুর ক্ষেত্রে ইঁদুর সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ সংস্থার সঙ্গে ইতিমধ্যেই কথা বলেছি। যে সমস্ত উড়ালপুল বা ব্রিজের তলায় ভ্যাট রয়েছে, যেমন উল্টোডাঙা উড়ালপুল, আর জি কর হাসপাতালের কাছে সেতু, সেগুলির ক্ষেত্রেই এই সমস্যা দেখা যাচ্ছে। এ সমস্ত ক্ষেত্রে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।’’

এর আগে ইঁদুরের আক্রমণে ঢাকুরিয়া সেতু বসে যাচ্ছে বলে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। সেতুর গায়ে একাধিক গর্তও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেই সেতুর মেরামতি করা হয়েছে। যদিও সে কাজ এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। নগরোন্নয়ন দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘ঢাকুরিয়া সেতুর অবস্থা খুবই খারাপ ছিল ইঁদুরের কারণে। কিছুটা কাজ আমরা ওখানে করেছি। গর্তগুলি বুজিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেতুর উপরেও কাজ করা হয়েছে। কিন্তু আরও কাজ বাকি রয়েছে। না হলে ইঁদুর ঠেকানো যাবে না।’’ তবে ঢাকুরিয়া সেতুতে যে অংশটুকু রেলের অধীনে, তার মেরামতির জন্য রেলের কাছে আবেদন করা হলেও এখনও সাড়া মেলেনি বলেই দফতর সূত্রে দাবি। যদিও রেলের এক কর্তা জানিয়েছেন, আবেদনের বিষয়টি তাঁদের জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।

Rats Specialist Flyover State Government
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy