Advertisement
০৮ মে ২০২৪
SSKM

Cochlea transplant: শিশুদের অন্তঃকর্ণ প্রতিস্থাপনে যন্ত্র কিনবে রাজ্যও

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, প্রতি বছর দেশে অন্তত এক লক্ষ শিশু বধিরতা নিয়ে জন্মায়। কিন্তু কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বছরে মাত্র এক হাজার যন্ত্র মেলে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “মা ডাক শোনা একটা বড় সম্পদ। কিন্তু শ্রবণক্ষমতা না থাকলে বাকশক্তিও থাকবে না। শিশুদের সেই সমস্যা দূর করতে যা প্রয়োজন, সবই করা হবে।”

একসঙ্গে: বিশ্ব শ্রবণ দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে অন্তঃকর্ণ প্রতিস্থাপিত হওয়া কচিকাঁচারা। বৃহস্পতিবার, এসকেএমে। নিজস্ব চিত্র

একসঙ্গে: বিশ্ব শ্রবণ দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে অন্তঃকর্ণ প্রতিস্থাপিত হওয়া কচিকাঁচারা। বৃহস্পতিবার, এসকেএমে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২২ ০৭:৩৪
Share: Save:

পিজি-তে অপেক্ষায় প্রায় ৮৫টি শিশু। চার মাস কেটে গেলেও কেন্দ্রীয় প্রকল্পে অন্তঃকর্ণের (ককলিয়া) প্রতিস্থাপন যন্ত্র মিলছে না। এ বার তাই রাজ্যের নিজস্ব প্রকল্পে প্রথম ধাপে ৫০০টি যন্ত্র কিনতে উদ্যোগী হয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।

বৃহস্পতিবার বিশ্ব শ্রবণ দিবসে পিজি-তে এক অনুষ্ঠানে এ কথা জানান স্বাস্থ্যকর্তা থেকে চিকিৎসকেরা। সেখানে অন্তঃকর্ণ প্রতিস্থাপন হওয়া প্রায় ৮৫টি শিশুকে নিয়ে হাজির ছিলেন তাদের বাবা-মায়েরা। জন্মবধির ওই শিশুরা গোলাপ তুলে দেয় চিকিৎসকদের হাতে। তাদের কবিতা-গান শুনে খুশি ডাক্তারেরাও। তাঁরা জানান, ওদের কাছে প্রতিটি দিন গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বছরে যন্ত্র মেলে ১৫-২০টি।

পিজি-র ইএনটি বিভাগের শিক্ষক-চিকিৎসক অরুণাভ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বাইরে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়ে আরও কয়েকটি যন্ত্র মিলত। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতরই এ বার যন্ত্র কিনছে। তাতে প্রয়োজন মতো প্রতিস্থাপন করা যাবে। সকলকে আর কেন্দ্রীয় প্রকল্পের জন্য অপেক্ষা করে থাকতে হবে না।”

২০১৫ থেকে ২০২২-এর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পিজি-তে ৮৯ জনের অন্তঃকর্ণ প্রতিস্থাপিত হয়েছে। প্রতিস্থাপনের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক অরিন্দম দাস জানাচ্ছেন, জন্মগত ভাবে বধির শিশুদের সমস্যা ধরা পড়ার পরেই প্রতিস্থাপন করা হয়, তেমন নয়। প্রথমে শ্রবণ-যন্ত্র দিয়ে তিন মাস পরীক্ষা করা হয়। ২০২১ থেকে ২০২২-এর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পিজি থেকে ১৫০টি শিশুকে ওই যন্ত্র দেওয়া হয়েছে। অরিন্দম বলেন, ‘‘৯৯ শতাংশ পরিবারের শ্রবণ-যন্ত্র কেনার সামর্থ্য থাকে না। কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে অন্তঃকর্ণ প্রতিস্থাপন তো দূর অস্ত্। তবে ১৫০-এর মধ্যে ৫০-৬০ জনের প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন পড়ে।’’

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, প্রতি বছর দেশে অন্তত এক লক্ষ শিশু বধিরতা নিয়ে জন্মায়। কিন্তু কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বছরে মাত্র এক হাজার যন্ত্র মেলে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “মা ডাক শোনা একটা বড় সম্পদ। কিন্তু শ্রবণক্ষমতা না থাকলে বাকশক্তিও থাকবে না। শিশুদের সেই সমস্যা দূর করতে যা প্রয়োজন, সবই করা হবে।”

জন্মের পরেই শিশুর শ্রবণক্ষমতা পরীক্ষা কতটা জরুরি, এ দিনও অরুণাভবাবুরা সেই বার্তা দেন। কারণ, পাঁচ বছরের মধ্যে ওই যন্ত্র
প্রতিস্থাপন করলে ফল ভাল হতে পারে। স্বাস্থ্য-অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘এই সমস্ত শিশুর ক্ষেত্রে দেরি করলে চলবে না। তাতে যন্ত্রের সুফল মিলতে যেমন সমস্যা হবে, তেমনই উন্নতিতেও ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তাই রাজ্যও এ বার চিন্তাভাবনা করেছে।’’ শিশুরা জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি করে। সঙ্গে গলা মেলান চিকিৎসক, অভিভাবকেরাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

SSKM West Bengal government
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE