Advertisement
E-Paper

বিজ্ঞান নিয়ে নয়া পদক্ষেপ

রাজ্যের স্কুলপড়ুয়াদের মধ্যে বিজ্ঞান চেতনায় ভাটা পড়েছে বলে ‌সরব হয়েছিলেন বিজ্ঞানী এবং গবেষকরা। এমনকি উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। বিজ্ঞান নিয়ে চেতনা বাড়াতে এ বার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৫৪টি দ্বীপে আসছেন বিজ্ঞানী এবং গবেষকেরা।

সুপ্রিয় তরফদার

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৮ ০৩:২২

রাজ্যের স্কুলপড়ুয়াদের মধ্যে বিজ্ঞান চেতনায় ভাটা পড়েছে বলে ‌সরব হয়েছিলেন বিজ্ঞানী এবং গবেষকরা। এমনকি উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। বিজ্ঞান নিয়ে চেতনা বাড়াতে এ বার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৫৪টি দ্বীপে আসছেন বিজ্ঞানী এবং গবেষকেরা।

কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি মন্ত্রকের সহায়তায় একটি বেসরকারি বিজ্ঞান স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এই কাজে উদ্যোগী হয়েছে। নতুন এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অভিনব পদ্ধতিতে বিজ্ঞান শিক্ষা’। চলতি বছরের নভেম্বর থেকে এই প্রকল্প চালু হতে পারে। যদিও এই প্রকল্পের কথা শুনেই রাজ্যের অন্যত্র এই প্রকল্প চালু করতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন জেলার স্কুল পরিদর্শকেরাও।

বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, এ কাজে উদ্যোগী হয়েছে এক বিজ্ঞান স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে অভিজিৎ বর্ধন জানান, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৫৪টি দ্বীপে প্রায় ৩০০টি সরকার-পোষিত স্কুল রয়েছে। সেগুলিতে বিজ্ঞানের প্রসার যথাযথ ভাবে হয় না, কারণ বহু স্কুলে
বিজ্ঞানের শিক্ষক নেই। বিজ্ঞান চেতনার অভাব অভিভাবকদের একটা বড় অংশেও। ইন্টারনেটের মাধ্যমে অবস্থার উন্নতি ঘটাতে চাইলেও খারাপ নেটওয়ার্কের জন্য তা সম্ভব হয় না। সে কারণে ওই সংস্থা উদ্যোগী হতে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে রাজ্য সরকার।

বিকাশ ভবনের এক কর্তা জানান, প্রাথমিক ভাবে ২০টি স্কুলকে পাইলট প্রোজেক্ট হিসেবে বেছে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রোজেক্ট চালু হবে চলতি বছরের নভেম্বরে, চলবে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, একটি বড় ভেসেল-এ থাকবেন বিজ্ঞানী, গবেষক, আয়োজক সংস্থা ও স্কুল শিক্ষা দফতরের প্রতিনিধিরা। সুন্দরবন সংলগ্ন অঞ্চলের ৫৪টি দ্বীপের ২০টি স্কুলকে বেছে নেওয়া হবে। এক-একটি দ্বীপে পৌঁছবে দলটি। দ্বীপের একটি প্রধান স্কুল বেছে নিয়ে আশপাশের কয়েকটি স্কুলের পড়ুয়াদের সেখানে নিয়ে আসা হবে। সেখানেই বিজ্ঞানের উপযোগিতা ও পাঠ্যক্রমে থাকা বিজ্ঞানের বিষয়গুলি হাতে-কলমে পড়ুয়াদের শেখানো হবে। প্রতি স্কুলে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ক্লাস চলবে। শুধুমাত্র পড়ুয়াদের নয়, সাধারণ মানুষ ও অভিভাবকদের নিয়েও অনুষ্ঠিত হবে কর্মশালা। ওই তিন-চার মাস এ ভাবেই নদীবক্ষে এক দ্বীপ থেকে অন্য দ্বীপে ভেসে বেড়াবেন বিজ্ঞানীরা।

ইতিমধ্যে বিভিন্ন জেলার বেশ কয়েক জন স্কুল পরিদর্শক বিকাশ ভবনে এই প্রকল্পের জন্য আবেদন জানানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

কী কী শেখানো হবে?

পাঠ্যক্রমে থাকা বিজ্ঞানের বিষয়গুলির হাতে-কলমে প্রয়োগ দেখানো হবে। রাতে আকাশ দর্শন, জল, মাটি ও বায়ু পরীক্ষা এবং পরিমাপ পদ্ধতি, পরিবেশ দূষণ সম্পর্কে সম্যক ধারণা, মৎস্যজীবীদের সঙ্গে ও সুন্দরবন সম্পর্কে পরিচিতি বৃদ্ধির জন্য কর্মশালা হবে।

অভিজিৎবাবু বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি, সুন্দরবন ও পরিবেশ দফতরের থেকেও সাহায্য চাওয়া হয়েছে।’’ অভিজিৎবাবুর কথায়, রাজ্যের সর্বত্রই স্কুলপড়ুয়াদের মধ্যে বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ কমে যাওয়াটা খুবই উদ্বেগের। বিশেষ করে রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে সচেতনতা খুবই কম। তাই সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকাগুলোকে বেছে নেওয়া হয়েছে। স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রী যেখানে বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ হ্রাসে উদ্বিগ্ন, সেখানে এই পদক্ষেপ ইতিবাচক বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সম্প্রতি কলকাতায় বিজ্ঞান বাঁচাতে পদযাত্রায় নেমেছিলেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা গবেষক এবং বিজ্ঞানীরা। তাঁরাও বিজ্ঞানের প্রতি বর্তমান প্রজন্মের অনাগ্রহ নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছিলেন। এই কাজে শিক্ষকদের বিশেষ করে উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন তাঁরা। তবে বিজ্ঞানীদের অন্য অংশ এখনও মনে করেন, পড়ুয়াদের বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ মোটেও কমেনি।

Science Students Scientists State Government Partha Chatterjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy