বছর ঘুরলেও পোস্তার বিবেকানন্দ উড়ালপুলের ভেঙে পড়ার ঘটনায় এখনও ঝুলেই রয়েছে বিচার পর্ব। ঠিক যে ভাবে ঝুলে রয়েছে অর্ধেক তৈরি হওয়া ওই উড়ালপুলের ভাগ্যও। অভিযুক্ত কয়েক জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট পেশ করা হলেও চার্জ গঠন হয়নি এক বছর পরেও। পোস্তার নির্মীয়মাণ উড়ালপুল ভেঙে পড়ার ঘটনার এক বছর হচ্ছে আজ, শুক্রবার। ওই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ২৪ জনের। এলাকাবাসীদের অভিযোগ, তদন্তকারী পুলিশের গড়িমসিতেই ওই ঘটনার বিচারপর্ব শুরু হতে দেরি হচ্ছে। জামিনও পেয়ে গিয়েছেন ধৃত সব অভিযুক্তই।
লালবাজার সূত্রের খবর, উড়ালপুল ভেঙে পড়ার ঘটনায় ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হলেও বর্তমানে তাঁরা সকলেই জামিনে মুক্ত রয়েছেন। নির্মাণকারী সংস্থার ১০ জন-সহ দুই কেএমডিএ কর্তার বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিলেও ঘটনার এক বছর পরেও বাকি চার অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিটই জমা দিতে পারেননি তদন্তকারীরা। অভিযোগ উঠেছে, পুলিশের গাফিলতিতেই জামিন পেয়ে গিয়েছেন ধৃতেরা।
কলকাতা পুলিশের এক তদন্তকারী অফিসার জানিয়েছেন, ওই ঘটনায় তাঁদের হাতে এখনও আসেনি বেশ কিছু রিপোর্ট। সেগুলি হাতে এলেই আদালতে তা জমা দেওয়া হবে। ওই ঘটনায় বিশেষ সরকারি আইনজীবী তমাল মুখোপাধ্যায় জানান, আগামী জুলাই মাসের ২৯ তারিখ ওই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক আছে। ওই দিনই তদন্ত শেষ করে চুড়ান্ত চার্জশিট পেশ করার চেষ্টা করবেন তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন: নয়াচরে পলি ফেলবে বন্দর
পুলিশ সূত্রের খবর, গত বছরের ৩১ মার্চ দুপুর ১২টা নাগাদ পোস্তার গণেশ টকিজের মোড়ের কাছে ভেঙে পড়ে ওই উড়ালপুলের একাংশ। ঘটনার পরেই পুলিশের পক্ষ থেকে পোস্তা থানায় খুনের অভিযোগ মামলা দায়ের হয় নির্মাণকারী সংস্থা আইভিআরসিএলের বিরুদ্ধে। তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল উড়ালপুল তৈরির বরাতপ্রাপ্ত সংস্থা আইভিআরসিএলের ১০ কর্তাকে গ্রেফতার করে। ঘটনার তিন মাসের মাথায় ওই বিশেষ তদন্তকারীদলের পক্ষ থেকে ২৬০০ পাতার চার্জশিট পেশ করে ওই কর্তাদের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুন এবং সম্পত্তি নষ্ট করার অভিযোগ আনা হয়। প্রথম দফায় ওই উড়ালপুলের নির্মাণের তদারকির দায়িত্বে থাকা কেএমডি-এর কর্তাদের ছাড় দেওয়া হলে পরে ওই সংস্থার দুই ইঞ্জিনিয়ারকে গ্রেফতার করে পরে তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতে অতিরিক্ত চার্জশিট দেয় লালবাজার। পরে গ্রেফতার হন বাকি চারজন। যারা সকলেই আইভিআরসিএলের কর্তা।
অন্য দিকে, এখনও বন্ধ রয়েছে ওই উড়ালপুলের নীচ দিয়ে যান চলাচল। স্থানীয় বাসিন্দাদের
যানবাহন ছাড়া কোন গাড়ির প্রবেশাধিকার নেই সেখানে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই উড়ালপুল নিয়ে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি রিপোর্ট
ৎদিলেই তবেই ঠিক হবে উড়ালপুলের ভাগ্য। উড়ালপুল নিয়ে সরকারি উদাসীনতায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীরা ‘ফ্লাইওভার হটাও অভিযান সমিতি’ তৈরি করেছেন। আজ, শুক্রবার ওই উড়ালপুল ভেঙে ফেলার দাবিতে স্থানীয় বাসিন্দাদের মিছিল করার কথা ওই এলাকায়।