Advertisement
E-Paper

Mid-day Meal: ছুটিতে ফের বাদ মিড-ডে মিল, মন খারাপ বহু পড়ুয়ার

মঙ্গলবার সকাল থেকেই মুখ ভার ছিল আকাশের, সঙ্গে দোসর বৃষ্টি। তবে তার চেয়েও বেশি মুখ ভার অনেক পড়ুয়ার।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২২ ০৬:১৭

প্রতীকী ছবি।

করোনার কারণে দীর্ঘ দু’বছর বন্ধ ছিল স্কুলের দরজা। সে সময়ে পাতে পড়ত না রান্না করা মিড-ডে মিল। বদলে বাড়িতে পৌঁছত চাল, ডাল। সবে গত ফেব্রুয়ারি মাসে স্কুল খোলার পরে ফের রান্না করা মিড-ডে মিল পাচ্ছিল পড়ুয়ারা। স্কুলে এসে পাতে পড়ছিল সেদ্ধ ডিম, ভাত-ডাল। কিন্তু স্কুলে গরমের ছুটি এ বার টানা ৪৫ দিন। অর্থাৎ, এত দিন ধরে ফের পড়ুয়াদের পাতে পড়বে না মিড-ডে মিল।

মঙ্গলবার সকাল থেকেই মুখ ভার ছিল আকাশের, সঙ্গে দোসর বৃষ্টি। তবে তার চেয়েও বেশি মুখ ভার অনেক পড়ুয়ার। যে ভাবে এ দিন আকাশ কালো করে সকাল থেকে বৃষ্টি নেমেছে, তাতে শিক্ষক, পড়ুয়া থেকে অভিভাবকদের অনেকেরই মনে হচ্ছে যে, গরমের ছুটি আর কয়েক দিন পরে দিলেও চলত। অন্তত প্রথম সামগ্রিক মূল্যায়নের পরে গরমের ছুটি দেওয়া হলে পড়ুয়ারা কিছুটা এগিয়ে থাকতে পারত।

২ মে থেকে ৪৫ দিনের দীর্ঘ গরমের ছুটির কি সত্যিই দরকার ছিল? এই নিয়ে বিতর্ক কিন্তু থামছে না। এই দীর্ঘ ছুটির প্রতিবাদ করে বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষাসচিবের কাছে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি করা হয়। কিন্তু সে ব্যাপারে সরকারি তরফে কোনও রকম সাড়া না মেলায় সোমবার সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হান্ডা কলকাতা হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন। শুধু তা-ই নয়, সোমবার থেকে যেখানে ছুটি পড়ার কথা ছিল, সেখানে জেলার কিছু স্কুলে প্রথম সামগ্রিক মূল্যায়ন হয়। স্কুলের শিক্ষকেরাই জানাচ্ছেন, অভিভাবকদের চাপে পড়েই পরীক্ষা নেওয়ার এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।

কলকাতার বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত না নিলেও অনেকেই জানাচ্ছেন, দীর্ঘ গরমের ছুটি পড়ুয়াদের পক্ষে আরও বেশি কষ্টের। বেহালার কাছে ভোলানাথ হালদার স্মৃতি গভর্নমেন্ট স্পনসর্ড ফ্রি প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বর্ণালী সেনগুপ্ত জানান, তাঁদের স্কুলের বহু পড়ুয়াই আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবার থেকে আসে। তাদের অনেকেই ঘিঞ্জি এলাকায় টিনের চালের ঘরে থাকে। স্কুলের কিছু পড়ুয়া তাঁকে জানিয়েছে, গরমের দুপুরে ওই সব ঘরে থাকা যায় না। ছোট্ট ঘরে পাখা চললেও সেই গরম হাওয়া সহ্য করতে পারে না তারা। কিন্তু স্কুলে ততটা গরম লাগে না তাদের। বর্ণালী বলেন, “মর্নিং স্কুল যখন চলছিল, তখন তো সারা দুপুর ওদের ঘরে থাকতে হয়েছে। পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রের মুখে দেখলাম ঘামাচি হয়েছে। সে বলল, গরমে ঘরে থাকতে পারছি না, ঘামাচি হয়ে যাচ্ছে। এর থেকে স্কুল ভাল।”

শিক্ষকদের একাংশের মতে, স্কুলের সময়ের রদবদল করে যদি এমন করা যায় যে, পড়ুয়ারা সকাল ১০টার মধ্যে স্কুলে এসে বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ বাড়ি ফেরে, তা হলে চড়া রোদটা এড়ানো যায়। সে ক্ষেত্রে গরমের ছুটির মেয়াদ না বাড়িয়ে বরং স্কুলে ক্লাসের সময়সীমা বাড়ানো যেতে পারত। স্কুলের বড় বড় ক্লাসরুম, বড় জানলা, উঁচু সিলিং, পাখার হাওয়া থাকায় পড়ুয়াদের গরমের কষ্টটাও অনেকাংশে লাঘব হত। মিত্র ইনস্টিটিউশন, ভবানীপুর শাখার প্রধান শিক্ষক রাজা দে-র মতে, “অনেক পড়ুয়াই বলেছে, তাদের টিনের চালের ঘর গরমের দুপুরে ফার্নেস হয়ে থাকে। তার বদলে স্কুলের পুরনো দিনের ভবন, ২০ ইঞ্চি পুরু দেওয়ালের ঘর হওয়ায় সেখানে গরমের আঁচ অনেক কম লাগে। শিক্ষকদের শুধু দেখতে হত, গরমের ঠা ঠা রোদে স্কুলের মাঠে যেন পড়ুয়ারা খেলাধুলো না করে।” যোধপুর পার্ক বয়েজ়ের প্রধান শিক্ষক অমিত সেন মজুমদারের মতে, আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলেছিল, সোমবার থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি সপ্তাহে স্কুল চালু রাখলেই প্রথম সামগ্রিক মূল্যায়ন সব স্কুল করে নিতে পারত। সেই সঙ্গে কিছু দিন মিড ডে মিলের খাবারও পাতে পড়ত পড়ুয়াদের।

mid-day meal Kolkata
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy