Advertisement
E-Paper

দোহাই! থাকতে দিন হিন্দু হস্টেলে

রাজারহাটের হস্টেল এবং প্রেসিডেন্সি ক্যাম্পাসের মধ্যে যাতায়াতের জন্য বাসের বন্দোবস্ত আছে। কিন্তু সেই বাস চলে নির্দিষ্ট সময়ে। বেলা ১টায় ক্লাস শেষ হয়ে গেলে হস্টেলে ফেরার জন্য বিকেল ৪টের বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এ ভাবে সময়ের অপচয় হতে থাকায় ছাত্রজীবনের সোনালি মুহূর্তগুলো ক্রমশই ফিকে হয়ে যাচ্ছে বলে জানালেন জয়গোপাল। স্নাতকোত্তরের ছাত্র সম্রাট মণ্ডলের ক্ষোভ, ‘‘ছাত্রজীবনের শেষ পর্বে এসেও প্রেসিডেন্সির ছাত্রসংস্কৃতি উপভোগই করতে পারলাম না!’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৩০
আন্দোলন: হিন্দু হস্টেলের দাবিতে বিছানা নিয়ে বিক্ষোভ প্রেসিডেন্সির পড়ুয়াদের। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।

আন্দোলন: হিন্দু হস্টেলের দাবিতে বিছানা নিয়ে বিক্ষোভ প্রেসিডেন্সির পড়ুয়াদের। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।

পানীয় জল বা খাওয়ার ব্যবস্থা কয়েক সপ্তাহ পরে হলেও অসুবিধা নেই। আপাতত হিন্দু হস্টেলে থাকতে দিয়ে শুধু তাঁদের ‘ছাত্রজীবন’ রক্ষা করুন প্রেসিডেন্সি-কর্তৃপক্ষ। রবিবার এমনই কাতর আর্জি জানালেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশ। রবিবার ক্যাম্পাসে এক কনভেনশনে যোগ দিয়ে পড়ুয়াদের দাবি সমর্থন করেন পবিত্র সরকার। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া অবস্থান এ দিনও চলে।

স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ইতিহাসের ছাত্র জয়গোপাল পাল জানান, রাজারহাটের যে-অস্থায়ী হস্টেলে তাঁদের থাকতে দেওয়া হয়েছে, সেটা ছাত্রজীবন নষ্ট করে দিচ্ছে। হিন্দু হস্টেলে খেলার মাঠ আছে। সকলে একসঙ্গে মিলেমিশে থাকার ব্যবস্থা আছে। কিন্তু রাজারহাটের হস্টেলে তাঁরা নিছকই আবাসিক। কারও সঙ্গে সম্পর্ক নেই। পানীয় জল থাকে না। রাতে এক বার খাবার দেয়, বাকিটা অনলাইনে কিনতে হয়। আশেপাশে কোনও ওষুধের দোকান নেই। সেই হস্টেল এবং প্রেসিডেন্সির মধ্যে যাতায়াতে লেগে যায় প্রায় তিন ঘণ্টা।

রাজারহাটের হস্টেল এবং প্রেসিডেন্সি ক্যাম্পাসের মধ্যে যাতায়াতের জন্য বাসের বন্দোবস্ত আছে। কিন্তু সেই বাস চলে নির্দিষ্ট সময়ে। বেলা ১টায় ক্লাস শেষ হয়ে গেলে হস্টেলে ফেরার জন্য বিকেল ৪টের বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এ ভাবে সময়ের অপচয় হতে থাকায় ছাত্রজীবনের সোনালি মুহূর্তগুলো ক্রমশই ফিকে হয়ে যাচ্ছে বলে জানালেন জয়গোপাল। স্নাতকোত্তরের ছাত্র সম্রাট মণ্ডলের ক্ষোভ, ‘‘ছাত্রজীবনের শেষ পর্বে এসেও প্রেসিডেন্সির ছাত্রসংস্কৃতি উপভোগই করতে পারলাম না!’’

সুরাহার সুলুকসন্ধানও দিচ্ছেন পড়ুয়ারা। জয়গোপাল বলেন, ‘‘হিন্দু হস্টেল কিছুটা তো সারানো হয়েছে। সেখানে আমাদের থাকতে দেওয়া হোক। পানীয় জল ও খাবারের ব্যবস্থা বাইরে থেকে করে নেব। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কর্তৃপক্ষ সেটা করে দিন। অন্তত সময়টা বাঁচবে। উপভোগ করতে পারব ছাত্রজীবনটাকেও।’’

২০১৫ সালের জুলাইয়ে সংস্কারের জন্য হিন্দু হস্টেল বন্ধ করে দেওয়া হয়। কথা ছিল, ১১ মাসের মধ্যে সংস্কার শেষ করে পড়ুয়াদের ফিরিয়ে আনা হবে ওই ছাত্রাবাসে। কিন্তু তিন বছরেও হস্টেল চালু হয়নি। পরে সিদ্ধান্ত হয়, ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে হস্টেলে ছাত্রদের থাকার বন্দোবস্ত করা হবে। কিন্তু তা হয়নি। সম্প্রতি ১৪ জনের একটি কমিটি গঠন করেছেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু হস্টেল ফিরে পেতে মরিয়া পড়ুয়ারা। শনিবার রাজারহাটের হস্টেল থেকে বেশ কিছু আবাসিক বিছানাবালিশ ও অন্যান্য জিনিসপত্র নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থানে শামিল হয়েছেন।

প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ তথা হিন্দু হস্টেলের পূর্বতন আবাসিক অমল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘উপযুক্ত পরিস্থিতি না-পাওয়ায় পড়ুয়াদের তারুণ্য বিকশিতই হতে পারল না। পূর্ত দফতরের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের সমন্বয় আরও বাড়ানো উচিত।’’ তিনি জানান, তাঁদের সময়ে মাত্র সাত মাসে সল্টলেকে ছাত্রী নিবাস তৈরি হয়েছিল। কিন্তু হিন্দু হস্টেলের সংস্কার তিন বছরেও শেষ হল না! প্রাক্তন ছাত্রনেতা অসীম চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হিন্দু হস্টেল ব্যবহার করতে না-পারায় পড়ুয়ারা প্রেসিডেন্সির স্বাভাবিক পরিবেশটাই পেল না। এটা খুবই দুর্ভাগ্যের।’’

এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে এ দিন উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি বারবার ফোন কেটে দেন। জবাব দেননি মেসেজেরও।

Student Hindu Hostel Presidency University
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy