তাপপ্রবাহ বাড়ছে, বাড়ছে শৈত্যপ্রবাহ। আবার গত ৬০-৭০ বছরের তুলনায় সাম্প্রতিক সময়ে মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণে খুব একটা হেরফের না হলেও বৃষ্টিদিনের সংখ্যা ক্রমশ কমে গিয়েছে। যার ফলে অল্প দিনে এত পরিমাণ বৃষ্টি হচ্ছে, যা তৈরি করছে বন্যা পরিস্থিতি। বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এমন অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে বিশ্ব জুড়েই। পরিবেশের খামখেয়ালিপনার এমন হাজারো বিষয় আজ উঠে এল ‘সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট’ (সিএসই) আয়োজিত জাতীয় স্তরের এক আলোচনাসভায়। যেখানে অন্য রাজ্যের পাশাপাশি উঠে এল পশ্চিমবঙ্গের কথাও। দেশের অন্য শহরের পাশাপাশি কী ভাবে খামখেয়ালি হয়েছে কলকাতার আবহাওয়া, ধরা পড়ল সেই তথ্যও।
এ দিন সিএসই-র তরফে ‘স্টেট অব ইন্ডিয়াস এনভায়রনমেন্ট’ রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়, যেখানে সারা দেশে বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন কী ভাবে প্রভাব ফেলছে, তার বিশ্লেষণ করা হয়েছে। উত্তর ভারতে গত বছরের শুরুতেই, অর্থাৎ জানুয়ারিতে শৈত্যপ্রবাহ হয়েছে, পরের দিকে রাজস্থান, হিমাচল প্রদেশ, হরিয়ানা-সহ বিভিন্ন রাজ্যে তাপপ্রবাহ হয়েছে, আবার বর্ষায় ১৮টি রাজ্যে তৈরি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। শেষের দিকে, অর্থাৎ নভেম্বরের শুরুতেই আবার হিমাচল প্রদেশ ও জম্মু-কাশ্মীরে বরফ পড়েছে। ২০০৯ সালের পরে জম্মু-কাশ্মীরে নভেম্বর মাসে বরফ পড়ার ঘটনা গত বছরেই ঘটেছে! সব মিলিয়ে রিপোর্টে ২০১৮ সালকে ‘ইয়ার অব এক্সট্রিমস’ বলা হয়েছে। পরিবেশবিদদের একাংশ জানাচ্ছেন, চলতি বছরেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। সিএসই-র ডিরেক্টর-জেনারেল সুনীতা নারায়ণ বলেন, ‘‘এখনও সতর্ক না হলে আবহাওয়ার পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন সকলেই।’’
বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে আবার শীতকালের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও ঊর্ধ্বমুখী, জানাচ্ছেন কেন্দ্রীয় আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল কে জে রমেশ। তাঁর কথায়, ‘‘শীতকালে তাপমাত্রার ক্ষেত্রে নতুন পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে। সারা দেশেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রার হার ঊর্ধ্বমুখী।’’ যাকে আবহবিদেরা বলছেন, অস্বাভাবিক চরিত্রলক্ষণ! এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয় কলকাতাও।