Advertisement
E-Paper

মোবাইলের টানে মন্ত্রীও নস্যাৎ! কোপে অফিসার

ভিডিও কনফারেন্সে তখন উপস্থিত স্বয়ং রেলমন্ত্রী। রেলের আধিকারিকদের চোখ তখন কনফারেন্স রুমে থাকা মনিটরের স্ক্রিনে। আধিকারিকেরা এক মনে দেখছেন, আর নিজেদের ডায়েরিতে নোট নিচ্ছেন।

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৪৬
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

ভিডিও কনফারেন্সে তখন উপস্থিত স্বয়ং রেলমন্ত্রী। রেলের আধিকারিকদের চোখ তখন কনফারেন্স রুমে থাকা মনিটরের স্ক্রিনে। আধিকারিকেরা এক মনে দেখছেন, আর নিজেদের ডায়েরিতে নোট নিচ্ছেন। ওই সময়ে আচমকাই মনিটরে ভেসে উঠল, এক জন আধিকারিক মন্ত্রীর বক্তব্য না শুনে নিজের স্মার্ট ফোন নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করছেন। মনিটরে ওই ছবির দিকে রেলমন্ত্রীর চোখ যেতেই তিনি বক্তব্য থামিয়ে বলে ওঠেন, ‘আমার মনে হয়, মেট্রোর আধিকারিক অন্য কোনও কাজে ব্যস্ত। যে আধিকারিকের মাত্র দশ মিনিট নিজের দফতরের মন্ত্রীর বক্তব্য শোনারও সময় নেই, তিনি জনসংযোগের কাজ করবেন কী ভাবে?’

রেলমন্ত্রীর কনফারেন্স চলাকালীন মোবাইল নাড়াচাড়া করাই যে তাঁর কাল হবে, তা কে জানত! রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, যাত্রীদের সঙ্গে জনসংযোগ কী ভাবে আরও বাড়ানো যায় তার উপায় বাতলাতেই সোমবার রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু ওই ভিডিও কনফারেন্স করছিলেন। তখনই নিজের মোবাইল নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি
শুরু করেন মেট্রোর ওই আধিকারিক। এর পর সময় নষ্ট না করে রেলমন্ত্রী রেল বোর্ডের আধিকারিকদের
বলেন, ‘মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজারকে বলুন, ওই অফিসারকে জনসংযোগ দফতর থেকে সরিয়ে দিতে।’’ সেই মতো মেট্রোর জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছুটিতে যেতে বলা হয়। তাঁর
জায়গায় ওই পদে আনা হয়েছে মেট্রোরই অন্য এক অধিকারিককে।

এই ঘটনার পরে মন্ত্রী আর বেশিক্ষণ বৈঠকে থাকেননি। চেয়ার ছেড়ে উঠে যান। বাকি সময়টাতে বোর্ডের কর্তারাই আধিকারিকদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেন।

রেলকর্তারা বলছেন, গত কয়েক বছরে ধরে রেল বেশ কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। বিশেষত বিভিন্ন জায়গায় দুর্ঘটনা কোনও ভাবেই এড়ানো যাচ্ছে না। এতে রেলকর্তারা উদ্বিগ্ন। এমন এক পরিস্থিতিতে জনসংযোগ দফতরের যে বিরাট ভূমিকা রয়েছে, তা বোঝাতেই মন্ত্রী দিল্লি থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের ১৭ জোনাল রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিকদের বৈঠকে ডেকেছিলেন। সেখানেই এই বিপত্তি!

সোমবার সময় মতোই শুরু হয়েছিল ওই ভিডিও কনফারেন্স। গত দু’বছর রেল যে সব কাজ করেছে তা কী ভাবে জনসমক্ষে তুলে ধরতে হবে — সেটাই ব্যাখ্যা করছিলেন মন্ত্রী। রেল সূত্রের খবর, মেট্রো কর্তাকে নিয়ে মন্ত্রীর ওই প্রতিক্রিয়া দেখে রেলের কোনও কর্তাই তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেননি। বরং বৈঠক শেষ হতেই ইন্দ্রাণীদেবীকে পদ থেকে সরিয়ে তাঁকে এক মাসের ছুটিতে যাওয়ার নির্দেশ দেন কর্তারা।

এই ঘটনা নিয়ে ইন্দ্রাণীদেবী কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর ভুল হয়ে গিয়েছে। রেলের নির্দেশে সোমবার সন্ধ্যা থেকেই কলকাতা মেট্রোর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রত্যুষ ঘোষ মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিকের পদে কাজ শুরু করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সরকারি অফিসারদের বদলি হওয়াটা নিয়মের মধ্যেই পড়ে।’’

Suresh Prabhu
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy