‘মহানাগরিকতা’। ভাবী মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার, টাউন হলে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
দ্বিতীয় দফায় মেয়রের দায়িত্ব নেওয়ার আগেই পুরসভায় শোভন চট্টোপাধ্যায়ের নজরদারির পরিধি আরও বাড়ানো হল। আগে তার ঘরের সামনে দু’টি নজরবন্দি ক্যামেরা ছিল। বৃহস্পতিবার আরও একটি ক্যামেরা বসল। পুরসভা সূত্রের খবর, এত দিন একটা দিকে কোনও ক্যামেরা ছিল না। ফলে মেয়রের নজরের আড়ালে ছিল পুরসভার সচিব এবং কমিশনারের ঘরের দিকে যাওয়ার করিডরে বসার স্থান। সেখানে রয়েছে ডেপুটি মেয়রের ঘরও। অর্থাৎ, এ বার মেয়রের ঘরের চারপাশই নজরবন্দি করা হচ্ছে।
আজ, শুক্রবার টাউন হলে দ্বিতীয় বারের জন্য কলকাতার মেয়র হিসেবে শপথ নিচ্ছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। পুরভবনের বাইরে এমন অনুষ্ঠান আগে কখনও হয়নি বলে জানালেন পুরসভার একাধিক অফিসার। তা ছাড়া এ বার প্রথম মেয়রের শপথ অনুষ্ঠানে হাজির থাকছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। দেখতে ছোটখাটো প্রিয় ‘কানন’কে কলকাতার মহানাগরিক করার কথা ভোটের অনেক আগেই জানিয়ে রেখেছিলেন মমতা। তাই শপথের অনুষ্ঠানও নিজে উপস্থিত থেকেই সম্পন্ন করতে চান তিনি।
স্বভাবতই মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিত থাকার খবরে বাড়তি মাত্রা পেয়েছে টাউন হলে শপথের অনুষ্ঠান। টাউন হলের বাইরের সিঁড়িতে হবে মূল শপথ পর্ব। নীচের রাস্তার উপরে হাজির থাকবেন রাজ্যের মন্ত্রী, তৃণমূলের সাংসদ, বিধায়ক-সহ শহরের বিশিষ্ট জনেরা। অনুষ্ঠানের খুঁটিনাটি দেখতে গত কয়েক দিনে বার চারেক টাউন হলে গিয়েছেন শোভনবাবু নিজেই। কর্মসূচিতে যাতে কোনও খুঁত না থাকে, তার দিকে নিয়মিত নজর রেখে চলেছেন। মেয়র ছাড়া সেখানে শপথ নেবেন পুরসভার চেয়ারপার্সন মালা রায়। সেখানেও রেকর্ড। প্রথম কোনও মহিলা পুরসভার চেয়ারপার্সন হচ্ছেন। তাঁদের দু’জনকেই শপথ বাক্য পাঠ করাবেন পুর দফতর মনোনীত চেয়ারম্যান প্রোটেম তথা নব নির্বাচিত কাউন্সিলর বেহালার মানিক চট্টোপাধ্যায়। পুরসভা সূত্রের খবর, অনুষ্ঠান বেশি ক্ষণের নয়। তবে মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন বলে পুলিশ এবং প্রশাসন মহলে তৎপরতা তুঙ্গে।
চলছে সিসিটিভি বসানোর কাজ। বৃহস্পতিবার। — নিজস্ব চিত্র।
মেয়রের শপথ অনুষ্ঠানের পরেই পুরভবনে মেয়র পারিষদদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে। মুখ্যমন্ত্রী বুধবারই কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদদের নাম ঘোষণা করেছেন। শুক্রবার বিকেল তিনটেয় তাঁদের শপথ বাক্য পাঠ করাবেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। পুরসভা সূত্রের খবর, মেয়র পারিষদদের বসার ঘর ঝাড়পোছ চলছে। কয়েকটি ঘরের ভিতরে আসবাবও পাল্টানো হয়েছে। নতুন করে রং করা হয়েছে।
কে কোন ঘর পাবেন, বৃহস্পতিবার তা-ও ঠিক করে দিয়েছেন শোভনবাবু। তিনি জানান, আগের বোর্ডে রাজীব দেব যে ঘরে ছিলেন, এ বার তা দেওয়া হয়েছে তারক সিংহকে। আর তিনতলায় তারকবাবুর ঘরে যাচ্ছেন নতুন মেয়র পারিষদ আমিরুদ্দিন (ববি)। রাম পিয়ারি রামকে দেওয়া হচ্ছে আগের বোর্ডে বাম দলের মুখ্য সচেতকের জন্য বরাদ্দ থাকা ঘর। রতন দে পাচ্ছেন বিদায়ী মেয়র পারিষদ সুশান্ত ঘোষের ঘরটি। নতুন বোর্ডে স্থান না পাওয়া আর এক মেয়র পারিষদ মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে বসবেন অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়।
ঘর ঠিক হলেও কে কোন দফতর পাচ্ছেন, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এ বিষয়ে শোভনবাবুর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘‘এখনও ঠিক হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেই তা চূড়ান্ত করা হবে।’’ পুরসভা সূত্রের খবর, মেয়রের শপথ অনুষ্ঠানের পরেই দফতর বণ্টন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মেয়রের কথা হবে। দু’-এক দিনের মধ্যেই পুর-প্রশাসনের তরফে তা লিখিত ভাবে জানিয়ে দেওয়া হবে সকল মেয়র পারিষদকে।
বৃহস্পতিবারই পুরসভার ১৭ এবং ১৩৭ ওয়ার্ডে তৃণমূলকে হারিয়ে জেতা দুই নির্দল প্রার্থী মোহন গুপ্ত এবং রহমত আলম আনসারি তৃণমূলে যোগ দেন। তাঁদের যোগদানের খবর জানিয়ে শোভনবাবু বলেন, ‘‘ওঁদের আবেদনের ভিত্তিতেই দলে নেওয়া হল।’’ তিনি জানান, এর আগে ৮০ নম্বর ওয়ার্ডের আর এক কাউন্সিলর আনোয়ার দলে যোগ দিয়েছেন। তাই ১৪৪ ওয়ার্ডের মধ্যে তৃণমূলের সংখ্যা দাঁড়াল ১১৭।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy