Advertisement
১৮ মে ২০২৪
সুভাষনগর

সিন্ডিকেটের রাশ কার হাতে, তা নিয়েই গোলমাল

ইমারতি দ্রব্য সরবরাহের সিন্ডিকেট থেকে দলীয় নেতা-কর্মীদের দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বন্ধে কড়া পদক্ষেপ করেছে রাজ্য প্রশাসনও। তার প্রমাণও মিলেছে বিধাননগর পুর এলাকায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৬ ০১:০৩
Share: Save:

ইমারতি দ্রব্য সরবরাহের সিন্ডিকেট থেকে দলীয় নেতা-কর্মীদের দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বন্ধে কড়া পদক্ষেপ করেছে রাজ্য প্রশাসনও। তার প্রমাণও মিলেছে বিধাননগর পুর এলাকায়।

কিন্তু এত সতর্ক বার্তা দেওয়া হলেও দলীয় নেতা-কর্মীদের একাংশ যে কেয়ারই করেন না, আবারও তা চাক্ষুস করলেন দমদমের সুভাষনগরের বাসিন্দারা। সোমবার রাতে সুভাষনগরে একটি ক্লাবের কাছে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত হন দুই যুবক। ওই ঘটনায় দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের নাম সুভাষ রায় ও রাজা রায়। ঘটনাচক্রে, গোলমালে নাম জড়িয়েছে দুই তৃণমূল নেতা ও তাঁদের অনুগামীদেরও।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই ক্লাবটি থেকেই এলাকায় সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ফলে ক্লাব দখলে রাখা নিয়েই গোলমালের শুরু। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, ক্লাবের দখলদারি নয়, দু’টি ক্লাবের মধ্যে গোলমাল হয়েছে। উভয় পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার রাতে দমদম পুর এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের একটি ক্লাবে দলবল নিয়ে চড়াও হন স্থানীয় ব্যবসায়ী সুভাষ। তাঁরা ক্লাবের সদস্যদের মারধর করেন বলেও অভিযোগ। জখম হন ৭-৮ জন।

এই ঘটনা প্রসঙ্গে স্থানীয় কাউন্সিলর, সিপিএমের শিশির বলের কোনও মেলেনি। তবে দমদম পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর ধনঞ্জয় মজুমদারের অভিযোগ, সুভাষ ও তাঁর দলবলকে মদত দিচ্ছেন দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান-পারিষদ অভিজিৎ (বাপি) মিত্র। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, এলাকায় একাধিক সিন্ডিকেট চলায় লেগেই ছিল গোলমাল। তা যাতে আর না ছড়ায়, সে কারণে সবাইকে নিয়ে রবিবার বৈঠক করা হয়েছিল। সেখানে ঠিক হয়, সিন্ডিকেটের কাজ সকলের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে। কিন্তু বাপির সমর্থকেরা তা মানতে চাননি। তাঁরাই দুষ্কৃতী এনে এই হামলা চালিয়েছেন।

যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে অভিজিৎবাবু কিছু বলতে চাননি। তবে তাঁর সমর্থকদের পাল্টা অভিযোগ, সোমবার রাতের ঘটনায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে অভিজিৎবাবুর নাম জড়ানো হচ্ছে। ধনঞ্জয় মজুমদার ও তাঁর লোকজনই দখল নিয়েছে সিন্ডিকেটের। তাঁর অনুগামীদের বাইরে কাউকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী যেখানে দলের কর্মীদের সিন্ডিকেট থেকে দূরে থাকতে বলেছেন, সেখানে কেন কাউন্সিলর হয়ে ধনঞ্জয়বাবু সিন্ডিকেট নিয়ে সমস্যা মেটাতে বৈঠক করলেন? ধনঞ্জয়বাবু বলেন, ‘‘সিন্ডিকেটের কারণে গোলমালের জেরে দলেরই বদনাম হচ্ছে। তাই গোলমাল মেটাতে বৈঠক করেছিলাম।’’

দমদম পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান বরুণ নট্ট বলেন, ‘‘কোনও কাউন্সিলর ঘটনায় জড়িত নন। দু’টি ক্লাবের গোলমাল হয়েছিল বলে শুনেছি। যে কারণই থাক, এমন ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। পুলিশকে কড়া পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

corruption Syndicate raj
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE