Advertisement
E-Paper

বন্ধুর বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু

রাতে আবাসনের ছাদে বাইরের কারও যাওয়ার অনুমতি নেই। তা জেনেও বন্ধুর সঙ্গে সারা রাত আড্ডা দেওয়ার জন্য ‘লুকিয়ে’ সেখানে পৌঁছে গিয়েছিল ষোলো বছরের কিশোর। এত পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু মিনিট পাঁচেক পরেই সব বদলে গেল।

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৭ ০২:০৪

রাতে আবাসনের ছাদে বাইরের কারও যাওয়ার অনুমতি নেই। তা জেনেও বন্ধুর সঙ্গে সারা রাত আড্ডা দেওয়ার জন্য ‘লুকিয়ে’ সেখানে পৌঁছে গিয়েছিল ষোলো বছরের কিশোর। এত পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু মিনিট পাঁচেক পরেই সব বদলে গেল। আবাসন থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বের বাসিন্দা ওই কিশোরের বাড়িতে খবর গেল, চারতলার ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে তার।

বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বালির দেওয়ানগাজী রোড এলাকায়। পুলিশ জানায়, ম়ৃত ওই কিশোরের নাম আকাশ চক্রবর্তী (১৬)। যে বন্ধুর আবাসনের ছাদ থেকে পড়ে আকাশের মৃত্যু হয়েছে, সেই ঋতম রায়চৌধুরীকে প্রথমে পুলিশ আটক করলেও পরে ছেড়ে দিয়েছে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রের খবর, দেওয়ানগাজী রোডে একটি চারতলা আবাসনের বাসিন্দা ঋতমেরা। তবে বালিতে মা ও ভাইয়েরা থাকলেও সে বাবার সঙ্গে বোকারোতে থাকে। মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হতেই বালিতে বেড়াতে এসেছিল। ছোটবেলায় বালিতে থাকার সময় থেকেই তার সঙ্গে পরিচয় আকাশের। সেও ঋতমদের কয়েকটা বাড়ি পরেই থাকে। এ বার বেলুড় উচ্চ বিদ্যালয় থেকে আকাশও মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে।

পুলিশকে ঋতম জানায়, ওই রাতে ফোন করে আকাশ বলেছিল আবাসনের ছাদে আড্ডা দেবে ও ঘুমোবে। ঋতমের দাবি, সে আকাশকে বারবার বারণ করেছিল। বলেছিল, ‘রাতে ছাদে বাইরের কারও ওঠারই অনুমতি নেই’। তাও এক প্রকার জোর করেই লুকিয়ে আবাসনের ছাদে এসেছিল আকাশ। মাকে সে জানিয়েছিল, অন্য বন্ধুরাও আসবে তাই ঋতমদের ছাদে আড্ডা হবে।

রাত প্রায় ১১টা নাগাদ ছাদে পায়চারির শব্দ শুনে সন্দেহ হয়েছিল ওই আবাসনের বাসিন্দা প্রমোদ কুমারের। রাস্তা থেকে কয়েক জন বাসিন্দা তাঁকে জানিয়েছিলেন, ছাদে দু’টি ছেলে ঘুরে বেরাচ্ছে। তা শুনে অত রাতে কারা ছাদে উঠেছে, দেখতে গিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। দরজা খোলার শব্দ পেয়েই ভয়ে ছাদের এক কোণে পালিয়ে যায় আকাশ। ঋতমের দাবি, প্রমোদবাবুকে দেখে সে বারবার করে আকাশকে জানিয়েছিল, নীচের কাকু এসেছে, তাই ভয়ের কিছু নেই। কিন্তু তাও ছাদের ধার ঘেঁষে থাকা জলের ট্যাঙ্কের ‘এয়ার পাইপ’ বেয়ে চিলে কোঠার ছাদে লুকোতে উঠছিল আকাশ। আর তখনই পা ফস্কে, পাইপ ভেঙে নীচে পড়ে যায় সে।

দেওয়ানগাজী রোডের ওই আবাসনের পাশেই থাকেন বিচিত্রা সেনগুপ্ত। তিনি জানান, রাত পৌনে ১১টা নাগাদ তাঁরা উপর থেকে ভারী কিছু পড়ার শব্দ শুনে চমকে যান। আশপাশের বাড়ির লোকজনও বাইরে বেরিয়ে আসেন। সকলে মিলে খোঁজার পরে দেখা যায়, বিচিত্রাদেবীদের বাড়ির পাশের ফাঁকা জায়গাতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে এক কিশোর। স্থানীয় ক্লাবের ছেলেরা মিলে তাকে বাইরে বার করার পরে দেখা যায়, সেটি আকাশ। এর পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই মৃত্যু হয় তার। চিকিৎসকেরা জানান, তার হাত, পা, বুক ও মাথায় চোট লেগেছিল।

বৃহস্পতিবার সকালে ঋতমের বাবা স্বপন রায়চোধুরী বলেন, ‘‘১০ এপ্রিল বোকারো ফিরে পড়া শুরু করার কথা। কী যে হয়ে গেল!’’ আকাশের মা শুক্লা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বারবার করে অন্যের ছাদে শুতে যেতে বারণ করলাম। তাও তাড়াহুড়ো করে আমাকে দিয়ে ভাত করিয়ে খেয়ে বেরিয়ে গেল। আর এল না।’’

Falls to death Deoyanji Road Bally
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy