Advertisement
E-Paper

বন্ধ ঘরে তরুণীর দেহ এ বার বাগুইআটিতে

গিরিশ পার্কে সোমবার তো মঙ্গলবার বাগুইআটিতে। পরপর দু’দিনে কলকাতার দুই প্রান্তে দুই মহিলা খুন! দু’টি মৃতদেহই পাওয়া গিয়েছে বন্ধ ঘরে। সোমবার গিরিশ পার্কের সিংহিবাগান এলাকায় এক মহিলার মৃতদেহ উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে, মঙ্গলবার বাগুইআটির অশ্বিনীনগরে একটি আবাসনের একটি তালাবন্ধ ঘরের দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হয় এক তরুণীর পচাগলা দেহ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৫ ০৪:১২
সুভদ্রা হালদার

সুভদ্রা হালদার

গিরিশ পার্কে সোমবার তো মঙ্গলবার বাগুইআটিতে। পরপর দু’দিনে কলকাতার দুই প্রান্তে দুই মহিলা খুন!
দু’টি মৃতদেহই পাওয়া গিয়েছে বন্ধ ঘরে। সোমবার গিরিশ পার্কের সিংহিবাগান এলাকায় এক মহিলার মৃতদেহ উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে, মঙ্গলবার বাগুইআটির অশ্বিনীনগরে একটি আবাসনের একটি তালাবন্ধ ঘরের দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হয় এক তরুণীর পচাগলা দেহ।
পুলিশ জানায়, নিহতের নাম সুভদ্রা হালদার (২৫)। মঙ্গলবার বিকেলে ফ্ল্যাটের চানঘরে তাঁর মৃতদেহ পাওয়া যায়। মৃতদেহের পাশে পড়ে ছিল একটি বালিশ। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের ধারণা, শ্বাস রোধ করে তাঁকে খুন করা হয়েছে। গিরিশ পার্কের মহিলাকেও শ্বাস রোধ করেই মারা হয়েছে বলে পুলিশের সন্দেহ এবং তাঁর দেহের পাশেও পাওয়া গিয়েছে বালিশ। তবে শ্বাসরোধ ছাড়াও সুভদ্রার মাথার পিছনে ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল বলে তদন্তকারীরা জানান।

বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দা-প্রধান কঙ্করপ্রসাদ বারুই জানান, প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, সুভদ্রাকে রবিবার খুন করা হয়েছে। কে বা কারা এই খুনের ঘটনায় জড়িত, তা অবশ্য এখনও জানতে পারেনি পুলিশ। কেন তাঁকে খুন করা হল, তা-ও এখনও স্পষ্ট হয়নি বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন। গিরিশ পার্কের মহিলা খুনে এখনও কেউ ধরা পড়েনি। সুভদ্রা-হত্যার ঘটনাতেও রাত পর্যন্ত গ্রেফতার হয়নি কেউ।

পুলিশি সূত্রের খবর, প্রথম পক্ষের স্বামী সঞ্জয় সিংহের সঙ্গে সুভদ্রার বিচ্ছেদ হয় বছর চারেক আগে। তবে বিচ্ছেদের পরেও ওই তরুণী তাঁদের বাগুইআটির ফ্ল্যাটেই থেকে যান। ফ্ল্যাটটি তাঁর এবং সঞ্জয়ের যৌথ মালিকানায় রয়েছে বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন। সুভদ্রার বাপের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলিতে। পুলিশ জেনেছে, সঞ্জয় এখন কর্মসূত্রে মুম্বইয়ে থাকেন।

তদন্তকারীরা জানান, বিচ্ছেদের দু’বছর পরে সুভদ্রা দ্বিতীয় বার বিয়ে করেন জিতান সাহা নামে যাদবপুরের এক যুবককে। কিন্তু জিতান তখন বেকার ছিলেন। তাই সুভদ্রার বাড়ির লোকেরা সেই বিয়ে মেনে নেননি। এই কারণেই জিতান তাঁর সঙ্গে থাকতেন না বলে সুভদ্রার আত্মীয়েরা জানান। তবে জিতানের সঙ্গে তাঁর অন্য কোনও গোলমাল ছিল কি না, তদন্তকারীরা তা খতিয়ে দেখছেন।

জিতান পুলিশকে বলেছেন, সম্প্রতি তিনি ওষুধের ব্যবসা শুরু করেছেন। রবিবার রাত দেড়টা নাগাদ ফোনে সুভদ্রার সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল। সোমবার ওই যুবক ফের ফোন করেন সুভদ্রাকে। জিতান পুলিশকে জানিয়েছেন, সুভদ্রা তার পর থেকে আর তাঁর ফোন তোলেননি। তাঁকে ফোনে না-পেয়ে মঙ্গলবার জিতান যোগাযোগ করেন সুভদ্রার দিদি কাঞ্চন মণ্ডলের সঙ্গে। তিনি কুলতলি থেকে এ দিন দুপুরে চলে আসেন বাগুইআটিতে। দু’জনে মিলে ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখেন, সেটি বাইরে থেকে তালাবন্ধ।

তার পরেই বাগুইআটি থানায় যান জিতান ও কাঞ্চন। তাঁরা পুলিশকে জানান, সুভদ্রার ফ্ল্যাটের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ। সঙ্গে মোবাইল ফোনও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। জিতান বাগুইআটি থানায় একটি নিখোঁজ-ডায়েরি করেন।

জিতান পুলিশকে জানিয়েছেন, ডায়েরি করার পরে বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ কাঞ্চন এবং তিনি ফের ওই আবাসনে যান। ফ্ল্যাটের কাছে গিয়ে তাঁরা ভিতর থেকে পচা গন্ধ পান। তার পরেই তিনি এলাকার কিছু মানুষকে ডেকে দরজার তালা ভেঙে ভিতরে ঢোকেন। চানঘরের সামনে গিয়ে তাঁরা সুভদ্রার মৃতদেহ দেখতে পান। তখনই খবর দেন পুলিশে।

তদন্তকারীরা জানান, জিতানের বক্তব্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সুভদ্রার প্রথম পক্ষের স্বামী সঞ্জয়ের সঙ্গেও যোগযোগের চেষ্টা চলছে। আর কারও সঙ্গে ওই তরুণীর যোগাযোগ ছিল কি না, তাঁর মোবাইল ফোন ঘেঁটে তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।

Baguiati Teenage girl dead body police murder subhadra halder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy