শীতের শিরশিরে হাওয়া বইছে। হাল্কা গরম পোশাক পরে নিম্নমুখী তাপমাত্রার সঙ্গে শরীরকে খাপ খাইয়ে নিতে চাইছেন অনেকেই। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে ছন্দ কাটছে কলকাতার মেট্রো রেলে চড়লে। শীতের শুরুতে অনেকেই অভিযোগ করছেন, মেট্রোর কামরায় ঠান্ডা কিছু ক্ষেত্রে অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, দিনে-দুপুরে মেট্রোয় চাপলেও বগির ভিতরে ঠান্ডার কারণে মাথায়-কানে ঢাকা দিতে হচ্ছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
যাত্রীরা জানাচ্ছেন, অনেক ক্ষেত্রেই মেট্রোর কামরায় তাপমাত্রার ঠিকঠাক নিয়ন্ত্রণ থাকে না। সকালে দিনের ব্যস্ত সময়ে উপচে পড়া ভিড়ে ভ্যাপসা পরিস্থিতি যেমন তৈরি হয়, তেমনই আবার শীতের মরসুমে অনেক সময়েই কামরার ভিতরের ঠান্ডা হাড় কাঁপিয়ে দেয়। যাত্রীরা নির্দিষ্ট গন্তব্যে নেমে মোটরম্যানকে সমস্যার কথা জানালে তখন হয়তো সেই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। কখনও আবার তাতেও কাজ হয় না, এমনই অভিযোগ নিত্যযাত্রীদের।
মঙ্গলবার বেলার দিকে টালিগঞ্জগামী একটি ট্রেনে উঠে দেখা গেল, বেশ কয়েক জন যাত্রী আচমকা ঠান্ডায় হাঁচছেন। ঠান্ডায় বেশ অস্বস্তি বোধ করতে দেখা গেল তাঁদের। কিন্তু সেই মুহূর্তে ঠান্ডা কমানোর কোনও উপায় ছিল না। বর্তমানে কলকাতায় উন্নত প্রযুক্তির মেট্রোর রেকের ভিতরে ‘টক ব্যাক’ ব্যবস্থা থাকে। যাতে চালকের সঙ্গে যাত্রীরা প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন। কিন্তু ভুক্তভোগী যাত্রীদের একটি বড় অংশই জানালেন, ওই ব্যবস্থার সঙ্গে তাঁরা পরিচিত নন। যে কারণে তাঁরা চালকের কাছে তাপমাত্রা নিয়ে অভিযোগ করার সুযোগ পান ট্রেন থেকে নামার পরেই।
মেট্রোর দাবি, কামরার ভিতরের তাপমাত্রার সমস্যা নিয়ে মোটরম্যানদের কাছে হামেশাই অভিযোগ করেন যাত্রীরা। কিন্তু যাত্রীদের নিজেদের মধ্যেই এ নিয়ে মতান্তর থাকায় মোটরম্যান বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। মেট্রোর এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘যাত্রীদের কেউ হয়তো অভিযোগ করলেন, তাঁর ঠান্ডা লাগছে বলে। আবার এসি কমালে কেউ অভিযোগ করছেন, তাঁর গরম লাগছে। যে কারণে চালক বিভ্রান্ত হয়ে যান। তা-ও অভিযোগের গুরুত্ব বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে, কামরার ভিতরেই ব্যবস্থা আছে চালকের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার। যাত্রীরা চাইলে তাঁদের সমস্যার কথা বলতেই পারেন চালককে। এমনকি, হেল্পলাইন নম্বরও দেওয়া থাকে।’’
মেট্রো সূত্রের খবর, পুরনো রেকগুলির তাপমাত্রা শেড থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়। তবে এর বাইরে আরও দু’টি উন্নত প্রযুক্তির রেকও চলে। যেগুলির ভিতরেই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা রয়েছে। আধিকারিকেরা জানান, সাধারণত নির্দেশিকা থাকে, সকালে বা রাতের দিকে বিশেষত, শীতের সময়ে কামরার ঠান্ডা একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় রাখার। তবে, যাত্রীদের তরফে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়া আসে বলে দাবি মেট্রো কর্তৃপক্ষের।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)