Advertisement
E-Paper

রাতপথে গাড়িতে পিষ্ট সিটিসি-র বাসচালক

স্থানীয় সূত্রে খবর, স্ত্রী লাভলি রায় ও দুই ছেলে শিবম এব‌ং সবুজকে নিয়ে বাঁশদ্রোণীর বাদলপল্লিতে ছোট্ট সংসার সত্যনারায়ণের। শিবম ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। সবুজ পড়ে চতুর্থ শ্রেণিতে। এ দিন ভোরে সত্যনারায়ণের দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বনগাঁ থেকে ছুটে আসেন লাভলি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৪৭
মৃত সিটিসি-র অস্থায়ী বাসচালক সত্যনারায়ণ রায়।

মৃত সিটিসি-র অস্থায়ী বাসচালক সত্যনারায়ণ রায়।

স্ত্রী বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করতে বনগাঁয় নিজের বাড়িতে গিয়েছিলেন। ছোট ছেলে দু’টি বাড়িতে। তাই নাইট ডিউটি সেরে দ্রুত সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন সিটিসি-র অস্থায়ী বাসচালক সত্যনারায়ণ রায় (৪০)। কিন্তু টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপোর কাছে এনএসসি বসু রোডের উপরে একটি বেপরোয়া গাড়ির চাকায় পিষ্ট হলেন তিনি। রবিবার রাত একটা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। তাঁকে এম আর বাঙুর হসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সোমবার সকালে সত্যনারায়ণের মৃত্যু হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তায় লাগানো সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, একটি অ্যাপ-ক্যাব তাঁকে ধাক্কা মেরে পালিয়েছে। গাড়িটি এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে গাড়ি ও চালকের খোঁজ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে খবর, স্ত্রী লাভলি রায় ও দুই ছেলে শিবম এব‌ং সবুজকে নিয়ে বাঁশদ্রোণীর বাদলপল্লিতে ছোট্ট সংসার সত্যনারায়ণের। শিবম ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। সবুজ পড়ে চতুর্থ শ্রেণিতে। এ দিন ভোরে সত্যনারায়ণের দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বনগাঁ থেকে ছুটে আসেন লাভলি।

কান্নায় ভেঙে পড়ে এ দিন তিনি বলেন, ‘‘শুনলাম ধাক্কা লাগার পরে ওঁর পা দু’টো চাকার সঙ্গে আটকে যায়। সেই অবস্থায় ওঁর পা দু’টি টানতে টানতে নিয়ে গিয়েছে গাড়িটি। ওঁর মাথাতেও চোট লাগে। চিকিৎসা ঠিক মতো হয়েছিল কি না, জানি না। আজ ভোরেও তো ওর এক বার জ্ঞান ফিরেছিল শুনলাম।’’

আরও পড়ুন: ক্যানসার রোগীকে নিগ্রহে ধৃত ৩​

শোকস্তব্ধ: সত্যনারায়ণ রায়ের স্ত্রী লাভলি এবং দুই ছেলে শিবম ও সবুজ। নিজস্ব চিত্র

দুর্ঘটনার খবর জানাজানি হতেই ভিড় জমে সত্যনারায়ণদের বাড়িতে। পাড়ার বাসিন্দারা জানান, গত দশ বছর ধরে অস্থায়ী কর্মী হিসেবেই সিটিসি-তে বাস চালাচ্ছিলেন সত্যনারায়ণ। সংসারে আর্থিক টানাটানি ছিলই। তার মধ্যেই ছেলেদের পড়াশোনায় বিশেষ নজর দিতেন দম্পতি। সত্যনারায়ণের এক আত্মীয় পায়েল রায় জানান, বাবার নাইট ডিউটি থাকায় রাতে বাড়িতে একাই ছিল শিবম ও সবুজ। পায়েল বলেন, ‘‘রাতে আমাকে ফোন করে ছেলেদের খবর নিলেন। আমি জানাই, ওরা খাওয়াদাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়েছে। চিন্তার কিছু নেই। তবু উনি বললেন, আমি নাইট ডিউটি সেরে তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে আসছি।’’ পায়েলদেবী জানান, রাত তিনটে নাগাদ থানা থেকে ফোন করে সত্যনারায়ণের দুর্ঘটনার খবর জানানো হয়। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ছুটে যান পড়শিরা। লাভলিদেবী বলেন, ‘‘সংসারটা ভাসিয়ে দিয়ে ও চলে গেল। এর পরে আমাদের কী ভাবে চলবে? ছেলেদের কী খাওয়াব, কী ভাবেই বা পড়াশোনা শেখাব? কিছুই বুঝতে পারছি না!’’

আরও পড়ুন: রোগী-মৃত্যু ঘিরে ‘তাণ্ডব’ বাইপাসের হাসপাতালে

Death CTC Driver Accident App Cab
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy