Advertisement
১১ মে ২০২৪
Crime

রিজেন্ট পার্কে নিজের তৈরি গাদা বন্দুক দিয়ে প্রাক্তন প্রেমিকাকে খুন করেছিলেন জয়ন্ত

বন্দুক তৈরি করতে ইন্টারনেটের সাহায্য নেন জয়ন্ত। শেখেন সাধারণ পাইপ দিয়ে গাদা বন্দুক বানাতে।

রাকেশ হালদার - প্রিয়ঙ্কা পুরকাইত।

রাকেশ হালদার - প্রিয়ঙ্কা পুরকাইত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২০ ২০:৪৫
Share: Save:

প্রেমিকাকে খুন করতে নিজের হাতে গাদা বন্দুক তৈরি করেছিলেন রাকেশ ওরফে জয়ন্ত হালদার। রিজেন্ট পার্কে প্রাক্তন প্রেমিকা খুনে অভিযুক্তকে জেরা করে পুলিশের দাবি, ইউটিউব দেখে বন্দুক তৈরি করেন জয়ন্ত। মূলত লোহার ফাঁপা রড, বাতিল লোহা লক্কড়ের দোকান থেকে জোগাড় করা ইস্পাতের টুকরো এবং স্প্রিং দিয়ে তৈরি করেছিলেন দেশি বন্দুক।

প্রেমিকাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে বার বার ব্যর্থ হওয়ায় তৈরি হয়েছিল আক্রোশ। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের তদন্তকারীদের দাবি, সেই আক্রোশ থেকেই কলেজ পড়ুয়া প্রেমিকা প্রিয়ঙ্কা পুরকায়েতকে খুনের পরিকল্পনা করেন জয়ন্ত। গুলি করে খুন করাই মনস্থ করেন। কিন্তু বন্দুক জোগাড় করতে না পেরে ইন্টারনেটের সাহায্য নেন তিনি। সেখান থেকেই শেখেন সাধারণ পাইপ দিয়ে কী ভাবে অনেকটা মাস্কেট বা গাদা বন্দুক বানানো যায়।

বাতিল লোহার পাইপ দিয়ে সেই বন্দুক বানানোর পর বুলেটের খোঁজ করেন তিনি। সেটাও জোগাড় করতে ব্যর্থ হন তিনি। তাই ফের ইন্টারনেট থেকেই শেখেন সাইকেলের বল বেয়ারিং-কে বুলেট হিসাবে ব্যবহার করার পদ্ধতি। কার্যত ‘প্রাগৈতিহাসিক’ পদ্ধতিতে লোহার পাইপে বল বেয়ারিংয়ের বল ভরে পেছন থেকে বারুদ ঠেসে দেওয়া। ওই পদ্ধতিতেই তৈরি হয় জয়ন্তের গাদা বন্দুক। পুলিশের দাবি, জেরায় তিনি জানিয়েছেন, বন্দুক কাজ করছে কি না, তা-ও তিনি এক বার পরখ করে দেখেন। তারপর থেকে শুরু হয় প্রিয়ঙ্কার উপর নজর রাখা। কিন্তু নিজের বন্দুকের কার্যকরিতা সম্পর্কে তিনি নিজেই সন্দিহান ছিলেন। তাই বাইরে কোথাও প্রিয়ঙ্কার উপর হামলা করার সাহস দেখাননি তিনি। দিনের পর দিন প্রিয়ঙ্কার বাড়ির উপর নজর রেখে তিনি জানতে পারেন, সকালে প্রিয়ঙ্কার মা এবং পিসি পিছনের দিকের দরজা খোলা রেখেই বেরিয়ে যান। সেই সময়ে প্রিয়ঙ্কা ঘুমোন। তাই ওই সময়টাকেই উপযুক্ত হিসাবে বেছে নেন জয়ন্ত।

আরও পড়ুন: ভারতের ১০০ বনাম চিনের ৩৫০ সেনা! গলওয়ানে সে দিন ৩ ঘণ্টা চলেছিল সংঘর্ষ

পুলিশের দাবি, প্রিয়ঙ্কাকে খুন করতে মরিয়া ছিলেন জয়ন্ত। তাই বন্দুকের সঙ্গে নিয়ে যান ছুরি। যদি বন্দুক কোনও ভাবে কাজ না করে তবে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুন করবেন বলে মনস্থ করেন। পুলিশের দাবি, জেরায় জয়ন্ত জানিয়েছেন, বন্দুক ব্যবহার করার পরও প্রিয়ঙ্কার মৃত্যু নিয়ে নিশ্চিত হতে পারেননি তিনি। তাই ছুরি দিয়ে কোপান প্রিয়ঙ্কাকে।

আরও পড়ুন: ভারত জুড়ে সাইবার হানার ছক! জারি সতর্কতা

পুলিশের দাবি, ময়না তদন্তে প্রিয়ঙ্কার শরীরের ভিতর থেকে বন্দুকে ব্যবহার করা লোহার বল পাওয়া গিয়েছে। গুলির আঘাতের পাশাপাশি পাওয়া গিয়েছে কোপানোর চিহ্নও। এ দিন জয়ন্তকে আলিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক পুলিশের আর্জির প্রেক্ষিতে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। গোয়েন্দাদের দাবি, পুলিশ হেফাজতে জয়ন্তকে জেরা করা হবে ঠিক কী ভাবে সে ওই গাদা বন্দুক তৈরি করেছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Murder Death Regent Park
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE